কুমিল্লার সমাবেশে আসার পথে বাধার অভিযোগ বিএনপির

শুক্রবার কুমিল্লা নগরীর একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলনে খন্দকার মোশাররফ হোসেন এই অভিযোগ করেন।

কুমিল্লা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Nov 2022, 11:10 AM
Updated : 25 Nov 2022, 11:10 AM

কুমিল্লায় বিএনপির গণসমাবেশে আশপাশের জেলা থেকে আসার পথে নেতাকর্মীদের বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।

সমাবেশের একদিন আগে শুক্রবার দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, “কুমিল্লা, চাঁদপুর ও ব্রাক্ষণবাড়িয়ার বিভিন্ন স্থানে দলের নেতাকর্মীদের পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হয়রানি এবং সমাবেশ সফল করতে আসার সময় বাধা দিচ্ছে।

“কুমিল্লার সমাবেশ যেন সফল না হয় সেজন্য নেতাকর্মীদের বাড়ি গিয়ে সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা হুমকি দিচ্ছে। পথে পথে নেতাকর্মীদের হয়রানি করা হচ্ছে।”

তবে হয়রানিকে উপক্ষো করে নেতাকর্মীরা সমাবেশে যোগ দিতে আসছেন উল্লেখ করে বিএনপি নেতা আরও বলেন, “এজন্য আমাদের দূরের নেতাকর্মীরা দুদিন আগেই কুমিল্লা চলে আসা শুরু করেন। সমাবেশের এখনও একদিন বাকি। তবে এরই মধ্যে কুমিল্লা নগরীতে লক্ষাধিক নেতাকর্মী চলে এসেছে সমাবেশ সফল করতে।”

“কুমিল্লায় শনিবার হবে স্মরণকালের সেরা সমাবেশ। কোনো অপশক্তি সমাবেশকে ব্যর্থ করতে পারবে না।“

শনিবার কুমিল্লা নগরীর টাউন হল মাঠে বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সেই সমাবেশের সবশেষ চিত্র তুলে ধরতেই শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে কুমিল্লা নগরীর একটি রেস্তোরাঁয় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে খন্দকার মোশাররফ হোসেন এসব কথা বলেন।

অন্য বিভাগে সমাবেশের সময় পরিবহন ধর্মঘট বিএনপিকে ‘বেকায়দায়’ ফেললেও কুমিল্লায় দেখা যাচ্ছে ভিন্ন চিত্র। নেতা-কর্মীদের মনে আশঙ্কা থাকলেও পরিবহন ধর্মঘটের কোনো আভাস পাওয়া যায়নি। গণসমাবেশকে ঘিরে এরই মধ্যে উজ্জীবিত হয়ে উঠেছেন নেতাকর্মীরা; ব্যাপক প্রচারণাও চালাচ্ছেন। পুরো নগরী সেজে উঠেছে বিএনপির ব্যানার-ফেস্টুনে।

বিএনপির ধারণা ছিলো, অন্যান্য বিভাগীয় গণসমাবেশের মতো কুমিল্লার সমাবেশও সরকার পরিবহন ধর্মঘট করাবে- এমনটি উল্লেখ করে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, “বিভাগীয় সমাবেশকে কেন্দ্র করে গোটা কুমিল্লা এখন উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়েছে। এতো বাধা-বিপত্তির পরও আগের সাতটি সমাবেশ ব্যাপক শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। কথা দিলাম, কুমিল্লার সমাবেশও শান্তিপূর্ণ হবে।”

রাজনীতির মাঠে আলোচিত শব্দ ‘খেলা হবে’ নিয়ে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, “আওয়ামী লীগের নেতা ও মন্ত্রীরা বলেন, ‘খেলা হবে’। তবে বিএনপি রাজনীতি করে জনগণের জন্য। আমরা খেলা করার জন্য রাজনীতি করি না। গত ১৪ বছরে আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে; আমরা সেই গণতন্ত্রকে পুনরুজ্জীবিত করতে কাজ করছি।”

তিনি আরও বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে মানুষ আজ দিশেহারা। সাধারণ মানুষজনের চাওয়া নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে ভোটে যাওয়া। এইসব অধিকার আদায়ে আমাদের গণসমাবেশের আয়োজন। আমাদের সমাবেশে সাধারণ মানুষ আওয়ামী লীগ সরকারকে লাল কার্ড দেখিয়েছে। যদি এই সরকার নিজ থেকে ক্ষমতা না ছেড়ে দেয় তাহলে জনগণ তাদেরকে টেনে-হিঁচড়ে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেবে।”

বিএনপি নেতা আরও বলেন, “খালেদা জিয়া এতিমের টাকা মারেননি, টাকা ব্যাংকে পড়ে আছে। বরং দুই কোটি টাকা আজ ১০ কোটি হয়েছে। তারেক রহমানকেও মিথ্যা অভিযোগে সাজা দেওয়া হয়েছে। ফরমায়েশি রায়ে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে সাজা দেওয়া হয়েছে। এ সরকার দিনের ভোট রাতে নিয়ে গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। তারা ব্যাংক লুট করেছে, ব্যাংকে ডলার নেই, এলসি খোলা যাচ্ছে না। কুমিল্লায় গণসমাবেশে এ অবৈধ সরকারকে লাল কার্ড দেখানো হবে ক্ষমতা ছাড়তে।”

সংবাদ সম্মেলনে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাজী আমিনুর রশীদ ইয়াছিন জানান, শনিবার গণসমাবেশে অংশ নেবেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা, কুমিল্লা উত্তর জেলা, কুমিল্লা মহানগর, চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ইউনিটের নেতাকর্মীরা। সকাল ১০টার পর সমাবেশের কার্যক্রম শুরু হবে। শেষ হবে বিকাল ৪টার মধ্যে।

এতে আরও বক্তব্য দেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, সাংগঠনিক সস্পাদক (কুমিল্লা বিভাগ) মোস্তাক মিয়া।

এ সময় কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব হাজী মো. জসিম উদ্দিন, কুমিল্লা মহানগর বিএনপি নেতা কাউসার জামান বাপ্পী, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক উৎবাতুল বারী আবু, সদস্য সচিব ইউসুফ মোল্লা টিপু, কুমিল্লা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সরওয়ার জাহান ভূঁইয়া দোলন।

আরও পড়ুন:

Also Read: বিএনপিকর্মীরা আগেভাগে কুমিল্লায়, নেতারা রেখেছেন থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা

Also Read: কুমিল্লার সমাবেশ: পরিবহন ধর্মঘট নিয়ে ‘চিন্তামুক্ত’ বিএনপি

Also Read: কুমিল্লায় বিএনপির সমাবেশ: মাঠে থাকবেন বহিষ্কৃত সাককুও