১৯৭১ সালের ২৬ এপ্রিল সকালে পাকিস্তানি হানাদাররা অতর্কিত বিমান হামলা চালায় পটুয়াখালী শহরের কালিকাপুর এলাকায়। এতে নারী-পুরুষসহ ১৯ জন শহীদ হন।
Published : 06 Mar 2024, 08:21 AM
দীর্ঘ আট মাস অবরুদ্ধ থাকার পর ১৯৭১ সালের ৮ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদারদের দখলমুক্ত হয় পটুয়াখালী জেলা। সেদিন সকালে মুক্তিযোদ্ধারা ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে স্বাধীন বাংলার লাল সবুজের পতাকা উত্তোলন করেছিলেন শহরের শহীদ আলাউদ্দিন শিশু পার্কে।
এ যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার নূরুল ইসলাম ধলা। তার কাছে যুদ্ধদিনের গল্প শুনেছে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।
১৯৭১ সালের ১৮ নভেম্বর সকাল থেকে শুরু হয় সম্মুখ যুদ্ধ; এদিন পাকিস্তানি বাহিনী প্রথমে দ্বিমুখী, পরে ত্রিমুখী আক্রমণ চালায়। যুদ্ধ চলাকালীন পটুয়াখালী শহরের চরপাড়া এলাকার সহযোদ্ধা রবীন্দ্র নাথ হালদার খোকন গুলিতে আহত হন।
ধলা বলেন, “খোকন আহত হওয়ায় আমাদের মধ্যে বেঁচে থাকার আশঙ্কা দেখা দেয়। কিন্তু আমরাও থেমে থাকিনি; যুদ্ধ চালিয়ে গেছি। প্রশিক্ষিত একটি বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করে বেঁচে ফেরার কোনো আশাই ছিল না। তবে গলাচিপা থানা কমান্ডার কে এম নুরুল হুদা ভাই (সাবেক সিইসি) ও ডেপুটি কমান্ডার হাবিবুর রহমান শওকত ভাইয়ের কৌশল ও সাহসিকতায় আমরা যুদ্ধে গতি পাই।
“মাত্র একটি মেশিনগান দিয়ে অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করা মুশকিল ছিল, তারপরও আমরা হাল ছাড়িনি। সেদিন টানা ১২ ঘণ্টা যুদ্ধ শেষে পিছু হটতে শুরু করে পাকিস্তানিরা। পরে গলাচিপার আগুনমুখা নদী দিয়ে পালিয়ে যায় বাহিনীর মেজর ইয়ামিন ও তার সৈন্যরা।”
যুদ্ধের প্রস্তুতি
বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের পরই যুদ্ধের দামামা বেজেছিল এবং তখন থেকেই তারা প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন বলে জানান গলাচিপা উপজেলা সংসদের সাবেক এই কমান্ডার। বলেন, “গলাচিপায় এম এ রব মিয়া, আব্দুল বারেক মিয়া এমপি, মো. নুরু মিয়া ও গোলাম মোস্তাফা টিটোসহ আমরা কয়েকজন মিলে মিটিং করি, যুদ্ধ করার জন্য। সেখানে সিদ্ধান্ত হয় যে, মুক্তিযোদ্ধাদের এনে এ এলাকা থেকে রাজাকার ও শান্তি কমিটিমুক্ত করব। কিন্তু আমাদের কোনো ট্রেনিং ও অস্ত্র ছিল না।
