প্রশাসন ও বিকেএমইএর নেতারা তিনদিনের মধ্যে শ্রমিকদের সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।
Published : 25 Dec 2023, 07:42 PM
‘অর্ডার কমে গেছে’ এমন নোটিশ টাঙিয়ে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার বিসিক শিল্পাঞ্চলের একটি রপ্তানিমুখী কারখানা লে-অফ ঘোষণা করা হয়েছে।
রোববার কারখানাটি লে-অফ ঘোষণার প্রতিবাদে সোমবার সকালে কয়েকশ শ্রমিক ঢাকা-মুন্সীগঞ্জ সড়কে বিক্ষোভ মিছিল করেন।
ক্রোনি গ্রুপের প্রতিষ্ঠান ‘ক্রোনি টেক্স সোয়েটার লিমিটেড’ নামে কারখানাটির লে-অফ নোটিশ ফটকে টানানো রয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, বর্তমানে বাংলাদেশসহ সারাবিশ্ব অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে এবং আমাদের কোম্পানির বায়ারগণ তাদের অর্ডার কমিয়ে দিয়েছেন। ফলে আমাদের কোম্পানির সোয়েটার বিভাগের কার্যক্রম সাময়িকভাবে পরিচালনা করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
“এমন অবস্থায় কারখানায় অর্ডার না থাকায় ও মালিকের নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত হওয়ার কারণে এবং নতুন কাজের অর্ডার না আসা পর্যন্ত, বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ধারা ১২ মোতাবেক কারখানা আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শ্রম আইনের ১২(৮) ধারা মোতাবেক ক্রোনি টেক্স সোয়েটার লিমিটেডের সোয়েটার বিভাগ লে-অফ ঘোষণা করা হলো।
সকল শ্রমিককে শ্রম আইন অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হবে বলেও উল্লেখ করা হয় নোটিশে।
তবে কারখানার শ্রমিকরা জানান, তাদেরকে বিনা নোটিশে কারখানাটি লে-অফ ঘোষণা করেছে মালিকপক্ষ। এতে কারখানাটির সোয়েটার বিভাগের অন্তত ৮০০ শ্রমিক চাকরি হারিয়েছেন।
মালিকপক্ষ ৭ ফেব্রুয়ারির কথা বললেও লে-অফের মেয়াদ আরও বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন তারা।
কারখানাটির শ্রমিক মোহাম্মদ বলেন, গত কয়েকমাস যাবৎ শ্রমিকদের বেতন নিয়ে গড়িমসি করছিলেন মালিকপক্ষ। বুধ ও বৃহস্পতিবার শ্রমিকদের বেতন দেওয়ার কথা থাকলেও সেদিন বেতন দেওয়া হয়নি। পরে রোববার যখন শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেন তখন বেতন দেওয়া হয়।
“আজকে কারখানায় গিয়ে দেখি সামনে লে-অফ নোটিশ ঝোলানো। কিন্তু আমাদের শ্রম আইন অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি”, বলেন এই শ্রমিক।
শ্রমিকদের মিছিলে নেতৃত্ব দেওয়া ইউনাইটেড ফেডারেশন অব গার্মেন্ট ওয়ার্কার্সের নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি শাহাদাত হোসেন সেন্টু বলেন, শ্রমিকরা মিছিল শেষে আলীগঞ্জ হাইস্কুল মাঠে জড়ো হন। তাদের দাবি, কারখানার লে-অফ ঘোষণার প্রত্যাখ্যান করতে হবে।
এরই মধ্যে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে প্রশাসন ও বিকেএমইএর নেতারা তিনদিনের মধ্যে শ্রমিকদের সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দেন। সমস্যার সমাধান না হলে শুক্রবার আবারও বিক্ষোভ করবেন শ্রমিকরা।
যোগাযোগ করা হলে শিল্প পুলিশ-৪ এর পরিদর্শক (ইনটেলিজেন্স) সেলিম বাদশা বলেন, “রোববার কারখানাটি লে-অফ ঘোষণা করে মালিকপক্ষ। এতে শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তর ও ব্যবসায়ী নেতারা এটি সমাধানের চেষ্টা করছেন। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সচেষ্ট আছি।”
তবে এ ব্যাপারে ক্রোনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এ এইচ আসলাম সানির মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।