কেনার দামে ফিরল মাস্কের এক্স-এর বাজারমূল্য

ছবি: রয়টার্স

ইলন মাস্কের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এর মূল্য এখন চার হাজার চারশ কোটি ডলার। যে দামে মাস্ক প্ল্যাটফর্মটি কিনেছিলেন ঠিক সেই দামেই ফিরে এসেছে কোম্পানিটির বাজারমূল্য।

ডনাল্ড ট্রাম্পের একজন গুরুত্বপূর্ণ মিত্র হওয়ার পর থেকে মার্কিন এই ধনকুবেরের ভাগ্যের নাটকীয় পরিবর্তন ঘটেছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক পত্রিকা গার্ডিয়ান।

ফাইন্যান্সল টাইমসের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, বিনিয়োগকারীরা এ মাসের শুরুতে একটি সেকেন্ডারি চুক্তিতে এক্স-এর মূল্য নির্ধারণ করেছেন চার হাজার চারশ কোটি ডলার। এ চুক্তিতে কোম্পানিতে থাকা পার্টনারশিপ বিনিময় করবেন তারা।

একশ কোটি ডলারেরও বেশি ঋণ পরিশোধের জন্য নতুন ইকুইটি বিক্রি করে প্রাথমিক তহবিল রাউন্ডে দুইশো কোটি ডলারের নতুন তহবিল সংগ্রহের জন্যও কাজ করছে এক্স। সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে প্ল্যাটফর্মটির বিনিয়োগকারী ‘ফিডেলিটি ইনভেস্টমেন্টস’ এর মূল্য নির্ধারণ করেছিল কেবল এক হাজার কোটি ডলার।

২০২২ সালের অক্টোবরে টুইটার কেনেন বিশ্বের শীর্ষ ধনী ব্যক্তি মাস্ক। ওই সময় টুইটারের নীল পাখির কর্পোরেট লোগোর রেফারেন্সে টেনে টুইটারে তিনি লিখেছিলেন “পাখিটি এখন মুক্ত”। এর পরের গ্রীষ্মে টুইটারের নাম বদলে এক্স রাখেন তিনি।

এক্স-এর দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে সাইটের মডারেশন নীতিমালা শিথিল করেছেন মাস্ক, যার কারণে অনেক বিজ্ঞাপনদাতা প্ল্যাটফর্মটি ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। এ বিষয়ে মাস্ক বলেছিলেন, বিজ্ঞাপনদাতারা তাকে বয়কট করে ‘ব্ল্যাকমেইল’ করার চেষ্টা করছে।

পরবর্তী সময়ে বিশ্বজুড়ে বিজ্ঞাপন জোট এবং ইউনিলিভার, মার্স ও সিভিএস হেলথ’সহ বেশ কয়েকটি বড় কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করে এক্স। তাদের বিরুদ্ধে সামাজিক নেটওয়ার্কটি বন্ধের জন্য বেআইনিভাবে ষড়যন্ত্র ও ইচ্ছাকৃতভাবে রাজস্ব হারাতে বাধ্য করার অভিযোগ আনে প্লাটফর্মটি।

আইনি পদক্ষেপ শুরুর পর এক টুইট বার্তায় মাস্ক বলেছিলেন, “আমরা দুই বছর ধরে শান্তি চেষ্টা করে দেখেছি, কিন্তু এখন এটি যুদ্ধের পর্যায়ে পৌঁছে গেছে।”

প্ল্যাটফর্মটির নতুন এই চার হাজার চারশ কোটি ডলারের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে রয়েছে আন্দ্রেসেন হোরোভিটজ, সিকোইয়া ক্যাপিটাল, ৮ভিসি, গোয়ানা ক্যাপিটাল ও ফিডেলিটি ইনভেস্টমেন্টস-এর মতো কোম্পানি। এ দ্বিতীয় চুক্তিটি প্রাথমিক তহবিল সংগ্রহের জন্য দুইশো কোটি ডলার মূল্যের শেয়ারের দাম নির্ধারণ করবে।

মাস্ক কেনার পর থেকে এক্স-এর রাজস্ব কমেছে। তবে গত বছর একশ ২০ কোটি ডলারের মুনাফা করেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটি।

ফোর্বসের তথ্য অনুসারে, পাঁচ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো স্পেসএক্সে মাস্কের ব্যক্তিগত রকেট ও স্যাটেলাইট ব্যবসার অংশীদারিত্ব এখন টাইকুনের সবচেয়ে বড় সম্পদ।

এখনও মাস্কের মোট সম্পদের পরিমাণ ৩২ হাজার তিনশ কোটি ডলার বলে অনুমান ফোর্বসের, যেখানে স্পেসএক্সে তার শেয়ারের মূল্য আনুমানিক ১৪ হাজার সাতশ কোটি ডলার, যা ডিসেম্বর থেকে টেসলার শেয়ার অর্ধেক হয়ে যাওয়ার পর টেসলায় তার শেয়ারের চেয়ে প্রায় দুই হাজার কোটি ডলার বেশি।