আজমতের ভোট পরবর্তী মূল্যায়ন সভায় ‘হট্টগোল’

দলের কয়েকজন নেতার নাম উল্লেখ করে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্যরা।

গাজীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 May 2023, 04:21 PM
Updated : 31 May 2023, 04:21 PM

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পর্যালোচনা করতে থানায় থানায় নির্বাচন পরিচালনার সঙ্গে জড়িত নেতাদের নিয়ে মেয়র পদে পরাজিত প্রার্থী ও মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি আজমত উল্লা খান সভা করেছেন, যেখানে হট্টগোল-হইচই হয়েছে। 

বুধবার প্রথমে সকাল সাড়ে ১০টায় মহানগরীর কাশিমপুর থানা এবং পরে কোনাবাড়ী থানার নেতাদের নিয়ে সভায় বসেন আজমত উল্লা খান।

এ সময় তার সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য শামসুন্নাহার ভূঁইয়াসহ জেলার ঊর্ধ্বতন নেতারা উপস্থিত ছিলেন। 

কাশিমপুর থানা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে সভায় সভাপতিত্ব করেন দলের থানা কমিটির সভাপতি আনোয়ার হোসেন। সাধারণ সম্পাদক মো. আসাদুজ্জামান তুলার সঞ্চালনায় এতে নির্বাচনের সঙ্গে জড়িত ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।   

এ মূল্যায়ন সভা নিয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের কোনো নেতা মন্তব্য করতে চাননি। তাদের ভাষ্য, এটা একান্তই দলীয় সভা।   

তবে সভায় উপস্থিত একাধিক নেতাকর্মী জানিয়েছেন, নেতাদের আলোচনায় নির্বাচনে পরাজয়ের বিভিন্ন কারণ উঠে আসে। দলের কয়েকজন নেতার নাম উল্লেখ করে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগও করেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্যরা। 

একে অন্যকে দোষারোপ, দায়িত্ব পালনে অবহেলার যেসব বিষয় উঠে আসছিল সেগুলো নোট করে নিচ্ছিলেন মন্ত্রীসহ দায়িত্বশীল নেতারা। 

কাশিমপুরে এক পর্যায়ে একে অন্যকে আক্রমণ করে কথা বলতে শুরু করেন নেতাকর্মীরা। ফলে সভাস্থলে হট্টগোল সৃষ্টি হয়। পরে উপস্থিত জ্যেষ্ঠ নেতারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন বলে একাধিক জন জানান।

কাশিমপুর থানা আওয়ামী লীগের সদস্য মোশাররফ হোসেন কয়েকজন নেতার নাম উল্লেখ করে বলেন, “তারা ভোটের আগের রাতের টেবিল ঘড়িতে ভোট দেওয়ার জন্য অর্থ বিতরণ করেছেন। ভোটের দিন গলায় নৌকা প্রতীক ঝুলিয়ে আসলে টেবিল ঘড়ির জন্য ভোট চেয়েছেন।” 

এসব নেতাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে দলের জ্যেষ্ঠদের প্রতি দাবি জানান তিনি। 

এ সময় আজমত উল্লা খান নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, “আমাদের অনেক নেতাকর্মী জানপ্রাণ দিয়ে কাজ করেছেন। তবে আমি জানি যে, অনেকের বিরুদ্ধেই অভিযোগ আছে। সবার সামনে এগুলো না বলে বক্তব্য লিখে দিলে পরবর্তীতে তা বিশ্লেষণ করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

“যেহেতু গাজীপুরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের একসঙ্গে চলতে হবে, তাই অনেকেই সামনাসামনি হয়ত অনেক কিছু বলতে পারছেন না। কিন্তু আমরা চাই, মাঠের প্রকৃত চিত্র আমাদের হাতে আসুক। সামনে জাতীয় নির্বাচন, তাই এই লোকগুলোকে চিহ্নিত করা প্রয়োজন। যেন তারা জাতীয় নির্বাচনে দলের ক্ষতি করতে না পারে।” 

বিকালে কোনাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের কার্যালয়েও মূল্যায়ন সভা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন কোনাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর রহমান মাস্টার। 

থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমানের সঞ্চালনায় মূল্যায়ন সভায় মহানগরীর আওয়ামী লীগ নেতা, ওয়ার্ড ও ইউনিট কমিটির নেতাসহ সংশ্লিষ্ট নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।  

গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের এই ধারাবাহিক মূল্যায়ন সভা আগামী ৮ জুন পর্যন্ত চলবে বলে জানিয়েছেন দায়িত্বশীল একটি সূত্র। 

গত ২৫ মে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে টেবিল ঘড়ি প্রতীকে ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুন। 

তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আজমত উল্লা খান নৌকা প্রতীকে পেয়েছিলেন ২ লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট। 

অর্থাৎ স্বতন্ত্র প্রাথী জায়েদা ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীর চেয়ে ১৬ হাজার ১৯৭ ভোট বেশি পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হন। 

আরো পড়ুন:

Also Read: গাজীপুরে আজমতের নৌকা ডুবিয়ে মাকে ভাসালেন জাহাঙ্গীর

Also Read: গাজীপুরে নৌকার নয়, ব্যক্তির পরাজয় হয়েছে: জাহাঙ্গীর

Also Read: আত্মবিশ্বাসী আজমত বললেন ‘নৌকার জয় হবে’

Also Read: ব্যবসা হারিয়েছেন জাহাঙ্গীর, আজমতের আয় এখন বেশি