“প্রথম দিকে ইপিআর (ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস) সদস্য ওস্তাদ সালাম ও রাজ্জাকসহ অনেকে বাঁশের লাঠি দিয়ে ৩০-৪০ জন ছাত্রকে ট্রেনিং করান। তখন সংগ্রাম পরিষদের নেতা এম এ রব মিয়া ও আব্দুল বারেক মিয়া গলাচিপা থানা থেকে গুলি ছাড়া রাইফেল এনে আমাদের ট্রেনিং করান। আমরা নিজেদের দক্ষতা বাড়াতে ইন্ডিয়ায় ট্রেনিং করার পথ খুঁজতে থাকি।
পরে ক্যাপ্টেন মেহেদী পটুয়াখালী ও গলাচিপা মিলে একটি জোন তৈরি করেন। কে এম নুরুল হুদা ভাইকে গ্রুপ কমান্ডার ও হাবিবুর রহমান শওকত ভাইকে ডেপুটি কমান্ডার করে ৪০ জনের এক প্লাটুন মুক্তিবাহিনী গঠন করা হয় বলে জানান ধলা।
সম্মুখ যুদ্ধের আগের পরিস্থিতি
ধলা বলেন, “আমরা কয়েকজন মিলে সুন্দরবন থেকে ভারতে যাওয়ার প্রস্তুতি নেই। তখন মেজর জিয়াউদ্দিন আহমেদের (বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং ৯ নম্বর সেক্টরের সুন্দরবন সাবসেক্টর কমান্ডার) বড় বোন আমার কাছে একটি চিঠি দিয়ে বলেছিলেন, ‘এই চিঠিটা ওরে দিস’। সেই চিঠি নিয়ে আমরা সুন্দরবন গেলেও জিয়াউদ্দিন সাহেবের দেখা পাইনি; তিনি আগেই ভারতে চলে গেছেন। আমরা দুপুরে দেখি, চার-পাঁচটি নৌকায় লোক উঠানো হচ্ছে ভারতে নিয়ে যাওয়ার জন্য।
“তখন আমরা চারজন চিন্তা করলাম, জিয়াউদ্দিন সাহেবকে পাইলাম না এখান থেকে বাড়িতে ফিরে কী হবে, আমরা ভারতেই চলে যাই। পরে আমার চারজন ওই নৌকায় উঠে ভারতের হাসনাবাদ আমতলা ক্যাম্পে গিয়ে সেখানে ভর্তি হই। কিন্তু সেখানে পটুয়াখালী ও গলাচিপার লোক কম ছিল। তাই আমি ওখান থেকে গলাচিপার পানপট্টি ইউনিয়নে রব সাহেবের বাড়িতে ফিরে আসি। চিন্তা ছিল, আরও কিছু ছেলেপেলে নিয়ে ভারতে যাব ট্রেনিং করতে। কারণ বেশি লোক না হলে তো, যুদ্ধ করা যাবে না।”
নুরুল হুদার সঙ্গে এম এ রব মিয়ার সাক্ষাৎ
সাবেক কমান্ডার নূরুল ইসলাম ধলা বলেন, “ভারতে ট্রেনিং করতে যাওয়ার চিন্তার মাঝেই এক সকালে, হুদা ভাইসহ দুই মুক্তিযোদ্ধা চাদর মুড়ি দিয়ে এসে আমাকে রব সাহেবের বাড়ি কোনটা জিজ্ঞাসা করেন। আমি দেখিয়ে দিলে হুদা ভাই রর সাহেব কোথায় যানতে চান। আমি বললাম, ‘ঘরের ভেতরে’। উনারা চাদর মুড়ি দেওয়া থাকলেও চাদরের ফাঁক দিয়ে স্টেনগানের মাথাটা ঠিকই দেখতে পাই। তখন আমি ওনাদের সঙ্গে সঙ্গে ঘরে ঢুকি। হুদা ভাই রব সাহেবকে বলেন, ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধা, আমরা আপনার এলাকায় আসছি, আপনি তো এলাকার সংগ্রাম কমিটির প্রধান। আপনার এলাকায় কোথায় কী করতে হবে বলেন’।
“এ কথা শুনে রব সাহেব খুবই উৎফুল্ল হয়ে পড়েন এবং জিজ্ঞাসা করলেন, আর লোকজন কোথায়? উত্তরে হুদা ভাই বললেন, লোকজন নৌকায় নদীতে আছে। তখন রব সাহেব বললেন, ওনাদের নিয়ে আসেন। আমাদের এখানে সাইক্লেন শেল্টার সেন্টার আছে, ওনাদের নিয়ে ওখানেই থাকবেন।”
“রব সাহেব আমাকে বললেন, এখন আর ভারতে গিয়ে কোনো লাভ নেই। হুদা ভাইকে বললেন, আপনাদের পেয়ে গেছি; এখন আমরা এলাকায় থাকব। নুরুল হুদা ভাইরা ছিলেন ১৬ জন, আমি মিলে ১৭ জন হয়। পরে ওনাদের সঙ্গে পানপট্টি ক্যাম্পে চলে যাই।”
“রাতেই এলাকার এক চৌকিদারকে দিয়ে পানপট্টি থানায় খবর পাঠানো হয়। ওসিকে চৌকিদার বলেন, স্যার মুক্তিযোদ্ধারা বেশ শক্তিশালী তাদের কাছে ভারি ভারি অস্ত্র আছে, আপনাদের সারেন্ডার করতে বলে। ওসি সাহেব বলেন, এভাবে তো হয় না পাকিস্তানি সৈন্যরা এসে পড়লে আমাদের কৈফিয়ত দিতে হবে। তুমি একটা কাজ কর, তাদের বল থানার কাছে এসে কয়েকটা ফায়ার করতে। আমরা বলব থানা দখলে নিয়ে গেছে। কিন্তু সেদিন থানা ঘেরাও করেও ফল পাইনি।”
১৮ নভেম্বর ভোর
এদিন ভোরে পানপট্টির গেদু মুসুল্লি তার ক্ষেতে চাষ করতে গিয়ে বারকানিয়া বাড়ির কাছে পাকিস্তানি সৈন্যদের জড়ো হতে দেখেন। পরে তিনি পানপট্টির মাঝি বাড়ির হারুন আর আলমকে দিয়ে ক্যাম্পে খবর পাঠান।
ধলা বলেন, “তারা দুইজন হন্তদন্ত হয়ে এসে আমাদের খবর দেয়। এ সময় বাঁশি বাজিয়ে আমাদের জাগানো হয় এবং সংক্ষিপ্ত ব্রিফিং শেষে আমরা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হই। আমাদের পানপট্টি ক্যাম্পের পশ্চিম ও উত্তর দিক থেকে পাকিস্তানি বাহিনী আক্রমণের জন্য এগিয়ে আসে, আমরাও মোকাবেলা করার জন্য প্রস্তুত হই। আমাদের সবচেয়ে বেশি ঝুঁকি ছিল উত্তর ও পশ্চিম দিকে। আমাদের ক্যাম্পে বরিশালের জাহাঙ্গীর নামের এক যোদ্ধা মেশিনগান চালাত। নুরুল হুদা ভাই তাকে বিভিন্ন দিক থেকে মেশিনগানের গুলি করার জন্য নির্দেশ দিলেন।
“আমরা তখন পশ্চিম দিকে খেজুরগাছিয়া খালের পূর্ব পাশে আড়াল হয়ে অবস্থান নেই। উত্তর দিক থেকে খাল দিয়ে আমাদের ক্যাম্পে আসতে হলে একটি ছোট বাঁশের সাঁকো পার হতে হত। পাকিস্তানি বাহিনী সেই সাঁকো পার হতে গিয়ে আক্রমণের মুখে পড়ে। কিন্তু তারা জড়ো হয়ে আবার পশ্চিম দিক দিয়ে আসা শুরু করে। ছোট খালের দুই পাড়ে দুই গ্রুপ অবস্থান নেয়। পূর্ব পাশে আমরা মুক্তিবাহিনী আর পশ্চিম দিকে শত্রুপক্ষ।”
শুরু হয় গোলাগুলি
তুমুল গোলাগুলির সঙ্গে গালাগালিও চলছে। দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা গোলাগুলির পর তিনজন রাজাকারের লাশ পাওয়া যায়। ৫ থেকে ৬ জন পাকিস্তানি সেনা আহত হয়। প্রতিরোধের মুখে তারা পানপট্টি ক্যাম্পের দক্ষিণ দিকের একটি খালি (তালুকদারের ভিটা) বাড়িতে মর্টার বসায়।
পাকিস্তানি বাহিনী বৃষ্টির মতো মর্টার চার্জ করছিল জানিয়ে ধলা বলেন, “মর্টারের ফায়ারে আমাদের সহযোদ্ধা রবীন্দ্র নাথ হালদার খোকন ধান ক্ষেতের মধ্যে আহত হন। তখন আমরাও তওবা পড়ে মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত হই। কিন্তু আমাদের ভাগ্য সহায় ছিল। ক্যাম্পের কাছে প্রচুর নারিকেল ও ছৈলা গাছ থাকায় মর্টার লক্ষ্যভেদ করতে পারেনি। এদিকে আত্মরক্ষায় আমরাও তুমুল বেগে গুলি করতে থাকি। বিকালের দিকে হঠাৎ করে পাকিস্তানি বাহিনীর মেজর ইয়ামিন পালিয়ে যায়। তাকে চলে যেতে দেখে রাজাকারেরাও পালিয়ে যায়। কিন্তু পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বড় একটি অংশ যুদ্ধ চালিয়ে যেতে থাকে।
“ওরা আবার সংঘটিত হয়ে ক্যাম্পের দক্ষিণ পশ্চিম ও উত্তর দিক থেকে আক্রমণ চালায়। তিন দিক দিয়ে আমাদের উপর আক্রমণ করতে থাকে। সন্ধ্যা হলে এলাকার লোকজনের দেওয়া খাবার খাই। কিন্তু সন্ধ্যা পেরিয়ে গেলেও তাদের গুলি থামছিল না। এক পর্যায়ে সন্ধ্যা ৭টার দিকে পাকিস্তানিরা পানপট্টি থেকে পালিয়ে যায়। পরে ২৪ নভেম্বর খবর পাই, গলাচিপা থানা ছেড়ে সবাই পালিয়ে গেছে। ২৫ নভেম্বর থানা দখল করে অস্ত্র নিয়ে নেই এবং থানাতেই আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্প তৈরি করি; মুক্ত হয় গলাচিপা থানা।”
সর্বপ্রথম হামলা হয়েছিল পটুয়াখালীতে
পটুয়াখালী জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক সহকারী কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মজিদ হাওলাদার বলেন, সবার প্রথমে ১৯৭১ সালের ২৬ এপ্রিল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পাকিস্তানি হানাদাররা অতর্কিত বিমান হামলা চালায় শহরের কালিকাপুর এলাকায়। এতে মাতবর বাড়ির ১৬ জন নারী-পুরুষ ও শিশুসহ ১৯ জন সাধারণ মানুষ শহীদ হন।
পরে সেনা নেমে ওই এলাকায় নির্বিচারে গণহত্যা চালায়। জেলা প্রশাসকের বাংলোর দক্ষিণ পাশে সাতজন আনসার সদস্যকে গুলি করে হত্যার পর শহরে ঢুকে পড়ে তারা; পরে অবস্থান নেয় সার্কিট হাউসে। সেখানেই মূলত মানুষকে তুলে নিয়ে নির্যাতন-নিপীড়ন চালানো হতো। অত্যাচার চলত মা-বোনদের উপর।
এসব তথ্য জানিয়ে মুক্তিযোদ্ধা বলেন, “কালিকাপুর এলাকা শেষ করে শহরের পুরাতন বাজারে অগ্নিসংযোগ করে নির্বিচারে গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়। ধীরে ধীরে ডোনাভান এলাকা হয়ে পাকিস্তানি সৈন্য ও তাদের দোসররা পুরো শহর নিয়ন্ত্রণে নেয়। তারা বহু মা-বোনের ইজ্জ্বত হরণ করে, মৃত্যুও হয় বহু নারীর। পরে জেলার বিভিন্ন এলাকায় মুক্তিযোদ্ধারা চোরাগুপ্তা হামলা চালালে বেশ কিছু সেনা হতাহত হয়।
