বেসরকারি পর্যায়ে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম কলেজসহ বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও শিক্ষার্থীদের গাদাগাদি করে বসিয়ে ক্লাস নিতে দেখা গেছে।
Published : 21 Apr 2024, 07:13 PM
প্রচণ্ড দাবদাহে সারাদেশের স্কুল-কলেজগুলো যখন বন্ধ রাখা হয়েছে তখন ময়মনসিংহে চলছে রমরমা কোচিং বাণিজ্য।
এতে শিক্ষার্থীরা অস্বস্তি প্রকাশ করলেও কোচিং সেন্টারগুলোর শিক্ষক ও অভিভাবকদের চাপে তারা ক্লাসে আসতে বাধ্য হচ্ছে।
তীব্র গরমে কোচিং খোলা রেখে শিক্ষার্থীদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেওয়ায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন ময়মনসিংহের শিক্ষা কর্মকর্তারা।
এদিকে, গত কয়েকদিন ধরে আবহাওয়া অফিস ময়মনসিংহে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা প্রায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করছে।
এ পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে সারাদেশের স্কুল-কলেজ সাত দিনের জন্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত দেয় সরকার।
তবে রোববার সকালে ময়মনসিংহ নগরীর বাউন্ডারি রোড, নাহা রোড, কলেজ রোড, জিলা স্কুল রোডসহ বেশ কয়েকটি এলাকার প্রায় চার শতাধিক কোচিং সেন্টার চালু থাকতে দেখা গেছে।
বেসরকারি পর্যায়ে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম কলেজসহ বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও শিক্ষার্থীদের গাদাগাদি করে বসিয়ে ক্লাস নিতে দেখা গেছে।
যদিও শিক্ষার্থীদের অভিমত, গরমের মধ্যে সরকারি স্কুল-কলেজের মত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখলেই তাদের জন্য ভালো।
সজীব স্যারের গণিত প্রাইভেট প্রোগ্রামের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী অনুপম রায়ের ভাষ্য, “কোচিং সেন্টারে গাদাগাদি করে বসে ক্লাস করতে কিছুটা কষ্ট হয়। এই গরমে বাসা থেকে বের হতেই মন চায় না। স্যারেরা যদি কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখত, তাহলে ভালো হত।”
কোচিং সেন্টারটির নবম শ্রেণির আরেক শিক্ষার্থী আফিয়া জান্নাতের ভাষ্য, “স্কুলে নিয়মিত ক্লাস হয় না; এখন কোচিংয়ে না এলে পড়া কীভাবে হবে। স্কুল খুললেই তো আবার পরীক্ষা। যদিও প্রচণ্ড রোদের মধ্যে কোচিংয়ে আসতে আমাদের কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তারপরও আশা করছি, আল্লাহর রহমতে কিছু হবে না।”
রাকিবুল ইসলাম নামে এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক বলেন, “বছরের ছয়মাস বিভিন্ন কারণে স্কুল বন্ধ থাকে। শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট ও কোচিংয়ের ওপর নির্ভর করেই পড়াশোনা করতে হচ্ছে।”
দেশব্যাপী প্রচণ্ড গরমে সরকারের স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত অত্যন্ত যৌক্তিক দাবি করে রাকিবুল ইসলাম আরও বলেন, “সরকার থেকে যদি কোনো নির্দেশনা আসে; তাহলে শিক্ষকরা হয়ত কোচিংও বন্ধ রাখবেন।”
‘সজীব স্যারের গণিত প্রাইভেট প্রোগ্রামের’ শিক্ষক সজীব আহম্মেদ বলেন, “হঠাৎ করেই স্কুল বন্ধ হওয়ার বিষয়টি জানা নেই। সব শিক্ষকরাই কোচিং চালাচ্ছেন; তারা যদি বন্ধ করে দেন তাহলে আমিও বন্ধ করে দেব। যদিও গরমের জন্য ক্লাসে অতিরিক্ত ফ্যান লাগানো হয়েছে।”
ময়মনসিংহে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম কলেজের অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম বলেন, “দুই মাস পর এইচএসসি পরীক্ষা। তাই তাদের স্পেশাল ক্লাসের পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। যদি সমস্যা মনে করি, তাহলে তাও বন্ধ করে দিব। এ বিষয়ে সব শিক্ষকরা বসে সিদ্ধান্ত নেব।”
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা ময়মনসিংহ অঞ্চলের পরিচালক অধ্যাপক আজহারুল ইসলাম বলেন, “শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি নজরে নিয়ে এবং সরকারের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে শিক্ষকদের উচিত সকল কোচিং প্রোগ্রাম বন্ধ রাখা।”
তিনি বলেন, “অভিযোগ পেয়ে বেশ কয়েকজনের সাথে যোগাযোগ করে কোচিং পরিচালনার সত্যতা পাওয়া গেছে। আমরা এ বিষয়ে অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।”