বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে শুক্রবার বেলা ১২টা পর্যন্ত এই জেলায় ৩৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে
Published : 17 Nov 2023, 01:28 PM
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটে মাঝারি দমকা হাওয়ার সাথে টানা বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এই আবহাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। পণ্য ওঠানামার কাজ বন্ধ করে দিয়েছে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ।
বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের প্রভাবে বৃহস্পতিবার বিকাল থেকেই জেলায় গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়। পরে তা তার সঙ্গে দমকা হাওয়াও যুক্ত হয়।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে শুক্রবার বেলা ১২টা পর্যন্ত এই জেলায় ৩৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা আবহাওয়া অফিস।
শুক্রবার বেলা ১১টার পর দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় রাস্তাঘাটে প্রয়োজন ছাড়া সাধারণ মানুষ ঘর থেকে তেমন বের হচ্ছেন না। বাজারে অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। বৃষ্টিতে বেড়েছে শীতের তীব্রতাও।
বাগেরহাট শহরের রিকশাচালক মধু বালা, জাহাঙ্গীর হোসেনসহ একাধিক চালক বলেন, রাত থেকে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। তার মধ্যেই ভোরে রিকশা নিয়ে বের হয়েছি। কিন্তু শহরের রাস্তায় একেবারেই লোকজন না থাকায় রোজগার হচ্ছে না। তাই বাড়ি ফিরে যাচ্ছি।
তবে এই বৃষ্টিতে ধান ও শীতকালীন সবজির তেমন কোনো ক্ষতির সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন বাগেরহাট কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শংকর কুমার মজুমদার।
তিনি বলেন, বর্তমানে মাঠে রোপা আমন ধান ও শীতকালীন সবজি রয়েছে। আমন ধানে ফুল এসেছে। হালকা বৃষ্টিতে ধান ও শীতকালীন সবজির তেমন কোনো ক্ষতির সম্ভাবনা নেই। তবে অতিবৃষ্টি হলে এবং ওই পানি ফসলের মাঠে জমে থাকলে সবজির ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় সাধারণ মানুষকে আশ্রয় দিতে জেলার ৩৫৯টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে আশ্রয় নিতে পারবে দুই লাখ ৩৫ হাজার মানুষ।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহা. খালিদ হোসেন এই প্রতিবেদককে বলেন, কাল থেকে বৃষ্টি হচ্ছে। শুক্রবার সকাল থেকে দমকা হাওয়া ও ভারী বৃষ্টি হওয়ায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না।
তবে উপকূলীয় নদীতীরবর্তী এলাকার মানুষদের নিরাপদে সরিয়ে নিতে সেচ্ছাসেবকরা স্ব-স্ব এলাকায় মাইকিং করছে। চাল ও নগদ অর্থ মজুদ রয়েছে। জেলার সাইক্লোন শেল্টারগুলোও খুলে রাখা হয়েছে। সবার সহযোগিতা নিয়ে দুর্যোগ মোকাবেলা করা সম্ভব হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
এদিকে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ শাহীন মজিদ এই প্রতিবেদককে বলেন, বন্দরে বর্তমানে সিমেন্ট তৈরির কাঁচামাল ক্লিংকার, ইউরিয়া সারসহ মোট ১৭টি বিদেশি জাহাজ অবস্থান করছে। নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেওয়ায় বেলা ১১টার দিকে বন্দরে অবস্থান নেওয়া জাহাজগুলোতে পণ্য ওঠানামার কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে।
বন্দরের নিজস্ব সব ধরনের নৌযান নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলেও জানান বন্দরের এই কর্মকর্তা।
পুরানো খবর