ফিলিস্তিনি শনাক্তে গুগল ফটোস ব্যবহার করেছিল ইসরায়েল?

চেহারার অর্ধেকের কম অংশ থাকলেও এ প্রযুক্তি নির্ভুলভাবে মানুষ শনাক্ত করতে পারে। ‘খুবই দুর্বোধ্য অ্যাংগেল, অন্ধকারাচ্ছান্ন ও বাজে রেজুলিউশন থাকা ছবির’ ক্ষেত্রেও এটি কার্যকর।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 March 2024, 06:09 AM
Updated : 29 March 2024, 06:09 AM

গাজার সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে সম্পৃক্ত ফিলিস্তিনি নাগরিকদের শনাক্ত করতে একটি পরীক্ষামূলক ফেইশল রিকগনিশন পদ্ধতি ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে ইসরায়েলের সামরিক গোয়েন্দা বাহিনীর বিরুদ্ধে।

মার্কিন দৈনিক নিউ ইয়র্ক টাইমস লিখেছে, এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ভূমিকা রেখেছে গুগল ফটোস। তবে, কোম্পানিটির সঙ্গে সরাসরি কাজ করার কোনও নজির মেলেনি এতে।

নজরদারি প্রকল্পটি শুরু হয়েছিল গাজায় ইসরায়েলের জিম্মি নাগরিকদের খোঁজার উপায় হিসেবে। তবে, এটি শীঘ্রই রূপ নেয় ‘হামাস বা অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পৃক্ততা আছে, এমন ব্যক্তিদের খুঁজে বের করার উদ্যোগ হিসেবে’, সাধারণত বিভিন্ন নতুন যুদ্ধভিত্তিক প্রকল্পে যেমনটি ঘটে থাকে।

এ প্রযুক্তি ত্রুটিপূর্ণ হলেও সিস্টেমটির ফ্ল্যাগ করা নাগরিকদের আটক করার ক্ষেত্রে ইসরায়েলের সৈন্যরা সে বিষয়টি বিবেচনায় নেয়নি বলে প্রতিবেদনে লিখেছে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট এনগ্যাজেট।

টাইমসের সঙ্গে কথা বলা গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের তথ্য অনুসারে, প্রকল্পটিতে ইসরাইলভিত্তিক কোম্পানি ‘কোরসাইট’-এর প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে, যার সদর দপ্তর ইসরায়েলের রাজধানী তেল আবিবে অবস্থিত।

কোম্পানিটির দাবি, ছবিতে চেহারার অর্ধেকের কম অংশ থাকলেও তাদের নজরদারি ব্যবস্থা নির্ভুলভাবে মানুষ শনাক্ত করতে পারে। এমনকি ‘খুবই দুর্বোধ্য অ্যাংগেল (এমনকি ড্রোন থেকে), অন্ধকারাচ্ছান্ন ও বাজে রেজুলিউশন থাকা ছবির’ ক্ষেত্রেও এটি কার্যকরী।

তবে ইসরায়েল সামরিক বাহিনীর ‘ইউনিট ৮২০০’র এক কর্মকর্তার দাবি, বাস্তবে এটি অস্পষ্ট, বিকৃত বা ক্ষতের চেহারাওয়ালা ছবি শনাক্তে বাধার মুখে পড়েছে এ প্রযুক্তি।

তিনি আরও যোগ করেন, কোরসাইটের প্রযুক্তিকে বিভিন্ন ভুল ব্যক্তি ও ঘটনাও শনাক্ত করতে দেখা গেছে, যেখানে একজন ফিলিস্তিনি নাগরিকের হামাসের সঙ্গে সম্পৃক্ততা নিয়েও ভুল তথ্য দেখা গেছে।

ইসরায়েলের কর্মকর্তারা টাইমসকে বলেছেন, কোরসাইটের প্রযুক্তির সহায়ক হিসেবে গুগল ফটোস ব্যবহার করেছে দেশটির সামরিক বাহিনী। আর তাদের তালিকায় থাকা পরিচিত ব্যক্তিদের ডেটা গুগলের সেবায় আপলোড করেছেন গোয়েন্দা বিভাগের কর্মকর্তারা।

এর মধ্যে এক কর্মকর্তা বলেন, কোরসাইটের চেয়ে গুগলের বিকৃত ছবি মেলানোর সক্ষমতা বেশি। তবে, তারা নিজস্ব প্রযুক্তির ব্যবহারই অব্যাহত রেখেছিলেন কারণ এটি ‘কাস্টমাইজযোগ্য’ ছিল।

তবে গুগলের এক মুখপাত্রের মন্তব্য জানতে এনগ্যাজেট যোগাযোগ করলে তিনি দাবি করেন, পণ্যটি শুধু বিভিন্ন ছবির সেইসব চেহারাই আলাদা করে দেখায়, যেগুলো ব্যবহারকারী নিজের লাইব্রেরিতে যোগ করেছেন।

“গুগল ফটোস একটি বিনামূল্যের সেবা, যা সবার জন্য উন্মুক্ত। এটি আপনাকে বিভিন্ন একই ধরনের চেহারাওয়ালা ছবি সাজাতে সাহায্য করে যাতে সেইসব ব্যক্তির সঙ্গে লেবেল যোগ করে আপনি সহজেই তাদের পুরোনো ছবি খুঁজে পেতে পারেন। তবে, এটি ছবিতে থাকা অপরিচিত ব্যক্তিদের পরিচয় প্রকাশ করে না।” লিখেছে গুগল।