দুজনেরই প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে দ্বৈত নাগরিকত্বের কারণে।
Published : 02 Jan 2024, 11:53 AM
সর্বোচ্চ আদালতে গিয়েও লাভ হল না; দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে লড়ার সুযোগ আর থাকল না শাম্মী আহমেদ এবং সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর।
প্রার্থিতা ফিরে পেতে আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল করেছিলেন বরিশাল-৪ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী শাম্মী। প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ৬ বিচারকের আপিল বেঞ্চ মঙ্গলবার তা খারিজ করে দিয়েছে।
বরিশাল-৫ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া আওয়ামী লীগ নেতা সাদিকের আবেদনও নাকচ করে দিয়েছে আপিল বিভাগের একই বেঞ্চ।ফলে শাম্মী বা সাদিক কেউ আর এবার নির্বাচন করতে পারছেন না।
বরিশাল-৪ আসনের বর্তমান এমপি পঙ্কজ দেবনাথের বদলে আওয়ামী লীগ এবার প্রার্থী করেছিল দলের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আহমেদকে। মনোনয়ন না পাওয়ায় পঙ্কজ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়ে যান।
শুরু থেকেই তাদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ চলছিল। পঙ্কজের অভিযোগ ছিল, শাম্মী আহমেদ অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক হলেও তা গোপন করেছেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তার যাচাই বাছাইয়ে দ্বৈত নাগরিকত্বের কারণে শাম্মীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হলে তিনি নির্বাচন কমিশনে আপিল করেন। পাশাপাশি তথ্য গোপনের অভিযোগে পঙ্কজ দেবনাথের প্রার্থিতা বাতিলেরও আবেদন করেন তিনি।
নির্বাচন কমিশনের শুনানিতে পঙ্কজের প্রার্থিতা টিকে গেলেও দ্বৈত নাগরিকত্বের কারণে শাম্মীর প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্ত বহাল থাকে। এরপর তিনি হাই কোর্টে যান।
ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে হাই কোর্টের বিচারপতি মো. ইকবাল কবির ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের বেঞ্চ নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত বহাল রাখে। আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতেও তা বহাল থাকে।
প্রার্থিতা ফিরে পেতে শাম্মী ফের চেম্বার আদালতে গেলে চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম গত ২৬ ডিসেম্বর ওই আবেদন শুনানির জন্য আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন।
মঙ্গলবার সেই আবেদনের ওপর শুনানি নেয় আপিল বেঞ্চ, কিন্তু আদালতের সিদ্ধান্ত আর বদলায়নি।
বরিশালের সাবেক মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ দলের মনোনয়ন না পেয়ে বরিশাল-৫ আসনে স্বতন্ত্র হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। গত ১৫ ডিসেম্বর রিটার্নিং কর্মকর্তা তার মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেন।
কিন্তু দ্বৈত নাগরিকত্বের অভিযোগ তুলে তার মনোনয়ন বাতিল চেয়ে পরে ইসিতে আপিল করেন ওই আসনের নৌকার প্রার্থী পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম। শুনানি শেষে সাদিক আবদুল্লাহর প্রার্থিতা বাতিল করে কমিশন।
অন্যদিকে জাহিদ ফারুক মামলার বিষয়ে তথ্য গোপন করেছেন অভিযোগ তুলে তার প্রার্থিতা বাতিলের আপিল করেছিলেন সাদিক আব্দুল্লাহ। সেই আপিল নির্বাচন কমিশনে নামঞ্জুর করা হয়। ফলে জাহিদ ফারুকের প্রার্থিতা বহাল থাকে।
নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে এরপর হাই কোর্টে রিট আবেদন করেন সাদিক। সেই আবেদনের শুনানি করে ১৮ ডিসেম্বর হাই কোর্টের বিচারপতি আবু তাহের সাইফুর রহমান ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর বেঞ্চ বরিশাল-৫ আসনের এই স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা করে।
হাই কোর্টের ওই আদেশ স্থগিত চেয়ে এরপর আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করেন নৌকার প্রার্থী জাহিদ ফারুক শামীম। সেই আবেদনের শুনানি করে চেম্বার আদালত হাই কোর্টের রায় স্থগিত করে।
এরপর সাদিক আব্দুল্লাহ প্রার্থিতা ফেরত চেয়ে ফের আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করেন। চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম বিষয়টি তখন আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন।
মঙ্গলবার সেই শুনানি শেষে চেম্বার আদালতের সিদ্ধান্তই বহাল রাখে সর্বোচ্চ আদালত। ফলে সাদিক আব্দুল্লাহর সংসদ নির্বাচন করার স্বপ্ন এবারের মত শেষ হয়ে যায়।
পুরনো খবর:
প্রার্থিতা ফেরত পেলেন সাদিক আব্দুল্লাহ, ব্যর্থ শামীম ও শাম্মী