পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের বাড়িঘর ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা, অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে মানবিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
বুধবার দুপুরে আহমদনগরের আহমদিয়া সালানা জলসা মাঠে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধি হিসেবে পঞ্চগড়-২ আসনের সংসদ সদস্য ও রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন ক্ষতিগ্রস্ত ২০৬টি পরিবারের মধ্যে এক কোটি টাকারও বেশি সহায়তা বিতরণ করেন।
ক্ষতিগ্রস্তরা সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ ২৬ হাজার টাকা থেকে সর্বনিম্ন চার হাজার ৮০০ টাকা পেয়েছেন। শহরের ‘খেলাঘর’ দোকানের স্বত্ত্বাধিকারী নাছের বাবু সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ ২৬ হাজার ৩৬৬ টাকার সহায়তা পেয়েছেন।
পরে এক প্রতিক্রিয়ায় নাছের বাবু বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর এ সহায়তা আমাদের সবারই অনেক কাজে লাগবে। এখন কিছুটা হলেও উঠে দাঁড়াতে পারব।”
৩ মার্চ থেকে তিন দিনব্যাপী আহমদিয়া সম্প্রদায় সালানা জলসার আয়োজন করে। এই জলসা বন্ধ ও আহমদিয়াদের অমুসলিম ঘোষণার দাবিতে আগেরদিন থেকে পঞ্চগড় শহরে মিছিল ও সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে বিক্ষুব্ধরা।
এরই ধারাবাহিকতায় ৩ মার্চ জুমার নামাজের পর শহরে বড় মিছিল হয়। এ সময় মিছিলকারীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ট্রাফিক পুলিশের স্টেশন, পঞ্চগড় বাজার মার্কেটে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের লোকজনের দোকানপাট ভাঙচুর এবং বিকালে আহমদিয়াদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, “নির্বাচন এলে ধর্মকে ব্যবহার করে সরকারের বিরুদ্ধে প্রপাগান্ডা চালিয়ে সরকারকে বিপদে ফেলার চেষ্টা করা হয়। এর আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে একই কাজ করা হয়েছে। এসব কাজে বিএনপি ও জামায়াত প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকে। তারা নানা ইস্যু তৈরি করে দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়।
তিনি বলেন, প্রশাসন তৎপর ছিল বলে ক্ষতির পরিমাণ কম হয়েছে। অযথা কাউকে হয়রানি করা হচ্ছে না। এ ঘটনায় জড়িতদের শনাক্তে প্রশাসনকে সহায়তা করতে আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নাঈমুজ্জামান মুক্তা বলেন, “প্রশাসনের কৌশলী তৎপরতায় ক্ষয়ক্ষতি কম হয়েছে। এরপরও অনেকেই সর্বশেষ সম্বলটুকু হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন। মানবিক প্রধানমন্ত্রী এজন্যই ক্ষতিগ্রস্ত, নিঃস্বদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তিনি আগামীতেও তাদের পাশে থাকবেন বলে আমাদের বিশ্বাস।”
জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে পঞ্চগড়-১ আসনের সংসদ সদস্য মো. মজাহারুল হক প্রধান, আহমদিয়া সম্প্রদায়ের জামিয়া আহমদিয়ার অধ্যক্ষ মোবাশ্বের উর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত, সহসভাপতি আবু তোয়বুর রহমান বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন: