উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জানান, জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কিছুটা ব্যস্ত থাকায় শীত বস্ত্র বিতরণ একটু কম হয়েছে। এখন আবার শুরু করেছেন।
Published : 12 Jan 2024, 11:08 AM
কয়েকদিন ধরে কুয়াশায় দিনভর সূর্যের দেখা তেমন একটা মিলছে না মাদারীপুরে। সন্ধ্যার পরেই নেমে আসছে তাপমাত্রার পারদ। তীব্র শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন।
কনকনে ঠান্ডায় বেশি বিপাকে পড়েছেন নিম্নআয়ের শ্রমজীবি মানুষেরা। শীত উপেক্ষা করেই তাদের বের হতে হচ্ছে কাজের খোঁজে। তাদের আক্ষেপ শীতবস্ত্র সহায়তা পেলে শীত মোকাবেলা করা সহজ হত, কিন্তু প্রতি সেই সহায়তার হাত কেউ বাড়ায়নি।
জেলায় কম্বল বিতরণে কার্যক্রম চলছে কিন্তু চাহিদার তুলনায় তা অপ্রতুল বলে স্বীকার করছে জেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কার্যালয়ও।
মাদারীপুর সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মশিউর রহমান জানান, জেলার ৫৯টি ইউনিয়নে ৬০০টি করে কম্বল বিতরণের কার্যক্রম চলছে। যা চাহিদার চেয়ে অনেক কম।
এদিকে সরেজমিনে দেখা গেছে, মাদারীপুর সদরে কুয়াশার কারণে দিনের বেলাতেও সড়কে লাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল করছে।
এর মধ্যেই উপজেলার ঘটমাঝি ইউনিয়নের গৈদি বিল এলাকায় একটি বোরো ধানের জমি প্রস্তুত করছেন দীপ্তি বৈদ্য।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বললেন, “খুব ঠান্ডা পড়ছে। সাথে বাতাসও হইতেছে। ঠান্ডায় জমিতে টেকা যায় না। কিন্তু কী করমু। কাজ তো করতেই হবে।”
পাশের আরেকটি জমিতে কাজ করছেন ৫৫ বছর বয়সী কৃষক রাসমোহন বালা।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এই শীতের মধ্যেই কাজে নেমে পড়ছি। কাজ না করলে সংসার চলে না। এত শীত চলে কিন্তু কই আমাগো তো সরকারের কাছ থেকে কোনো কম্বল পাইলাম না।
“কোনো সোয়েটারও কেউ দিল না। আমি কেন? আমাগো পুরা এলাকায় একটা কম্বলও কাউকে সরকার দেয় নাই। শুনিও নাই কেউ পাইছে কি না।”
শহরের ইউনাইডেট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থী দুর্জয় কর্মকার।
শীতের মধ্যেই খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার পথে দুর্জয় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলল, “শীত হইলেও কিছু করার নাই। আর কয়েকদিন পরেই আমাদের পরীক্ষা। তবে কয়েকদিন ধরে বেশি শীত পড়ছে। লেপের ভেতর থেকে বের হতে মন চায় না।”
মাদারীপুর সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মশিউর রহমান বলেন, “সরকারিভাবে সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় নিয়মিতভাবে আমাদের অফিসের উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ চলছে। প্রতিটি ইউনিয়নে ইতোমধ্যে ছয়শ পরিবারকে আমরা শীতবস্ত্র বিতরণ করেছি।
তিনি জানান, “বরাদ্দ পেলে আরও বিতরণ করা হবে। তবে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কিছুটা ব্যস্ত থাকায় শীত বস্ত্র বিতরণ একটু কম হয়েছে। এখন আবার শুরু করেছি।”
মাদারীপুরের সহকারী আবহাওয়া কর্মকর্তা আবদুর রহিম বলেন, “মাদারীপুর জেলায় গত কয়েকদিন ধরে ১১ থেকে ১৩ ড্রিগ্রির মধ্যে ওঠানামা করছে। সবশেষ গত ২৪ ঘণ্টায় ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
“শুক্রবার কুয়াশার পরিমাণ চেয়ে কিছুটা কম। তবে ঠাণ্ডার সঙ্গে জেলাজুড়ে হিমেল বাতাস বইতে থাকায় শীত কিছুটা বেশি অনুভুত হচ্ছে। এই ধরনের আবহাওয়া আরও কিছুদিন থাকবে।”