এ প্রচেষ্টার মূল উৎস হিসেবে কাজ করেছে অক্টোবরে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দেওয়া এআই বিষয়ক নির্বাহী আদেশ।
Published : 20 Dec 2023, 02:26 PM
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার নিরাপদ ব্যবহার নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় মানদণ্ড ও নির্দেশিকা লেখার প্রথম পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বাইডেন প্রশাসন।
মঙ্গলবার প্রশাসন আরও বলেছে, কীভাবে বিভিন্ন এআই ব্যবস্থা পরীক্ষা করা যায় ও সেগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়, সে বিষয়গুলোও রয়েছে এতে।
মার্কিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেকনোলজি (এনআইএসটি)’ বলেছে, এআই ব্যবস্থার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা চালানোর বিষয়ে তারা ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জনমত নেবে।
যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যমন্ত্রী জিনা রাইমন্ডো বলেন, এ প্রচেষ্টার মূল উৎস হিসেবে কাজ করেছে অক্টোবরে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দেওয়া এআই বিষয়ক নির্বাহী আদেশ। এর লক্ষ্য, এআই প্রযুক্তির জন্য ‘শিল্পমান তৈরি ও এমন বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন, যার মাধ্যমে ভবিষ্যতেও আমেরিকা এ উদীয়মান প্রযুক্তির নিরাপদ ব্যবহার নিশ্চিতে বৈশ্বিকভাবে নেতৃত্ব দিতে পারে।
রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এআই প্রযুক্তি মূল্যায়নে বাইডেন প্রশাসন এমন নির্দেশনা বানাচ্ছে, যা বিভিন্ন এআই ব্যবস্থা পরীক্ষা করার মতো পরিবেশ নিশ্চিত করার পাশাপাশি তাদের মানোন্নয়নেও সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
এর পাশাপাশি, জেনারেটিভ এআই প্রযুক্তির ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ও এআইয়ের তৈরি ভুল তথ্যের প্রবণতা কমিয়ে আনার বিষয়ে বিভিন্ন এআই কোম্পানি ও জনগণের মতামত নেওয়ার বিষয়টিও উল্লেখ রয়েছে এ নির্দেশনায়।
জেনারেটিভ এআই এমন এক ধরনের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবস্থা, যেখানে সাধারণ প্রম্পটের মাধ্যমেই বিভিন্ন টেক্সট, ছবি ও ভিডিও তৈরি করা যায়। সাম্প্রতিক মাসগুলোয় এ প্রযুক্তি নিয়ে ব্যাপক উদ্দীপনা দেখা গেলেও এতে কর্মসংস্থান কেড়ে নেওয়া, নির্বাচনের ফলাফল বদলে দেওয়া এমনকি মানুষের বুদ্ধিমত্তাকে ছাড়িয়ে ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর ঝুঁকি থাকায় একইভাবে ভীতিও বাড়াচ্ছে এটি।
রয়টার্স বলছে, বাইডেনের আদেশের পরপরই এআই প্রযুক্তি পরীক্ষার মানদণ্ড নির্ধারণের বিষয়টি খতিয়ে দেখছে মার্কিন সংস্থাগুলো, যার মাধ্যমে এ প্রযুক্তির রাসায়নিক, জৈবিক, রেডিওলজিকাল, পারমাণবিক ও সাইবার নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট ঝুঁকিগুলো মোকাবেলা করা যাবে।
অন্যদিকে, এ পরীক্ষার জন্য নির্দেশিকা তৈরির কাজ করছে ‘এনআইএসটি’। এর মধ্যে রয়েছে ‘রেড-টিমিং’ নামে পরিচিত এক পদ্ধতি, যার মাধ্যমে এআই প্রযুক্তির ঝুঁকি, ব্যবস্থাপনা ও মান নির্ধারণের সেরা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা সম্ভব বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে রয়টার্স।
সাইবার নিরাপত্তায় বিভিন্ন নতুন ঝুঁকি শনাক্ত করার ক্ষেত্রে বেশ কয়েক বছর ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে এ পদ্ধতি। আর নামটি এসেছে মার্কিন শীতল যুদ্ধের প্রেক্ষাপট থেকে, যেখানে শত্রুপক্ষকে ‘রেড টিম’ বলে আখ্যা দেওয়া হয়।
অগাস্টে আয়োজিত শীর্ষ এক সাইবার নিরাপত্তা সম্মেলনে প্রথমবার জনসমক্ষে ‘রেড-টিমিং’-এর পদ্ধতি দেখানো হয়, যার আয়োজক ছিল নৈতিক হ্যাকার দল ‘এআই ভিলেজ’, অলাভজনক সংস্থা ‘সিডএআই’ ও ‘হিউমেন ইন্টেলিজেন্স’।
হোয়াইট হাউজ বলেছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সম্ভাব্য ঝুঁকিগুলো আরও ভালোভাবে বোঝার লক্ষ্যে, বিভিন্ন এআই ব্যবস্থা ভুল আউটপুট দেয় কি না, সেটি পরীক্ষা করার চেষ্টা করেছেন আয়োজনে অংশ নেওয়া হাজার হাজার অংশগ্রহণকারী।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের দপ্তর আরও বলেছে, কীভাবে ‘রেড-টিমিং’ পদ্ধতি এআই প্রযুক্তির সম্ভাব্য ঝুঁকি শনাক্ত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখতে পারে, সে বিষয়টিও দেখানো হয়েছে এ আয়োজনে।