কোম্পানির ওয়েবসাইটের কয়েকটি পেইজে বুধবার থেকে বিভাগের কার্যক্রম বন্ধ থাকার উল্লেখ রয়েছে। এর কারণ হিসেবে কারিগরী ত্রুটির কথা লেখা আছে সেখানে।
Published : 02 Nov 2023, 04:18 PM
সাইবার আক্রমণ হয়েছে বোয়িংয়ে। এ নিয়ে তদন্ত চালানোর সময় ব্যবসার কিছু অংশে প্রভাব পড়ার কথা জানিয়েছে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ উড়োজাহাজ নির্মাতা কোম্পানিটি।
গেল শুক্রবার সাইবার অপরাধী দল লকবিট দাবি করে, তারা মার্কিন এই প্লেন নির্মাতার কাছ থেকে ‘বিশাল পরিমাণ’ স্পর্শকাতর ডেটা চুরি করেছে। আর ২ নভেম্বরের মধ্যে মুক্তিপণ না দিলে ওই ডেটা অনলাইনে ফাঁস করে দেওয়ার হুমকি দেয় হ্যাকার দলটি। এর পরপরই আক্রমণের ঘটনা স্বীকার করে বোয়িং।
বুধবার অবশ্য লকবিটের ওয়েবসাইট থেকে হুমকির বার্তা থেকে সরিয়ে ফেলা হয়। এ বিষয়ে রয়টার্সকে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি হ্যাকার দলটি। আর এই সাইবার আক্রমণের পেছনে আসলেই লকবিট আছে কি না, সে সম্পর্কে রয়টার্সকে মন্তব্য করতে রাজী হয়নি বোয়িং।
“ফ্লাইটের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় এ ঘটনার প্রভাব পড়েনি।” --বলেন বোয়িংয়ের এক মুখপাত্র।
“আমরা এই ঘটনা নিয়ে গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত চালাচ্ছি এবং আইন প্রয়োগকারী ও নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোকে সহযোগিতা করছি। এর পাশাপাশি, আমাদের গ্রাহক ও সরবরাহকদেরও বিষয়টি সম্পর্কে জানানো হয়েছে।”
বোয়িংয়ের ২০২২ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, কোম্পানির যন্ত্রাংশ ও সরবরাহ ব্যবসা দেখাশোনা করে ‘গ্লোবাল সার্ভিসেস’ বিভাগ, যা বোয়িংয়ের ক্রেতাদের বিভিন্ন কাঁচামাল ও রসদ সরবরাহ করে থাকে।
কোম্পানির ওয়েবসাইটের কয়েকটি পেইজে বুধবার থেকে বিভাগের কার্যক্রম বন্ধ থাকার উল্লেখ রয়েছে। এর কারণ হিসেবে কারিগরী ত্রুটির কথা লেখা আছে সেখানে।
“আমরা আশা করি, সাইটটি শীঘ্রই অনলাইনে ফিরে আসবে।”
ভুক্তভোগীদের সংখ্যা বিবেচনায় নিলে বিশ্বের সবচেয়ে সক্রিয় মুক্তিপণ আদায় করা সাইবার অপরাধী দল হল লকবিট। মার্কিন নিরাপত্তা সংস্থা ‘সিসা’র তথ্য অনুসারে, ২০২০ সালের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের এক হাজার সাতশটি প্রতিষ্ঠানে সাইবার হামলা চালিয়েছে দলটি।
সাধারণত ভুক্তভোগী প্রতিষ্ঠানের সিস্টেমে র্যানসমওয়্যার প্রবেশ করিয়ে এর কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় হ্যাকার দলগুলো। এর মধ্যে রয়েছে মুক্তিপণের জন্য স্পর্শকাতর ডেটা চুরির বিষয়টিও।
লকবিট বোয়িংয়ের কী ধরনের ডেটা চুরি করেছে, সেটি এখনও পরিষ্কার নয়। সাইবার নিরাপত্তা কোম্পানি এমসিসফটের র্যানসমওয়্যার বিশেষজ্ঞ ও হুমকি বিশ্লেষক ব্রেট ক্যালো’র মতে, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সাইবার অপরাধীদের মুক্তিপণ দেওয়ার পরও তারা ডেটা ফাঁস করবে না, এমন নিশ্চয়তা নেই।
“মুক্তিপণ পরিশোধের পর লকবিট চুরি করা ডেটা ধ্বংস করে দেওয়ার মৌখিক প্রতিশ্রুতি দিতে পারে।” --বলেন ক্যালো।
“তবে, তারা আদৌ ওই ডেটা ধ্বংস করেছে বা চুরি করেছিল কি না, তা জানার কোনো উপায় নেই।”
তিনি আরও যোগ করেন, সামরিক খাত সংশ্লিষ্ট তথ্য বেহাত হলে তা ‘অনেক বড় ঝুঁকি’ হয়ে দাঁড়াবে। সাইবার আক্রমণের ঘটনায় সামরিক খাত সংশ্লিষ্ট কোনো তথ্য বেহাত হয়েছে কি না, তা নিয়ে রয়টার্সকে মন্তব্য করেনি বোয়িং।
যাত্রীবাহী প্লেনের পাশাপাশি মার্কিন সামরিক বাহিনীর জন্যও সামরিক প্লেন তৈরি করে বোয়িং।
বোয়িংয়ের বিবৃতি প্রসঙ্গে রয়টার্স ‘সিসা’র মন্তব্য জানতে চাইলে তাৎক্ষণিক সাড়া মেলেনি।