“প্রশাসনের লোকজনকে দেখেই মাজারে থাকা লাল পোশাকের কিছু উচ্ছৃঙ্খল ভক্ত ক্ষেপে যান”, বলেন ইউএনও।
Published : 21 Apr 2025, 12:26 AM
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় ‘হজরত ঘোড়ে শাহ মাজারে’ মাদকবিরোধী অভিযানে গিয়ে ‘ফকিরদের’ তোপের মুখে পড়ার কথা জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
অন্যদিকে মাজারের লোকজনের অভিযোগ, পুলিশ এসেই তাদের ওপর লাঠিচার্জ শুরু করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মাজারের লোকজন তাদের ওপর চড়াও হন।
ঘোড়ে শাহ মাজারটির অবস্থান উপজেলার সাতবাড়ীয়া বিত্তিপাড়া এলাকায়।
উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে রোববার দুপুরে সেখানে অভিযানে যান আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
মাজারের ‘ভক্ত’ ময়েজ পাগলা বলেন, “সরকার পতনের পর থেকে কোনো একটি বিশেষ মহলের ইন্ধনে ঘোড়ে শাহ মাজার ও গোলাপনগরের সোলেমান শাহ মাজার উৎখাতের পায়তারা করে আসছে।
“তারা বিভিন্নভাবে প্রশাসনের ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে মাজার ভক্তদের হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছে। প্রায় ১০০ বছর আগে থেকে হয়ে আসা চৈত্র মাসের প্রথম তিন দিনের ওরস উদযাপনে লাখ লাখ ভক্তের সমাগম ঘটত এবছর। সেই অনুষ্ঠান করতে দেয়নি প্রশাসন।”
তিনি বলেন, “প্রতিবছরের মত এবারও পয়লা বৈশাখ থেকে শুরু করে মাসব্যাপী গ্রামীণ মেলা বসে হজরত ঘোড়ে শাহ মাজার চত্বরে। এবছর শুরু থেকেই একটি মহল মাদক ব্যবসার অভিযোগ তুলে নানাভাবে মেলা বন্ধের চেষ্টা করে আসছে।
“সেজন্য মাজার ভক্ত পাগল ফকিররা আগে থেকেই ক্ষিপ্ত ছিল। এর মধ্যে আজ হঠাৎ করে মাজারে ঢুকে পুলিশ বেধড়ক লাঠিপেটা শুরু করলে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়।”
ভেড়ামারা থানার ওসি শহিদুল ইসলাম বলেন, “এসিল্যান্ডসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মাজারের লোকজনের বাধার মুখে অভিযান না চালিয়েই ফিরে আসেন। বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করে দেখছে।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রফিকুল ইসলাম বলেন, “প্রশাসনের লোকজন দেখেই মাজারে থাকা জটাধারী লাল পোশাকের কিছু উচ্ছৃঙ্খল ভক্ত ক্ষেপে যায়। প্রশাসন অভিযান শুরুর আগেই তারা আক্রমণাত্মক আচরণ শুরু করেন।
“বাধার মুখে এবং অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে শেষ পর্যন্ত অভিযান না চালিয়েই প্রশাসনের লোকজন ফিরে আসেন।”
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সহকারী কমিশনার (ভূমি) আনোয়ার হোসেন বলেন, “মাজারে মাদকবিরোধী অভিযানে গেলে সেখানকার লোকজন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। পরিস্থিতি শান্ত করতে অভিযান না চালিয়েই ঘটনাস্থল থেকে ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছি।”
কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক মো. তৌফিকুর রহমান বলেন, “আমিও শুনেছি সেখানে এ ঘটনা ঘটেছে। এসিল্যান্ড সেখানে গিয়েছিলেন; ওই জায়গায় মাদকসেবনের অভিযোগ ছিল।
“বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা হবে।”