মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ার দুদিনের মধ্যেই জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ গেল।
Published : 02 May 2023, 06:54 PM
আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে হয়েছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী, পরে ‘জামিনদাতা হিসেবে ঋণখেলাপি’ হওয়ায় বাতিল হয়েছে সেই প্রার্থিতা; এবার গাজীপুরের সাময়িক বারখাস্ত হওয়া মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হলফনামায় সম্পদ ও আয় গোপনের অভিযোগ দেওয়া হয়েছে দুদকে।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে গণফ্রন্টের মেয়র পদপ্রার্থী আতিকুল ইসলাম মঙ্গলবার এই অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের সমন্বিত গাজীপুর জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. মোজাহার আলী সরদার।
তিনি বলেন, “বাছাই কমিটি যদি এটি তদন্তযোগ্য বলে মনে করে তাহলে সুপারিশসহ অনুমোদনের জন্য ঢাকায় পাঠানো হবে। তারা অনুমতি দিলে তদন্ত কার্যক্রম শুরু হবে।“
২০১৮ সালের নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করে জয় পান জাহাঙ্গীর। তবে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে একটি ঘরোয়া আলোচনায় বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের নিয়ে ‘আপত্তিকর’ মন্তব্য করার অভিযোগ উঠে তার বিরুদ্ধে। পরে তার দলীয় সদস্যপদ কেড়ে নেয় আওয়ামী লীগ। বরখাস্ত হন মেয়র পদ থেকেও।
ভবিষ্যতে সংগঠনের স্বার্থ পরিপন্থি কার্যক্রম ও সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গ না করার শর্তে গত ১ জানুয়ারি তাকে ক্ষমা করার কথা জানিয়ে চিঠি দেয় আওয়ামী লীগ। এই চিঠি পাওয়ার পর চার মাস যেতে না যেতেই জাহাঙ্গীর ফের দলের সিদ্ধান্তের বিপরীতে গিয়ে প্রার্থী হন। অতীতের অভিজ্ঞতা মাথায় রেখে সঙ্গে প্রার্থী করেছেন মা জায়েদা খাতুনকে।
দুদকে দেওয়া অভিযোগে আতিকুল ইসলাম বলেন, মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের দাখিল করা ২০১৯-২০২০ ও ২০২০-২০২১ অর্থবছরের আয়কর বিবরণীতে সম্পদ গোপন করার এবং আয়-ব্যয়ের হিসাবে গড়মিল লক্ষ্য করা গেছে।
“তার ছয়দানার বাড়ির আধুনিক সুপরিসর লিফট, দুই ডজন এসি, ফ্রিজ, টিভি, কম্পিউটার, ল্যাপটপসহ ইলেকট্রনিক সামগ্রীর দাম দেখানো হয়েছে মাত্র ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। এ ছাড়া কনফারেন্স টেবিল ও অর্ধশত চেয়ার, আলিশান খাট, রাজকীয় সোফাসহ আসবাবপত্রের দাম দেখানো হয়েছে মাত্র ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
“এসবের সঠিক দাম হিসাব করা হলে অন্তত ৫ কোটি টাকার গড়মিল বেরিয়ে আসবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
এ ছাড়া জাহাঙ্গীর আলমের আয়কর বিবরণীতে উল্লিখিত প্রাইভেট সাপ্লাই ব্যবসার ট্রেড লাইসেন্স, অন্যান্য লাইসেন্স, অফিস, কর্মী সরবরাহকৃত মালামালের উৎস ও বৈধতা, ভ্যাট দেওয়ার প্রমাণ এবং আয়-ব্যয়ের ক্ষেত্রেও গড়মিল রয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়।
জাহাঙ্গীর তার দাখিল করা আয়কর রিটার্নে দুটি কোম্পানির বিনিয়োগকারী শেয়ারহোল্ডার হিসেবে লাভ-ক্ষতির হিসাব এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে বেতন-ভাতা গ্রহণের বিষয়গুলো গোপন করেছেন বলে অভিযোগ করেন আতিকুল।
সংশ্লিষ্ট আয়কর অফিসের কিছু কর্মকর্তার সঙ্গে যোগসাজসে এসব গড়মিল করা হয়েছে বলেও সেখানে উল্লেখ করা হয়।
আরও পড়ুন: