পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের সালানা জলসা ঘিরে সংঘর্ষ ও হামলায় উসকানি দেওয়ার অভিযোগ ইসলামী ছাত্র শিবিরের স্থানীয় এক নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
বুধবার বিকালে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার এস এম সিরাজুল হুদা জানান।
গ্রেপ্তার নাছির উদ্দিন (৩০) তেতুলিয়া উপজেলা ছাত্র শিবিরের সভাপতি এবং তেতুলিয়ার মাঝিপাড়া কুমারটোলের ফজলুল হকের ছেলে।
গত শুক্রবার থেকে রোববার তিন দিনব্যাপী আহমদিয়া সম্প্রদায়ের সালানা জলসা আয়োজন নিয়ে পঞ্চগড় শহর উত্তপ্ত হয়। তাদের জলসা বন্ধ ও আহমদিয়াদের অমুসলিম ঘোষণার দাবিতে বৃহস্পতিবার থেকে পঞ্চগড় শহরে মিছিল ও সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করে একদল লোক।
এর ধারাবাহিকতায় শুক্রবার জুমার নামাজের পর শহরে বড় মিছিল হয়। মিছিলকারীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ট্রাফিক পুলিশের স্টেশন, পঞ্চগড় বাজার মার্কেটে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের লোকজনের দোকানপাট ভাঙচুর এবং বিকালে আহমদিয়াদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষের মধ্যে শহরের মসজিদ পাড়া মহল্লার ফরমান আলীর ছেলে আরিফুর রহমান এবং আহমদিয়া সম্প্রদায়ের জাহিদ হাসান নিহত হন বলে পুলিশ জানায়।
পরদিন [শনিবার] রাতে দুজনকে আহমদিয়ারা গলা কেটে হত্যা করেছে – এমন গুজবে ফের পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় স্থানীয় বিক্ষুদ্ধ জনতা। এ সময় দুটি দোকান ভাঙচুর করে মালামাল লুটপাট এবং একটি মাইক্রোবাসে আগুন দেওয়া হয়।
এই ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার শুরু হলে শহরজুড়ে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
পুলিশ সুপার এস এম সিরাজুল হুদা বলেন, ঘটনার ‘উসকানিদাতা’ ও ‘মাস্টারমাইন্ড’ হিসেবে বুধবার বিকালে তেতুলিয়া উপজেলা ছাত্র শিবিরের সভাপতি নাছির উদ্দিনকে যৌথবাহিনী গ্রেপ্তার করেছে।
এর আগে দেবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক এবং সোনাহার ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রহিমুল ইসলাম বুলবুলকে ‘গুজব ছড়ানোর’ মামলায় গ্রেপ্তার করা হয় বলে তিনি জানান।
এসপি সিরাজুল হুদা আরও জানান, এই ঘটনায় মোট ১৩টি মামলায় প্রায় ১১ হাজার আসামি হলেও ১৩৬ জনকে যৌথবাহিনী গ্রেপ্তার করেছে।
“তাদের মধ্যে ঘটনার মাস্টারমাইন্ড শিবির নেতা নাছির উদ্দিন ও গুজব সৃষ্টিকারী বিএনপি নেতা বুলবুলও রয়েছেন।”
যৌথবাহিনীর তৎপরতায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে জীবনযাত্রা স্বাভাবিক হয়েছে; এরপরও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে যৌথবাহিনী সতর্ক রয়েছে বলে তিনি জানান।
আরও পড়ুন: