বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২ টার কিছু পরে চাঁদের দক্ষিণ মেরু স্পর্শ করে অ্যাথেনা। পরে জানা যায়, মহাকাশযানটি এক পাশে হেলে অবতরণ করেছে।
Published : 09 Mar 2025, 02:21 PM
মার্কিন বেসরকারি কোম্পানি ইনটুইটিভ মেশিনস-এর অ্যাথেনা মহাকাশযান চাঁদের পৃষ্ঠে উল্লম্বভাবে অবতরণ করতে পারেনি। অবতরণের সময় এটি এক পাশে কাত হয়ে গিয়েছিল।
কোম্পানিটি বলেছে, চাঁদে মিশন সম্পন্ন করার জন্য অ্যাথেনার আর পর্যাপ্ত শক্তি নেই।
বৃহস্পতিবার গ্রিনিচ মান সময় সাড়ে ১২ টার কিছু পরে চাঁদের দক্ষিণ মেরু স্পর্শ করে অ্যাথেনা। পরে জানা যায়, মহাকাশযানটি এক পাশে হেলে অবতরণ করেছে।
বরফের খোঁজ করার জন্য চাঁদে ১০ দিন থাকার কথা ছিল মহাকাশযানটির। তবে এর বিভিন্ন সৌর প্যানেলের অবস্থান ও পাথুরে অঞ্চলের ঠাণ্ডা তাপমাত্রার কারণে সূর্যের আলো পায়নি এটি। ফলে চার্জ না থাকায় অ্যাথেনার ‘মৃত্যু’ ঘটেছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিবিসি।
চাঁদে মানুষের বসবাসের জন্য উপযোগী পরিবেশ রয়েছে কি না খতিয়ে দেখতে মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসার সঙ্গে পার্টনারশিপ করেছে ইনটুইটিভ মেশিনস।
নিজেদের এ ‘আইএম ২’ নামের মিশন সম্পর্কে এক বিবৃতিতে কোম্পানিটি বলেছে, “সূর্যের দিক, সৌর প্যানেলের অবস্থান ও চাঁদের পৃষ্ঠে থাকা বিভিন্ন গর্তের চরম ঠাণ্ডা তাপমাত্রার কারণে অ্যাথেনাকে পুনরায় চার্জ করা সম্ভব হচ্ছে না।”
গত বছর ইনটুইটিভ মেশিনের প্রথম মহাকাশযানটিও ‘একটি পা’ ভেঙে এক পাশে হেলে চাঁদে অবতরণ করেছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের ‘ওপেন ইউনিভার্সিটি’র চাঁদ বিষয়ক বিজ্ঞানী ড. সিমিওন বারবার বলেছেন, “স্পষ্ট করেই বলছি, নির্ধারিত বৈজ্ঞানিক লক্ষ্যমাত্রার একটি ক্ষুদ্র অংশ অর্জন করেছে এই মিশন।”
চাঁদের চলমান অনুসন্ধানে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক অর্জন করেছে মিশনটি। কারণ, অ্যাথেনা অন্য যে কোনও ল্যান্ডারের চেয়ে চাঁদের আরও দক্ষিণ দিকের ‘মনস মাউটন’ অঞ্চলে পৌঁছেছিল, যা চাঁদে দক্ষিণ মেরু থেকে প্রায় একশ ৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত একটি পর্বত।
চাঁদের এ অঞ্চলে যে কোনো মহাকাশযানের অবতরণের বিষয়টি কঠিন ও ঝুঁকিপূর্ণ। এমনকি এ অঞ্চল থেকে পৃথিবীর সঙ্গে রেডিও যোগাযোগের বিষয়টি আরও কঠিন বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিবিসি।
এর আগে কোম্পানিটির আরেক মহাকাশযান ওডিশাসের যাত্রার আগ পর্যন্ত চাঁদে অবতরণ করা সর্বশেষ মার্কিন নভোযান ছিল ‘অ্যাপোলো ১৭’, যেটিতে করে ১৯৭২ সালে সর্বশেষ মানুষ গিয়েছিল চাঁদে।
এ দশক শেষে আর্টেমিস প্রকল্পের অধীনে নভোচারীদের পুনরায় চাঁদে পাঠানোর পরিকল্পনা করছে নাসা। এরই ধারাবাহিকতায় নাসা ‘ইনটুইটিভ মেশিনস’কে ১২ কোটি ডলারের আর্থিক অনুদান দিয়েছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থাটি।
এসব পরিকল্পনা নাসার ‘কমার্শিয়াল লুনার পেলোড সার্ভিস’ বা সিএলপিএস প্রকল্পের অংশ। মূলত এ প্রকল্পে বিভিন্ন প্রাইভেট কোম্পানির সঙ্গে কাজ করে নাসা।