মুক্তিযুদ্ধে ডাকরায় ছয় শতাধিক হিন্দুকে হত্যার স্মৃতি তাড়া করে আজও

বাগেরহাটের রামপালের ডাকরা গ্রামে সেদিন ভারতে যাওয়ার জন্য কালীবাড়ির মন্দিরের সেবায়েত ‘নোয়াকর্তা’র প্রায় দুই হাজার ভক্ত জড়ো হয়েছিলেন।  

অলীপ ঘটক, বাগেরহাট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 March 2024, 03:50 AM
Updated : 1 March 2024, 03:50 AM

১৯৭১ সালের ২১ মে শুক্রবার, বাংলা ১৩৭৮ সনের ৬ জ্যৈষ্ঠ, বাগেরহাটের রজ্জব আলী ফকিরের রাজাকার বাহিনী রামপাল উপজেলার পেড়িখালী ইউনিয়নের ডাকরা গ্রামে ব্যাপক গণহত্যা চালায়।

গুলি ও গলাকেটে তারা সেদিন ছয় শতাধিক মানুষকে হত্যা করে। মুক্তিযুদ্ধের সময় একসঙ্গে রাজাকার বাহিনীর এটিই ছিল জেলার সবচেয়ে বড় হত্যাকাণ্ডের ঘটনা।

বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার ডাকরা গ্রামের কালীবাড়ি ছিল তখন ওই অঞ্চলের হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি ধর্মীয় মিলনকেন্দ্র।

বাদল চন্দ্র চক্রবর্তী ছিলেন মিলনকেন্দ্রটির প্রধান পূজারি বা সেবায়েত। সাধক ও ধর্মগুরু হিসেবে তিনি সবার কাছে শ্রদ্ধার পাত্র ছিলেন। সকলে তাকে ‘নোয়াকর্তা’ হিসেবে সম্বোধন করতেন।

একাত্তরের ১১ মে’র পর আশপাশের গ্রাম থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ চলে যেতে শুরু করলেও নোয়াকর্তার ভক্তরা সিদ্ধান্ত নেন, মে’র ২২ তারিখ তারা নোয়াকর্তাকে নিয়ে নদীপথে সুন্দরবন হয়ে একসঙ্গে ভারতের দিকে রওনা করবেন।

সেই অনুযায়ী কয়েক দিন আগে থেকেই পাশের গ্রামগুলোর অনেক হিন্দু পরিবার এসে ডাকরা কালীবাড়ির আশপাশে মংলা নদী, মাদারতলা নদী ও কুমারখালী খালের তীরে শতাধিক নৌকায় অবস্থান নেন।

এদের মধ্যে বাগেরহাট সদর উপজেলার সায়েড়া, খানপুর, বাঁশবাড়িয়া; মোরেলগঞ্জ উপজেলার সাড়ে চারআনি, রামপাল উপজেলার বেতকাটা, ভোজপাতিয়া ও মহিষঘাটা গ্রামের মানুষই ছিল সবচেয়ে বেশি।

সারাদিন গ্রামের মধ্যে কাটিয়ে রাতে তারা নদীতে রাখা নৌকায় ঘুমাতে আসতেন। এভাবে ২১ মে’র দিকে ডাকরা হয়ে ওঠে বড় শরণার্থী শিবির।

ভারতে গমনেচ্ছুদের সংখ্যা সেখানে তখন দু’হাজার ছাড়িয়ে যায়।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক স্বরোচিষ সরকার ‘একাত্তরে বাগেরহাট’ বইতে উল্লেখ করেছেন, ইমান আলী শেখ, জোনাব আলী শেখ ও দেলোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ সাধারণ গ্রামবাসী অঞ্চলটিতে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকদের নিরাপদে অবস্থানের আশ্বাস দেন।

“মংলা নদীর অপর তীরে অবস্থিত বাঁশতলী গ্রামের ‘পিস কমিটি’র সদস্য আফসার উদ্দিনের কাছ থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের ওপর কোনো হামলা হবে না বলেও নিশ্চয়তা পাওয়া যায়। কিন্তু হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকদের এভাবে একত্র অবস্থানের বিষয়টি স্থানীয় লুটকারীদের লোভাতুর করে তোলে।

“পাশাপাশি রাজনৈতিকভাবে বিরোধী পক্ষ সত্তরের নির্বাচনের প্রতিশোধ তোলার কথা ভাবতে থাকেন। চিঠির মাধ্যমে তারা বাগেরহাটের রাজাকার কমান্ডার রজ্জব আলী ফকিরের কাছে খবর পাঠান।

“একজন প্রত্যক্ষদর্শী ঘটনার আগের দিন ডাকরা গ্রামের লিয়াকত আলী গজনবী নামে মেডিকেল কলেজের এক ছাত্রকে বাগেরহাটগামী লঞ্চে এসে রজ্জব আলীর কাছে একটি চিঠি পাঠাতে দেখে ছিলেন।

“২১ মে বেলা ১টার দিকে বড় দুটি ছিপ নৌকায় করে রজ্জব আলী তার বাহিনী নিয়ে ডাকরা অঞ্চলে প্রবেশ করেন। প্রতিটি নৌকায় ১৫-২০ জন সশস্ত্র রাজাকার।

