পুলিশ জানায়, তাদের বিরুদ্ধে রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠানো হবে।
Published : 22 Nov 2023, 03:12 PM
বিএনপির সমাবেশ ঘিরে সংঘর্ষের মধ্যে পুলিশ কনস্টেবল আমিরুল হক পারভেজকে হত্যার ঘটনায় আত্মগোপনে থাকা বিএনপির চার নেতাকর্মীকে গাজীপুর থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বুধবার সকালে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার মো. ইব্রাহীম খান।
গ্রেপ্তাররা হলেন- ঢাকার শেরে বাংলা নগর থানা বিএনপির আমতলা ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক মো. বাবুল মিয়া (৪২), একই ইউনিটের সদস্য মো. ইমরান (২৪), মো. মনির হোসেন (২৮) ও বাদল দাস (৬০)।
উপ-কমিশনার ইব্রাহীম বলেন, গত ২৮ অক্টোবর ঢাকার পল্টন থানার সামনে বিএনপির সমাবেশ চলাকালে পুলিশ সদস্য পারভেজকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।
“হত্যায় জড়িত আসামিরা গাজীপুর মহানগর সদর থানা এলাকায় আত্মগোপন রয়েছে এমন খবর পেয়ে মঙ্গলবার রাতে অভিযান চালানো হয়।”
তিনি আরও বলেন, “এ সময় সদর থানার লক্ষীপুরা এলাকা থেকে আত্মগোপনকারী ইমরানকে গ্রেপ্তার করা হয়।
“পরে তার দেওয়া তথ্য মতে, ঘটনার সময়ে প্রাপ্ত ভিডিও ফুটেজ, ছবি এবং আসামির মোবাইল ফোন বিশ্লেষণ করে ওই ঘটনায় জড়িত থাকা বাবুল মিয়া, মনির হোসেন ও বাদল দাসকে গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।”
তাদের বিরুদ্ধে রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠানো হবে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
গাজীপুর মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার (এডিসি) (দক্ষিণ) মো. ফুজলুল করিম বলেন, “ওই মামলার এজহারে গ্রেপ্তারদের নাম উল্লেখ নেই। তবে ঘটনার দিনের ভিডিও ফুটিজে দেখে তাদের শনাক্ত করা হয়েছে। এবং তারা জিজ্ঞাসাবাদে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।”
তিনি আর বলেন, “ঘটনার দিন তারা যে জামা-কাপড় পড়ে ছিলেন সেগুলো তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।”
গত ২৮ অক্টোবর নয়া পল্টনে বিএনপির মহাসাবেশ চলাকালে কাকরাইলে পুলিশের সঙ্গে দলটির কর্মীদের সংঘর্ষ বাধে। পরে তা ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের এলাকায়। ওই সংঘর্ষের মধ্যে পুলিশ কনস্টেবল আমিরুল হক পারভেজকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।
এ ঘটনায় সেদিন রাতেই পল্টন থানায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ ১৬৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন গোয়েন্দা পুলিশের মিরপুর বিভাগের এসআই মাসুক মিয়া।
মামলার এজাহারে বলা হয়, বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে ২৮ অক্টোবর পল্টন থানার কালভার্ট রোডের পূর্বপ্রান্তে বাদীসহ অন্য পুলিশ সদস্যরা দায়িত্বরত ছিলেন। বেলা পৌনে ৩টার দিকে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ‘হাজার হাজার’ নেতাকর্মী তাদের উপর হামলা করে। ইটপাটকেলের আঘাতে এডিসি (ডিবি-ওয়ারী জোন) ইলিয়াছ হোসেন, কনস্টেবল আমিরুল হকসহ বেশ কয়েকজন পুলিশ আহত হন।
সেসময় আমিরুল হক ‘আত্মরক্ষার্থে’ ডিআর টাওয়ারে প্রবেশ করার চেষ্টা করলে বিএনপির নেতাকর্মীরা তাকে রাস্তার উপর ফেলে এলোপাতাড়ি ইট, লাঠি দিয়ে মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত করে। তাতে আমিরুল গুরুতর রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে থাকেন। তখন পুলিশ টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। আমিরুলকে পরে ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
আলোচিত এ মামলাটিতে আসামিদের মধ্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়াও মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, রুহুল কবির রিজভী, নিপুণ রায়, আমিনুল হক, হাবিবুন নবী খান, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, এস এম জিলানী, শামসুজ্জামান দুদু, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, তাবিথ আউয়াল, রফিকুল ইসলাম মাহাতাব, ইকবাল হোসেন শ্যামল, ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক, রাশেদ ইকবাল খান, সাইফ মাহমুদ জুয়েল, কাজী রওনাকুল হক শ্রাবণসহ বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের নাম রয়েছে।
আরও পড়ুন:
ছাত্রদল নেতা আমান পুলিশ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার
পুলিশ হত্যা মামলায় ছাত্রদল ও যুবদল নেতা গ্রেপ্তার
খসরু, স্বপন, দুদুসহ চার বিএনপি নেতা রিমান্ড শেষে কারাগারে
ছাত্রদল নেতা আমান পুলিশ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার
রাজধানীতে পুলিশ হত্যা: সুনামগঞ্জের যুবদল সভাপতি গ্রেপ্তার
পুলিশ হত্যা: আরেকজন ২ দিনের রিমান্ডে
পুলিশ হত্যা: গ্রেপ্তার দুজন ৭ দিনের রিমান্ডে