ভোটের আগের রাতে অর্থ লেনদেনের তথ্য আছে: আজমত উল্লা

মোনাফেক আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীর মাধ্যমে আজমত উল্লাকে হারানো হয়েছে বলে তিনি মনে করেন।

গাজীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 June 2023, 06:14 PM
Updated : 3 June 2023, 06:14 PM

আওয়ামী লীগের নামধারী কিছু নেতাকর্মীর কারণে পরাজয় বরণ করতে হয়েছে বলে মনে করেন গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী আজমত উল্লা খান।

এসব নেতাকর্মীকে ‘মোনাফেক’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, “নির্বাচনের আগের রাতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সঙ্গে কারা অর্থ লেনদেন করেছেন সে তথ্যও আমাদের কাছে আছে।”

শনিবার শহরের বঙ্গতাজ অডিটোরিয়ামে সিটি নির্বাচন পরবর্তী মূল্যায়ন সভায় আজমত উল্লা খান এসব কথা বলেন।

মূল্যায়ন সভার মঞ্চে ছিলেন গাজীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য এবং যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ হাসান রাসেল, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য শামসুন্নাহার ভূইয়া, গাজীপুর সদর মেট্রো থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওয়াজ উদ্দিন মিয়াসহ অন্যরা।

সেসব নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “বিভিন্ন সংস্থার কাছে আপনাদের বিষয়ে তথ্য রয়েছে। আপনাদের ব্যাপারে সবকিছু জানতে পেরেছি। নির্বাচনের আগের রাতে কে কে বিকাশের মাধ্যমে টাকা লেনদেন করেছেন তার তথ্য-প্রমাণও আমাদের কাছে আছে।

“যারা সামাজিকভাবে পরিচিত তারাই সবচেচেয় বেশি মোনাফেকি করেছেন। মোনাফেক আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীর মাধ্যমে আমাকে হারানো হয়েছে। যে কয়জন নৌকার পক্ষে মাঠে কাজ করেছেন তাদের অনেকেই ছোট মাপের নেতা। তাদের নিয়ে আবার দল গঠন করব, আমার বিশ্বাস তারা দলের সঙ্গে বেঈমানি করবে না।”

এ সময় গাজীপুর মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক উপ-প্রকাশনা সম্পাদক রাজু মিয়া বলেন, “নির্বাচন উপলক্ষে যেসব কমিটি করা হয়েছে, সেখানে ইচ্ছাকৃতভাবে জনবিছিন্ন ও কম গুরুত্বপূর্ণ লোকজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আমাদের কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা কোনো কাজ করেননি। কেন্দ্রে কোনো পোস্টার লাগানো হয়নি, বারবার অনুরোধ করার পরেও নেতারা নৌকার পোস্টার লাগাননি। আমরা নৌকার কোনো ব্যাজও পাইনি। উল্টো অনেক বিএনপি-জামাতপন্থি নেতাদের নৌকার ব্যাজ দেওয়া হয়েছে।”

এ সময় বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন নির্বাচনে আজমত উল্লার পক্ষে কাজ করা নেতাকর্মীরা।

আজমত উল্লা খান বলেন, “নেত্রী আমাকে নৌকার পরাজয়ের কারণ অনুসন্ধান করে একটি প্রতিবেদন দিতে বলেছেন। সেই নির্দেশ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে থানা পর্যায়ে নেতাকর্মীদের সঙ্গে এই মূল্যায়ন সভা হচ্ছে। পরবর্তীতে ওয়ার্ড পর্যায়ে আলোচনা শেষে প্রতিবেদন দেওয়া হবে। যে সমস্ত মোনাফেক ও মীরজাফরদের কারণে নৌকার ভরাডুবি হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

জাতীয় নির্বাচনের আগে মহানগর আওয়ামী লীগকে সত্যিকারের নেতাকর্মীদের নিয়ে পুনর্গঠন করার প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি।

যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল বলেন, “মোনাফেক হলো তারা যারা মুখে এক কথা বলে আর কাজে অন্যটা করে। এরা সবার জন্য ক্ষতিকর। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

“প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার পথে যারা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে, যারা নৌকার সঙ্গে বেইমানি করেছে, তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

গত ২৫ মে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে টেবিল ঘড়ি প্রতীকে ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুন। 

তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আজমত উল্লা খান নৌকা প্রতীকে পেয়েছিলেন ২ লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট। 

অর্থাৎ স্বতন্ত্র প্রাথী জায়েদা ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীর চেয়ে ১৬ হাজার ১৯৭ ভোট বেশি পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হন। 

আরও পড়ুন-

Also Read: প্রধানমন্ত্রীর দুয়ারে আজমত, উপহার দিলেন বই, পেলেন ‘সান্ত্বনা’

Also Read: আজমতের ভোট পরবর্তী মূল্যায়ন সভায় ‘হট্টগোল’

Also Read: গাজীপুরে নৌকার নয়, ব্যক্তির পরাজয় হয়েছে: জাহাঙ্গীর

Also Read: ব্যবসা হারিয়েছেন জাহাঙ্গীর, আজমতের আয় এখন বেশি

Also Read: আত্মবিশ্বাসী আজমত বললেন ‘নৌকার জয় হবে’