কুমিল্লায় বিএনপির সমাবেশের আশপাশে ইন্টারনেটে ধীর গতি

বেলা ১২টায় আনুষ্ঠানিকভাবে সমাবেশের কাজ শুরু হয়েছে।

আব্দুর রহমানকুমিল্লা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Nov 2022, 07:37 AM
Updated : 26 Nov 2022, 07:37 AM

কুমিল্লায় বিএনপির গণসমাবেশের আশপাশের এলাকায় ইন্টারনেটের ধীর গতির কারণে গ্রাহকরা ভোগান্তির অভিযোগ করেছেন।  

শনিবার সকাল থেকেই বিএনপির সমাবেশস্থল কুমিল্লা টাউন হল মাঠের আশপাশে ফোর-জি, থ্রি-জি নেটওয়ার্ক না পাওয়ার কথা জানান দলটির নেতাকর্মী ও স্থানীয়রা।

সকাল ৯টার আগ থেকেই নগরীর কান্দিরপাড়, ঝাউতলা, মুন্সেফবাড়ী, মনোহরপুর, নিউমার্কেট এলাকায় ইন্টারনেটের ধীর গতির কারণে সমাবেশ কাভার করতে আসা সংবাদকর্মীরাও ভোগান্তির মধ্যে পড়েন। অনেকে সমাবেশস্থল থেকে ভিডিও চিত্র পাঠাতে না পেরে বাসায় গিয়ে ব্রডব্যান্ড লাইন ব্যবহার করে কাজ সারছেন। 

এর আগে ফরিদপুর ও সিলেটে বিএনপির গণসমাবেশের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছিল।

একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালের জেলা প্রতিনিধি তৈয়বুর রহমান সোহেল বলেন, “সকাল থেকে টাউন হল মাঠ ও এর আশপাশে কোনো ফোর-জি ও থ্রি-জি নেটওয়ার্ক পাওয়া যাচ্ছে না। শুধু টু-জি নেটওয়ার্ক পাওয়া যাচ্ছে। মোবাইলে শুধু ফোন করা যাচ্ছে। আর কিছু করা যাচ্ছে না।

“আমি লাইভের চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু কাজ হয়নি। মোবাইলে যথেষ্ট ডাটা রয়েছে।”

কান্দিরপাড় এলাকার বাসিন্দা মহিউদ্দিন আকাশ বলেন, “আমরা সকাল থেকে এখানে ইন্টারনেটের ধীর গতি পাচ্ছি। নগরীর বিএনপির সমাবেশস্থল ও এর আশপাশেই শুধু এমন হচ্ছে। আমরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছি।” 

মিছিলের স্রোত কুমিল্লা টাউন হল মাঠমুখী

টাউন হল মাঠে আড্ডা-গানে রাত কাটলো বিএনপি নেতা-কর্মীদের

সমাবেশে আসা কয়েকজন বিএনপি নেতাকর্মী অভিযোগ করে বলেন, তারা সমাবেশস্থল থেকে নেতাদের ভাষণ মোবাইলের মাধ্যমে লাইভ করতে চেয়েছিলেন। যাতে সমাবেশে আসতে না পারা নেতাকর্মীরা শুনতে পারেন। কিন্তু অনেক চেষ্টা করেও তারা ব্যর্থ হয়েছেন। মোবাইলে শুধু কল করা যাচ্ছে। 

এ ব্যাপারে মোবাইল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের দুই কর্মকর্তা জানান, একটি টাওয়ারে সাধারণত যতটুকু ইন্টারনেট কাভার হয়, তার চেয়ে বেশি মোবাইল অ্যাকসেস হচ্ছে। তাই বাফারিং হচ্ছে।

তবে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাজি আমিনুর রশীদ ইয়াছিনের দাবি, এটি সরকারের নির্দেশেই হয়েছে। আগের সমাবেশেও এমন হয়েছে। এগুলো করে নেতা-কর্মীদের দমিয়ে রাখা যাবে না।

সমাবেশ শুরু, মঞ্চে কেন্দ্রীয় নেতারা

এদিকে নেতাকর্মীদের উৎসাহ আর উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে কুমিল্লা নগরীর টাউন হল মাঠে গণসমাবেশ শুরু হয়েছে। সকাল ১০টায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও দুপুর ১২টার দিকে এই সমাবেশ শুরু হয়। সমাবেশের শুরুতে পবিত্র কোরআন, গীতা ও ত্রিপিটক পাঠের পর বিএনপির দলীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়।

খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবি এবং নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদসহ নানা ইস্যুতে বিএনপির চলমান সাংগঠনিক বিভাগীয় সমাবেশগুলোর ধারাবাহিকতায় দলটি কুমিল্লা গণসমাবেশ করছে।

এরই মধ্যে মঞ্চে উপস্থিত হয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমিন উর রশিদ ইয়াছিন, সাংগঠনিক সম্পাদক (কুমিল্লা বিভাগ) মোস্তাক মিয়া।

বিএনপির নেতারা জানিয়েছেন, সমাবেশস্থলে উপস্থিত হয়েছেন বিএনপির অসংখ্য নেতা-কর্মী। অনেকেই এখনও পথে রয়েছেন। অন্য বিভাগীয় সমাবেশগুলোর মতো কুমিল্লাতেও ফাঁকা চেয়ার রাখা হয়েছে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জন্য।

সকাল ৯টা থেকেই একের পর এক মিছিল নিয়ে টাউন হল মাঠে প্রবেশ শুরু করেন দলের নেতাকর্মীরা। সকাল ১০টার দিকে টাউন হল মাঠ নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে প্রায় ভরে যেতে দেখা গেছে।

জেলা বিএনপির নেতারা জানান, কুমিল্লা দক্ষিণ, কুমিল্লা উত্তর ও মহানগর শাখা, চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির উদ্যোগে এ গণসমাবেশ হচ্ছে। এটি বিএনপির অষ্টম বিভাগীয় গণসমাবেশ। সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমিন উর রশিদ ইয়াছিন সমাবেশে সভাপতিত্ব করবেন।

বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া বলেন, দুপুর ১টায় মঞ্চে উঠবেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার আগে কেন্দ্রীয় অন্য নেতারা মঞ্চে এসে তাদের বক্তব্য দেবেন।

আরও পড়ুন:

কুমিল্লার সমাবেশের আগের দিনই পূর্ণ টাউন হল মাঠ

সমাবেশে এসে যুবদলকর্মী খুইয়েছেন মোবাইল-মানিব্যাগ

কুমিল্লার সমাবেশে আসার পথে বাধার অভিযোগ বিএনপির

বিএনপিকর্মীরা আগেভাগে কুমিল্লায়, নেতারা রেখেছেন থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা

কুমিল্লার সমাবেশ: পরিবহন ধর্মঘট নিয়ে ‘চিন্তামুক্ত’ বিএনপি

কুমিল্লায় বিএনপির সমাবেশ: মাঠে থাকবেন বহিষ্কৃত সাককুও