“প্রথম নৌকাটি মংলা নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থিত কালীগঞ্জ বাজারের দক্ষিণ পশ্চিমে গিয়ে মাদারতলী নদীর মধ্যে ঢোকে এবং ডাকরা বাজারে এসে ভেড়ে।

“দ্বিতীয় নৌকাটি আড়াআড়িভাবে মংলা নদী পাড়ি দিয়ে কুমারখালী খালের গোড়ায় অবস্থান নেয়।

“প্রথমেই অনুসন্ধান করা হয়, নদী ও খালের তীরে বাঁধা নৌকাগুলোতে।

“নৌকায় অবস্থানরত পুরুষদের গুলি করে হত্যা করা হয়। তারপর প্রথম নৌকার রাজাকাররা পশ্চিম দিক থেকে এবং দ্বিতীয় নৌকার রাজাকাররা পূর্বদিক থেকে ডাকরা গ্রামে প্রবেশ করেন। ভারত গমনেচ্ছু শত শত শরণার্থীতে গ্রামটি পরিপূর্ণ।

“রাজাকাররা ডানে-বায়ে যাকে পায়, তাকেই গুলি করে হত্যা করতে থাকেন। গুলির শব্দ শুনামাত্রই অধিকাংশ লোক তাদের গুরু নোয়াকর্তার কাছে এসে হাজির হন। শেষ পর্যন্ত রাজাকাররা দুদিক থেকে এসে কালীবাড়িতে থামেন। সেখানে পুরুষ এবং নারীদের আলাদা করা হয়। পুরুষরা একদিকে চলে আসে।

“আরও পুরুষ রয়েছে কি-না তা পরীক্ষা করার জন্য কয়েকজন রাজাকার নারীদের ভিড়ে যান এবং শাড়ি পরা অবস্থায় কয়েকজন পুরুষকে দেখতে পান। বলির পশুর মত তাদেরও টেনে-হিঁছড়ে আনা হয়।

“এভাবে মন্দিরের সামনের চত্বরে পুরুষদের একত্রিত করার পর একসঙ্গে অনেকগুলো রাইফেল গর্জে ওঠে। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে প্রাণ হারান শতাধিক মানুষ।

“এরপরও বৃদ্ধ আকিজ উদ্দিন তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী মজিদ কসাইকে সঙ্গে নিয়ে মৃতদেহগুলো উলটে- পালটে দেখতে থাকেন, অক্ষত বা আহত কাউকে পাওয়া মাত্রই তাদের গলাকেটে মারা হয়। এ ছাড়া হিন্দু বাড়িগুলোতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া জন্য স্থানীয় সহযোগীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

“ওইদিন বেলা ৩টার দিকে এ শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থার অবসান ঘটে। তবে তখনো হিন্দু বাড়িগুলোতে দেওয়া আগুনের লেলিহান শিখা কালো মেঘের মত ধোঁয়ার সৃষ্টি করে যাচ্ছিল।

“কয়েকজন তরুণীকে তুলে নেওয়া হয় রজ্জব আলীর নৌকায়। পরে সম্ভাব্য সংকট মোকাবেলার জন্য স্থানীয় রাজাকারকে অস্ত্র দিয়ে শক্তিশালী করে রজ্জব আলী ফকির গং বাগেরহাটে ফিরে যান।

“কালীবাড়িতে কোনো নারীকে মারা না হলেও নৌকা ও রাস্তার পাশে এরা বেশ কয়েকজনকে গুলি করে হত্যা করেছিল।”

সেদিনের ঘটনার এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, রাজাকার বাহিনী চলে যাওয়ার পর তিনি রাস্তার পাশে অনেকগুলো লাশের সঙ্গে এক নারীর লাশ দেখতে পান। ১০-১১ মাস বয়সি এক শিশু মৃত নারীর স্তন পান করে যাচ্ছিল; শিশুটির সমস্ত শরীর এবং মুখমণ্ডলে রক্ত লাগানো ছিল।

গুলির শব্দ শোনামাত্র ডাকারা গ্রামের দয়ানন্দ মণ্ডল ঘরের মাঝখানে হাঁটু গেড়ে বসেছিলেন। হঠাৎ একটা গুলি এসে তার উরুতে বিদ্ধ হয়।

এ অবস্থায় তিনি স্থানীয় ইমান আলী শেখের বাড়িতে ৬-৭ দিন কাটান এবং ভোজপাতিয়া গ্রামের মেডিকেল কলেজে অধ্যায়নরত আব্দুল মান্নানের চিকিৎসায় ভালো হয়ে ওঠেন।

হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়ার পর ডাকরা গ্রামে যারা জীবিত ছিলেন, সন্ধ্যা নামার আগেই তাদের কিছু অংশ পাশের মুসলমান পাড়ায় গিয়ে আশ্রয় নেন এবং কিছু অংশ এক মুহূর্ত দেরি না করে ভারতের উদ্দেশে রওনা হয়ে যান।

