পে অর্ডার জালিয়াতি মামলায় বরিশালের গৌরনদী উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যানকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
উচ্চ আদালতের নির্দেশে বুধবার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হন ভাইস চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান ফরহাদ মুন্সী। তার আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করেন।
বিচারক কেএম রাশেদুজ্জামান রাজা জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বলে জানিয়েছেন ওই আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. কামরুল ইসলাম।
উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান ফরদাহ গৌরনদীর সুন্দরদী গ্রামের প্রয়াত আব্দুল খালেক মুন্সীর ছেলে ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
এ ছাড়া খাদ্য বিভাগের পুষ্টি চাল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এলাহী এগ্রো লিমিটেডের স্বত্বাধিকারীও তিনি।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. কামরুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, গত ৬ ফেব্রুয়ারি নুরুজ্জামান ফরদাহকে প্রধান আসামি করে তিনজনের নামে মামলা করেন
বরিশাল জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের কারিগরি খাদ্য পরিদর্শক ও মামলা শাখা প্রধান মো. দেলোয়ার হোসেন মোল্লা।
মামলার অপর দুই আসামি হলেন- অগ্রণী ব্যাংকের ঢাকার পোস্তখোলা শাখার ব্যবস্থাপক মো. আলী রেজা (৫২) এবং অগ্রণী ব্যাংকের বরিশাল আগৈলঝাড়া উপজেলার পয়সারহাট শাখার তৎকালীন ব্যবস্থাপক অম্লান বিশ্বাস।
এজাহারে আসামিদের বিরুদ্ধে প্রতারণার মাধ্যমে জাল পে অর্ডার প্রস্তুত ও আসল হিসেবে ব্যবহারের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়।
বেঞ্চ সহকারী আরও বলেন, ওই মামলায় ভাইস চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান উচ্চ আদালত থেকে ৪ সপ্তাহের আগাম জামিনে ছিলেন। অপর দুই আসামি অন্তর্বর্তীকালীন জামিনে আছেন।
মামলার নথির বরাতে আদালতের সরকারি নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) এনামুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পুষ্টি চাল সরবরাহের চুক্তিভিত্তিক মিলার হলো এলাহী এগ্রো লিমিটেড। এ প্রতিষ্ঠান ২০১৮ সালের ১২ ডিসেম্বর থেকে ২০২২ সালের ১৫ জুন পর্যন্ত মোট ১১টি পে অর্ডারের মাধ্যমে ২ কোটি ৬৮ লাখ ৩৬ হাজার ৫০৪ টাকার জামানত দেয়। পরে যাচাইয়ে যা ভুয়া প্রমাণিত হয়।
ওইসব পে অর্ডারের বিপরীতে প্রকৃতপক্ষে জমা দেওয়া হয়েছে মাত্র ৭ হাজার ২০০ টাকা। অর্থাৎ ২ কোটি ৬৮ লাখ ২৯ হাজার ৩০৪ টাকা জালিয়াতি করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ব্যাংকে ১০০ টাকা জমা দিয়ে ১ কোটি ৯ লাখ ৩৯ হাজার ৫০৪ টাকার; ২০০ টাকা জমা দিয়ে ৩ লাখ ৩৪ হাজার ৪০০ টাকার এবং ৬ হাজার টাকা জমা দিয়ে ৬ লাখ টাকার একটি করে পে অর্ডার তৈরি করে এলাহী এগ্রো।
এভাবে অন্য আটটি পে অর্ডারেও জালিয়াতি করে খাদ্য বিভাগে জমা দেয় প্রতিষ্ঠানটি।
মামলায় আরও বলা হয়, ভুয়া এসব পে অর্ডারের মধ্যে ছয়টি করা হয়েছে অগ্রণী ব্যাংক সোনারগাঁও শাখা নারায়ণগঞ্জ থেকে, চারটি করা হয়েছে অগ্রণী ব্যাংক বরিশাল আগৈলঝাড়া উপজেলার পয়সারহাট শাখা এবং একটি করা হয়েছে অগ্রণী ব্যাংক বরিশালের বাটাজোড় শাখা থেকে।
আরও পড়ুন: