সক্ষমতা ও হাতে প্রযুক্তি থাকলেও নিজস্ব ক্লাউড সেবা থেকে শিশু নিপীড়নের কনটেন্ট নিজ উদ্যোগে মুছে দেয় না অ্যাপল ও মাইক্রোসফট।
Published : 15 Dec 2022, 01:39 PM
শিশু নিপীড়নের ছবি আর ভিডিও নিজস্ব প্ল্যাটফর্ম থেকে মুছে দেওয়ার বেলায় আন্তর্জাতিক টেক জায়ান্টদের তৎপরতা যৎসামান্য বলে উঠে এসেছে অস্ট্রেলিয়ার এক সরকারি প্রতিবেদনে।
দেশটির নতুন এক আইনের অধীনে মেটা ইনকর্পোরেটেড থেকে শুরু করে মাইক্রোসফটের স্কাইপ পর্যন্ত বেশ কিছু প্রথমসারির প্রযুক্তি কোম্পানিকে শিশু নিপীড়নের কনটেন্ট মোকাবেলায় তাদের নেওয়া উদ্যোগের বিস্তারিত তথ্য হস্তান্তর করতে বাধ্য করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার ই-সেইফটি কমিশনার জুলি ইনম্যান গ্র্যান্ট।
কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে পাওয়া তথ্য-উপাত্ত বিচার বিশ্লেষণ করে বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন অস্ট্রেলিয়ার কর্মকর্তারা। সে প্রতিবেদনে উঠে এসেছে; নিপীড়নমূলক কনটেন্ট চিহ্নিত করার প্রযুক্তি যথেষ্ট ব্যবহার করে না টেক জায়ান্ট কোম্পানিগুলো; কনটেন্ট চিহ্নিত হওয়ার পরও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে দিনের পর দিন সময় নেয় তারা।
নিজস্ব ক্লাউড সেবায় ব্যবহারকারীদের জমা করা শিশু নিপীড়নের কনটেন্ট নিজ উদ্যোগে মুছে দেয় না অ্যাপল ও মাইক্রোসফট। কিন্তু এমন কনটেন্ট চিহ্নিত করে মুছে দেওয়ার সক্ষমতা ও প্রযুক্তি উভয় কোম্পানির হাতেই আছে বলে উঠে এসেছে অস্ট্রেলীয় ওই প্রতিবেদনে।
স্কাইপ, মাইক্রোসফট টিমস এবং ফেইসটাইমের ভিডিও চ্যাটিং সেবার লাইভ স্ট্রিমে শিশু নিপীড়ন চিহ্নিত করার সক্ষমতা থাকলেও তার প্রয়োগ করে না অ্যাপল ও মাইক্রোসফট। এ কাজে স্কাইপের ব্যবহার লক্ষ্যনীয় হারে বেশি বলে উঠে এসেছে ওই প্রতিবেদনে।
অস্ট্রেলিয়ার কর্মকর্তাদের প্রতিবেদন প্রসঙ্গে দেওয়া এক বিবৃতিতে শিশু নিপীড়নকে একটি ‘ভয়াবহ অপরাধ’ হিসেবে বর্ণনা করে এটি মোকাবেলায় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকার দাবি করেছে মাইক্রোসফট।
“আমাদের প্রতিক্রিয়া জানানোর সক্ষমতা আরও উন্নত করতে আমরা ক্রমগত নিজেদের আরও উন্নত করার চেষ্টা করছি এবং বাইরের কেউ এক্ষেত্রে আমাদের সহযোগিতা করতে চাইলে তাদের আমরা স্বাগত জানাই।”
এ প্রসঙ্গে মন্তব্য জানতে অ্যাপলকে ই-মেইল পাঠিয়ে এবং কল করেও কোনো সাড়া পায়নি বাণিজ্য প্রকাশনা ব্লুমবার্গ।
শিশু নিপীড়ন মোকাবেলায় টেক জায়ান্ট কোম্পানিগুলোর তৎপরতার অভাব নিয়ে ইনম্যান গ্র্যান্ট বলেন, “শিশু নিপীড়নের কনটেন্ট নিয়ে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা আছে, বাজারে বিদ্যমান টুলগুলো হাতের নাগালে আছে এবং যথেষ্ট অর্থসম্পদ আছে –এমন টেক জায়ান্ট কোম্পানিগুলো যে তাদের নিজস্ব প্ল্যাটফর্ম থেকে এটা দূর করতে সাধ্যের সবটুকু দিয়ে কাজ করছে না, তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।”
ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, অস্ট্রেলিয়ার কর্মকর্তাদের ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, নিপীড়নমূলক কনটেন্ট প্রসঙ্গে অভিযোগ ওঠার পর তা মুছে দিতে ৪ মিনিট সময় নেয় স্ন্যাপচ্যাট; কিন্তু একই কাজ করতে স্কাইপের সময় লাগে পুরো দুই দিন।