রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার তাহেরপুর পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু বক্কর মৃধা মুনসুর এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদকে দলীয় পদ থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
শনিবার দুপুরে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় তাদের অব্যহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
আবুল কালাম আজাদ তাহেরপুর পৌরসভার বর্তমান মেয়র। তিনি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
উপজেলার সোনাডাঙ্গা বালিকা বিদ্যালয়ের হল রুমে আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সংসদ সদস্য এনামুল হক। সভা উপস্থাপনা করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ গোলাম সারওয়ার আবুল।
অধ্যক্ষ গোলাম সারওয়ার আবুল বলেন, “সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে দলীয় পদ থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে দলীয় কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি অধ্যাপক কাউসার আলীকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক মাহাবুর রহমান বিপ্লবকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।”
“দলীয় পদ-পদবী ব্যবহার করে সংগঠনের কার্যক্রম ও নেতাদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন থেকে অপপ্রচার করে আসছিলেন মেয়র আবুল কালাম আজাদ। বিশেষ করে তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও রাজশহী-৪ আসনের সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভিন্ন সভা-সমাবেশে বক্তব্য দিয়েছেন।”
তিনি আরও বলেন, পৌরসভার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হওয়ার পরও তারা দলীয় কোনো সভায় উপস্থিত থাকতেন না। উপজেলা আওয়ামী লীগের সঙ্গে তারা সম্পর্ক না রেখে তাদের নিজস্ব রাজনীতির বলায় সৃষ্টি করেছেন। এতে দলের ভিতরে বিভেদ ও উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এ সব কারণে তাদের দলীয় পদ থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মেয়র অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ বলেন, “এলাকায় আমার জনপ্রিয়তা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেটি দেখে আমার সম্মানহানি করার জন্য দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।”
এতে দলীয় গঠনতন্ত্র অনুসরণ করা হয়নি বলে দাবি করেন মেয়র।
জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অনিল কুমার সরকার বলেন, “দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী পৌরসভা ইউনিট উপজেলা কমিটির অধীনে। সে ক্ষেত্রে তাদের অধীনের যে কোনো ইউনিটের ব্যাপারে তারা সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
“তবে সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য জেলা কমিটির কাছে সুপারিশ পাঠাতে হবে। জেলা কমিটি সেটি বিবেচনায় নিলে কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে সুপারিশ পাঠাবে। কেন্দ্রীয় কমিটি সেটি বাস্তবায়ন করবে।”
তিনি আরও বলেন, “বাগমারা উপজেলা কমিটি একটি পৌরসভা ইউনিটের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে তাদের দলীয় পদ থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে শুনেছি। তবে এখনও কোনো সুপারিশের চিঠি পাইনি। পেলে পরবর্তীতে পদক্ষেপ নেব।”
বাঘমারা উপজেলা কমিটির সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন উপজেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও ভবানীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আব্দুল মালেক মণ্ডল, সহসভাপতি মতিউর রহমান টুকু, সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ কুমার প্রতীক দাশ রানা, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক হারুন অর রশিদ, দপ্তর সম্পাদক নূরুল ইসলাম, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল হাকিম প্রামাণিক, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক জাহানারা বেগম, ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক আশিকুর রহমান সজল।