২০২০ সালের অক্টোবরে গ্রেপ্তারের পর থেকে তিনি কারাগারে ছিলেন বলে জানান নারায়ণগঞ্জ জেলা সুপার।
Published : 21 Feb 2024, 05:25 PM
সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন হত্যা মামলার এক আসামি নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টা ২০মিনিটে নারায়ণগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান বলে নারায়ণগঞ্জ জেল সুপার মোকাম্মেল হোসেন জানান।
মৃত ২৮ বছর বয়সি তুষার বন্দর উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়নের জিওধারা এলাকার প্রয়াত জামান মিয়ার ছেলে। ২০২০ সালের অক্টোবরে গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে তিনি কারাগারে ছিলেন।
তুষার ওই এলাকার সাংবাদিক ইলিয়াস হত্যা মামলার প্রধান আসামি ছিলেন। তার ছোট ভাই আহমেদ তুর্জয়ও একই মামলার আসামি।
জেল সুপার মোকাম্মেল হোসেন বলেন, “প্রতিদিন বিকালে সব কয়েদিকে তাদের কক্ষ থেকে বের করে বাইরে ঘোরাফেরা ও খেলার সুযোগ দেওয়া হয়। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঘণ্টা বাজলে সবাই ভেতরে চলে গেলেও তুষার যায়নি।
“খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে তাকে ভবনের ষষ্ঠতলায় ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। তাকে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার কিছুক্ষণ পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।”
তিনি বলেন, ছয়তলা ভবনটিতে বন্দিদের জন্য চতুর্থতলা পর্যন্ত থাকার ব্যবস্থা রয়েছে; তবে পঞ্চম ও ষষ্ঠতলায় যাওয়া নিষেধ। সেখানে চব্বিশ ঘণ্টা একজন প্রহরী থাকেন।
ঘটনার দিন তুষার সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে ষষ্ঠতলায় গিয়ে বিছানার চাদর ছিঁড়ে গলায় পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানান জেলা সুপার।
২০২০ সালের ১১ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলায় সাংবাদিক ইলিয়াসকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তুষারকে আটক করে পুলিশ। পরে ইলিয়াস হত্যা মামলায় তাকে প্রধান আসামি করে কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর থেকে তুষার জেলে ছিলেন।
জেল সুপার মোকাম্মেল বলেন, “তুষারের পরিবার নিম্ন ও উচ্চ আদালত থেকে তার জামিনের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। এ নিয়ে চিন্তিত ছিলেন তিনি। জেলের অন্য বন্দিদের সঙ্গে যোগাযোগ কমিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি কয়েক মাস ধরে তাকে নামাজ-কালাম পড়তে দেখা গেছে।
“অন্য বন্দিরা কখনও ধারণা করেনি যে, তুষার আত্মহত্যা করতে পারেন। জামিন না পাওয়ার হতাশা কিংবা বিচারে শাস্তি পাওয়ার ভয় থেকে তিনি আত্মহত্যা করতে পারেন।”
বন্দর থানার ওসি গোলাম মোস্তফা বলেন, কারা কর্তৃপক্ষ তুষারের মৃত্যুর বিষয়টি জানিয়েছে। মৃতের পরিবারের সদস্যদের খবর দেওয়া হয়েছে।
বুধবার বিকালে ময়নাতদন্তের পর আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান ওসি।