“১৮ নভেম্বর পানপট্টিতে সম্মুখ যুদ্ধ হলে পাকিস্তানি বাহিনী একটার পর একটা এলাকা থেকে পালাতে শুরু করে। ৭ ডিসেম্বর পটুয়াখালী শহরের আশপাশে অবস্থান নিতে সব মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে খবর পৌঁছানো হয়। ভারতের বিমান বাহিনী এসে পাকিস্তানি বাহিনীকে বিতাড়িত করবে। তাই মুক্তিযোদ্ধারা সবাই শহরের চারপাশে অবস্থান নেন। কিন্তু ভারতীয় বিমান বাহিনী পৌঁছানোর আগেই রাতে একটি লঞ্চে করে পটুয়াখালী থেকে পালিয়ে যায় তারা।”
৮ ডিসেম্বর পটুয়াখালী মুক্ত হলে মুক্তিযোদ্ধারা প্রথমে শহীদ আলাউদ্দিন শিশুপার্কে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করে বলে জানান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মজিদ।
যুদ্ধের আরও গল্প
মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পটুয়াখালী জেলা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার আব্দুল বারেক হাওলাদার বলেন, “যুদ্ধকালীন আমরা পটুয়াখালীর কালিশুরী ও বরিশালের বাকেরগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় পাকিস্তানিদের প্রতিরোধ করি। দফায় দফায় যুদ্ধ হয় হানাদারদের সঙ্গে। হতাহতের ঘটনাও ঘটে বহু।”
“পটুয়াখালীতে বেশ কিছু গণকবর রয়েছে। এর মধ্যে শহরের পুরানো জেলখানার ভেতরে গণকবরটিতে সহস্রাধিক মানুষের লাশ পুঁতে রাখা হয়। জেলখানার ভেতরে কমপক্ষে দেড়শ মানুষ ছিল। তাদের হত্যা করা হয়। এ ছাড়া বাইরের এলাকায় যেসব মানুষকে হত্যা করা হয়েছে সে লাশগুলোও জেলখানার ভেতরে রাখা হয়েছে।”
মুক্তিযুদ্ধ জানাতে হবে বর্তমান প্রজন্মকে
বর্তমান প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জানতে হবে বলে মনে করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা নূরুল ইসলাম ধলা। এ পানপট্টির সম্মুখ যুদ্ধের ইতিহাসকে ধরে রাখতে শুধু একটি স্মৃতিস্তম্ভ করা ছাড়া তেমন কোনো উদ্যোগ নজরে পড়ে না জানিয়ে আক্ষেপও জানিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, পটুয়াখালী জেলায় পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধ হয়েছিল একমাত্র গলাচিপা পানপট্টিতেই। স্মৃতিস্তম্ভটি প্রথমে মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে শুরু করি। পরে গলাচিপায় কর্মরত ইউএনও মো. নুরুল ইসলামকে দিয়ে ১৯৯৬ সালে উদ্বোধন করাই। স্মৃতিস্তম্ভের কাছেই যারা সম্মুখ যুদ্ধ করেছে তাদের নামফলক এবং বঙ্গবন্ধুর একটি প্রতিকৃতি স্থাপন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
মুক্তিযুদ্ধে ডাকরায় ছয় শতাধিক হিন্দুকে হত্যার স্মৃতি তাড়া করে আজও
৬৩ জনের গণকবর লুপ্ত, স্মৃতি বলতে ‘মানকচু’
কুমার নদে গাড়াগঞ্জ যুদ্ধ: ফাঁদে ফেলে হত্যা করা হয় ৮০ হানাদারকে
জরাজীর্ণ গ্রন্থাগার-জাদুঘর, বীরশ্রেষ্ঠকে ‘স্মরণ’ কেবল মৃত্যুদিনে