সবকিছু পরিকল্পনা অনুযায়ী এগোলে উৎক্ষেপণের ১৫ দিনের মধ্যেই পৃথিবী থেকে চাঁদের কক্ষপথে প্রবেশ করত পেরেগ্রিন।
Published : 15 Jan 2024, 03:30 PM
সম্ভবত পৃথিবীর বুকেই ফিরে আসবে নাসার মুন ল্যান্ডার পেরেগ্রিন, যেখান থেকে পথচলা শুরু করেছিল মহাকাশযানটি।
উৎক্ষেপণের পরপরই যান্ত্রিক গোলযোগের মতো প্রতিকূল অভিজ্ঞতার মুখে পড়েছে দুর্ভাগা মহাকাশযানটি। আর মহাকাশযানটির প্রোপালশন সিস্টেমে ফুটা ধরা পড়ার পর থেকেই এর জ্বালানী খুব দ্রুতই শেষ হয়ে যাচ্ছে।
এ সপ্তাহে সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ পোস্ট করা আপডেটে ল্যান্ডারটির নির্মাতা কোম্পানি অ্যাস্টরোবটিক লিখেছে, সম্ভবত পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলেই ধ্বংস হয়ে যাবে এটি। এ ছাড়া, ল্যান্ডারের ভাগ্য নিয়ে আলোচনার জন্য ১৮ জানুয়ারি পূর্বাঞ্চলীয় সময় দুপুর ১২টায় নাসার সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলন আয়োজনের পরিকল্পনাও করছে কোম্পানিটি।
পেরেগ্রিনের প্রোপালশন সিস্টেমে থাকা ফুটাটি শনাক্ত করা হয় ৮ জানুয়ারি। তবে, মহাকাশযানটি এখনও টিকে আছে, যা অনেকের প্রত্যাশাকেও ছাড়িয়ে গেছে। এ ছাড়া, নিয়মিতই এর আপডেট পোস্ট করে আসছে অ্যাস্টরোবটিক।
Update #16 for Peregrine Mission One: pic.twitter.com/TiLr4AU4rB
— Astrobotic (@astrobotic) January 13, 2024
কিছুদিন আগেই মিশনটির প্রাথমিক লক্ষ্যমাত্রা অর্থাৎ চাঁদের পৃষ্ঠে ‘সফট ল্যান্ডিংয়ের’ উদ্দেশ্য থেকে সরে আসে কোম্পানিটি। তবে, মহাকাশযানটির চূড়ান্ত পরিণতি কী হবে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়।
শুক্রবার অবশ্য পৃথিবী থেকে চাঁদের যে দূরত্ব, ততদূর পর্যন্ত অর্থাৎ তিন লাখ ৮৩ হাজার ২৩ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে দেখা গেছে মহাকাশযানটিকে। এমনকি পরবর্তীতে শনিবারের হিসাবে উঠে আসে, এর বর্তমান দূরত্ব পৃথিবী থেকে প্রায় তিন লাখ ৯০ হাজার কিলোমিটার। তবে, চাঁদের অবস্থান এখন কক্ষপথের যেখানটায় আছে, সেটি বিবেচনায় নিলে এ মিশনটি সফল করার মতো কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।
সবকিছু পরিকল্পনা অনুযায়ী এগোলে উৎক্ষেপণের ১৫ দিনের মধ্যেই পৃথিবী থেকে চাঁদের কক্ষপথে প্রবেশ করত পেরেগ্রিন। এখন পর্যন্ত ছয় দিন কেটে গেলেও মহাকাশযানটির যে জ্বালানি অবশিষ্ট আছে, তা দিয়ে আরও নয় দিন রকেট চালানোর সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
“প্রোপালশন সিস্টেমে ফুটা তৈরির কারণে আমাদের বিভিন্ন বিশ্লেষণধর্মী প্রচেষ্টা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। এমনকি মহাকাশযানের সম্ভাব্য গতিবিধি সম্পর্কে অনুমান প্রকাশের ক্ষেত্রেও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।” --শনিবার পোস্ট করা সাম্প্রতিক আপডেটে লিখেছে অ্যাস্টরোবটিক।
“আমাদের সর্বশেষ হিসাবে দেখা গেছে, মহাকাশযানটি পৃথিবীর দিকে পাড়ি জমাচ্ছে। সম্ভবত পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলেই এটি ধ্বংস হয়ে যাবে।”
পেরেগ্রিন-১ মিশনটি যে এমন সমাপ্তি দেখতে পারে, তা নিয়ে তেমন সন্দেহ ছিল না। এর কারণ হিসেবে প্রযুক্তি সাইট এনগ্যাজেট বলছে, চাঁদে অবতরণ করা জটিল বিষয়।
নাসার ‘কমার্শিয়াল লুনার পেলোড সার্ভিসেস (সিএলপিসি)’ প্রকল্পের অধীনে প্রথম বাণিজ্যিক মিশন ছিল এটি। এদিকে, গত সপ্তাহে উৎক্ষেপণের আগে দেওয়া ব্রিফিংয়ে প্রকল্পটির ব্যবস্থাপক ক্রিস কুলবার্ট বলেছেন, “মিশনটি যে সফল নাও হতে পারে, তা জেনেই আমরা এটি পরিচালনা করছি।”