ভোট বন্ধের প্রতিবাদে গাইবান্ধার সাঘাটা ও ফুলছড়িতে বিক্ষোভও করেছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
Published : 12 Oct 2022, 09:17 PM
যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়াই নির্বাচন কমিশন গাইবান্ধা-৫ আসনের উপ-নির্বাচনের ভোট স্থগিত করেছে বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাহমুদ হাসান রিপন।
‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায়’ বুধবার দুপুরে ভোট স্থগিত করার পর বিকালে সংবাদ সম্মেলনে নৌকার প্রার্থী এই অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, “কোনো বাস্তবসম্মত যুক্তিগত কারণ ছাড়াই নির্বাচন কমিশন প্রথমে বেশ কিছু কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ স্থগিত করে। পরে বেলা আড়াইটার দিকে অজ্ঞাত কারণে নির্বাচন কমিশন পুরো আসনের ভোট গ্রহণ বন্ধ করে।”
“যা সাধারণ ভোটারদের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্তের আমি তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”
ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার মৃত্যুতে শূন্য হওয়া এ আসনে বুধবার সকাল ৮টা থেকে ১৪৫ কেন্দ্রে ইভিএমে ভোট গ্রহণ করছিল নির্বাচন কমিশন। সবগুলো কেন্দ্রের সিসি ক্যামেরা বসিয়ে ঢাকার নির্বাচন ভবনে স্থাপিত নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র থেকে সরাসরি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছিল কেন্দ্রের পরিস্থিতি।
গোপন কক্ষে অবৈধভাবে একাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, একজনের ভোট আরেকজন দিয়ে দেওয়াসহ বিভিন্ন ঘটনা সরাসরি দেখার পর বেলা ১টা পর্যন্ত কয়েক দফায় অর্ধশত কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়। অনেক কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরার ইন্টারনেট সংযোগও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।
পরে বেলা সোয়া ২টার দিকে ঢাকায় নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সামনে এসে প্রধান নির্বাচন কশিমনার কাজী হাবিবুল আউয়াল নির্বাচন বন্ধের ঘোষণা দিয়ে বলেন, “নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ায় আমরা পরিশেষে সিদ্ধান্ত নিয়েছি… সমগ্র নির্বাচনী এলাকা, গাইবান্ধা-৫ নির্বাচনী এলাকার ভোট কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছি। সে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হয়েছে (রিটার্নিং কর্মকর্তাকে)। ওখানে এখন আর ভোট হচ্ছে না।”
ভোট বন্ধের প্রতিবাদে এবং সিইসির শাস্তির দাবিতে সাঘাটা উপজেলার সাঘাটা-বোনারপাড়া সড়কের চৌমাথা মোড়ে অবস্থান নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভ হয়েছে ফুলছড়ি উপজেলাতেও।
এরপর বিকাল ৫টায় সাঘাটা উপজেলার বোনারপাড়া আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসেন নৌকার প্রার্থী মাহমুদ হাসনান রিপন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, “গাইবান্ধা-৫ আসনের উপ-নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সব প্রার্থী নির্বাচনী প্রচার চালিয়ে আসছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় আজ সকাল থেকে সাধারণ ভোটারা ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট প্রদান করে আসছিলেন।”
ভোট গ্রহণ চলাকালে কোথাও কোনো অপ্রতীকর ঘটনা ঘটেনি উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ প্রার্থী বলেন, “কোনো সংঘর্ষের ঘটনাও হয়নি। অথচও কোনো বাস্তবসম্মত যুক্তিগত কারণ ছাড়াই প্রথমে নির্বাচন কমিশন বেশ কিছু কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ স্থগিত করে। যা সাধারণ ভোটারদের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করে।”
রিপন আরও বলেন, “তারপরও আমরা নির্বাচন কমিশনের এই একতরফা সিদ্ধান্ত মেনে চলি। তারপর অজ্ঞাত কারণে বেলা আড়াইটার দিকে নির্বাচন কমিশন পুরো এলাকার ভোট বন্ধ করে দেয়। যা ভোটার ও সাধারণ জনগণকে বিস্মিত ও হতবাক এবং ক্ষুব্ধ ও মর্মাহত করেছে। তবুও বৃহত্তর স্বার্থে আমরা জনগণকে শান্ত করেছি।”
নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বলেন, “নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানাতে চাই, যে সব কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে; অবিলম্বে সেসব কেন্দ্রের ফলাফল ঘোষণা করা হোক।
“আর যেসব কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ স্থগিত ছিল সেসব কেন্দ্রের ভোট পুনরায় গ্রহণ করার জন্য আমি আহ্বান জানাচ্ছি।”
এদিকে প্রায় তিন লাখ ৪০ হাজার ভোটারের এ আসনের এমপি হতে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিলেন পাঁচজন প্রার্থী। তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছাড়া বাকিরা বেলা ১২টা বাজার আগেই একসঙ্গে সংবাদ সম্মেলন করে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন।
আরও পড়ুন: