ঝালকাঠিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল নিয়ে আনন্দ মিছিলে জেলা যুবলীগের এক পক্ষের ওপর আরেক পক্ষের হামলার অভিযোগ উঠেছে। এতে আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন।
বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় ঝালকাঠি পৌর শহরের পোস্ট অফিস সড়কে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন ঝালকাঠি সদর থানার ওসি নাসিরউদ্দিন সরকার।
আহতদের মধ্যে পাঁচ জনকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তারা হলেন, ঝালকাঠি জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সৈয়দ হাদিসুর রহমান মিলন, ঝালকাঠি সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি তরিকুল ইসলাম অপু, কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মো. সাগর, নয়ন দাস, সদর উপজেলার ধানসিড়ি ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সহ-সভাপতি হারুন হাওলাদার ও রবিউল ইসলাম।
আহত হারুন হাওলাদার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ঝালকাঠি জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমানে জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সৈয়দ হাদিসুর রহমান মিলনের সঙ্গে পদ নিয়ে আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক রেজাউল করিম জাকির ওরফে জিএস জাকির ও কামাল শরীফের বিরোধ রয়েছে।
হারুন জানান, সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করায় বৃহস্পতিবার সকালে তারা মোটরসাইকেল নিয়ে পৌর শহরে মহড়া ও আনন্দ র্যালি করছিলেন।
“র্যালিটি ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিসের পশ্চিম পাশে এসে পৌঁছালে জিএস জাকির ও কামাল শরীফের নেতৃত্বে পিস্তল, ধারালো অস্ত্র, জিআই পাইপ এবং লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা করা হয়।
“হামলাকারীরা গুলি করে, পিটিয়ে ও কুপিয়ে আমাদের অন্তত ১০ জনকে আহত করেছে। এর মধ্যে আমিসহ গুরুতর আহত হয়েছেন যুবলীগ নেতা সৈয়দ মিলন, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা অপু, সাগর, নয়ন ও রবিউল।”
আহত মো. সাগর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সৈয়দ মিলনকে জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়েছে। কিন্তু বিষয়টি মানে না জিএস জাকির ও কামাল শরীফরা। এর জের আমাদের ওপর হামলা করা হয়েছে।
“হামলাকারীরা গুলি করাসহ বেধড়কভাবে আমাদের পিটিয়েছে ও কুপিয়েছে। বহরের মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেছে। সৈয়দ মিলনের পায়ে গুলি লেগেছে।”
আহত সৈয়দ মিলনের স্ত্রী মারিয়া ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তার স্বামীসহ নেতা-কর্মীরা সরকারের পক্ষে আনন্দ মিছিল করছিল, এ সময় হামলাকারীরা প্রকাশ্যে তার স্বামীকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করাসহ পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করেছে।
তিনি এ ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিচার চেয়েছেন।
বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের কর্তব্যরত ইন্টার্ন চিকিৎসক শুভ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আহতদের কারও শরীরে গুলির লক্ষণ পাওয়া যায়নি। তবে পেটানো ও ধারালো অস্ত্রের জখম রয়েছে।
তবে এই হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক রেজাউল করিম জাকির বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, হরতাল-অবরোধের বিপক্ষে ঝালকাঠি পৌর শহরে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগ মিছিল এবং মহড়া দেয়।
“ঝালকাঠির গোরস্তান এলাকা থেকে এসে ১০-১২ মোটরসাইকেল পিছনে প্রবেশ করে। এ সময় কৃষ্ণকাঠি এলাকার বাসিন্দা ও স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার শিকার হয়। মহড়া শেষে ফায়ার সার্ভিস এলাকায় তার স্বজনরা কয়েকজনের ওপর হামলা করেছেন।”
খবর পেয়ে তিনি যাওয়ার আগেই প্রশাসন সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে বলে জানান তিনি।
ওসি নাসিরউদ্দিন সরকার বলেন, ঝালকাঠি জেলা যুবলীগের মধ্যে দুই পক্ষের মধ্যে কোন্দল রয়েছে। এর জের ধরে ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিস মোড়ে দুই গ্রুপের মধ্যে তর্ক হয়।
“এক পক্ষ অপর পক্ষের উপর হামলা করেছে। এতে কয়েকজন আহত হয়ে বরিশালে গেছে। তারা অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ওসি আরও বলেন, পরবর্তীতে যেন এ ধরনের ঘটনা না ঘটে তা এড়াতে পুলিশ তৎপর রয়েছে।