পেড়িখালী ইউনিয়নের তৎকালীন চেয়ারম্যান শেখ নজরুল ইসলাম দাবি করেন, ওইদিন কমপক্ষে ৬৪৬ জন লোককে হত্যা করা হয়েছিল। পরের দিন ডা. দেলোয়ার হোসেনের উদ্যোগে কয়েকজন তরুণ কালীবাড়ির চত্বরে নিহতদের মৃতদেহগুলো মাটিচাপা দেওয়ার ব্যবস্থা করেন।

ওই তরুণদের হিসাব অনুযায়ী, ডোবার মত গর্তে তারা প্রায় দুইশ মৃতদেহ মাটিচাপা দিয়েছিলেন।

ভাঙনে নোয়াকর্তার মন্দিরটিসহ বধ্যভূমি এলাকাটি বেশ কয়েক বছর আগে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

মংলা, মাদারতলী নদী এবং কুমারখালী খালে অনেক মৃতদেহ ভেসে গিয়েছিল। তারপরও অনেক লাশ এখানে-সেখানে পড়েছিল, যার কোনো সৎকার করা হয়নি।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী তৎকালীন রামপাল উপজেলার গিলাতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক পরিতোষ কুমার ব্যানার্জীর বর্ণনা অনুযায়ী, মৃতের সংখ্যা ৬০০ থেকে ৭০০ এর মধ্যে ছিল।

“ঘটনার দিন তিনি সপরিবারে ডাকরা বাজারের কাছে মাদারতলী নদীর তীরে নৌকা ভিড়িয়ে ছিলেন। রাজাকার কমান্ডার রজ্জব আলীর বাহিনী সেখানে অবতরণ করার সঙ্গে সঙ্গে কোনোক্রমে পালিয়ে কাছাকাছি গাধাঘাটা গ্রামে ডাকাত হিসেবে খ্যাত এক মুসলমান যুবকের বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন।

“দুর্বৃত্তই বটে, না হলে কি নিজের জীবন বিপন্ন করে পাকিস্তানের শত্রু হিন্দুদের আশ্রয়ে অভয় দেন!”

পরদিনের ঘটনা সম্পর্কে শিক্ষক পরিতোষ কুমার ব্যানার্জী লিখেছিলেন, “পরদিন ভোরে প্রিয়জনদের মৃতদেহগুলি দেখার উদগ্র বাসনায় ডাকরা গ্রামে যাই। রাইফেল ও বন্দুকধারীরা আমাদের গ্রামে ঢুকতে দিল তো নাই; উল্টো মেরে ফেলার হুমকি দিল। ফিরে গেলাম ডাকরা থেকে দুই মাইল দূরের হিন্দু গ্রামে। গ্রাম ফাঁকা। দু-একজন বুড়ো মানুষ ছাড়া কেউ নেই। অবশেষে এক মুসলমান ছাত্রের বাড়িতে গিয়ে থাকলাম। ডাকরা থেকে বেরিয়ে আসা স্ত্রীলোকদের কাছে শুনলাম যে, মেয়েদের হত্যা করা হয়নি। ১২-১৩ বছরের বেশি বয়সের পুরুষরাই ছিল হত্যাকারীদের মূল লক্ষ্য।

“ওই ছাত্রটি জীবনবাজি ধরে ডাকরায় লুকিয়ে থাকা কয়েকটি পরিবারের নারী ও শিশু সদস্যদের নিয়ে এল। আশ্চর্য হলাম, তাদের চোখে জল নেই! আমাকে দেখে কেউ কাঁদলো না। পরিবর্তে তাদের চাহনির ভেতরে ছিল প্রচণ্ড জ্বালা, অসহ্য উত্তাপ। বুঝলাম, ঘটনার নারকীয়তা ও ভয়াবহতা তাদের অনুভূতিকে স্তব্ধ করে দিয়েছে। প্রাণ আছে, মন নেই, স্নায়ু আছে অনুভূতি নেই।” 

এদিন যারা নিহত হয়েছিলেন তারা বাগেরহাটের রামপাল, বাগেরহাট সদর ও মোরেলগঞ্জ উপজেলার অধিবাসী। একটি অংশ ছিল বৃহত্তর বরিশাল জেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে আসা নোয়াকর্তার (পূজারি বাদল চক্রবর্তী) ভক্ত।

রামপাল উপজেলার বেলাই গ্রামের শেখ জলিলের পাঁচ ছেলে-মেয়ে। ১৯৬৯ সালে তার দ্বিতীয় মেয়ে নূরজাহানের বিয়ে হয় একই উপজেলার ডাকরা গ্রামে।

বিয়ের প্রায় দুই বছর পর মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়। শ্বশুরবাড়িতেই ঘর-সংসার করছিলেন তিনি। যুদ্ধ শুরু হলে তিনিও ঘরে বসে থাকতে পারেননি। সরাসরি যুদ্ধে না থাকলেও মুক্তিযোদ্ধাদের নানা তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছেন।

পঁচাত্তর বয়সি নারী মুক্তিযোদ্ধা নূরজাহান বেগম যুদ্ধের সময়ের স্মৃতি রোমন্থন করে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে আমি সাড়ে সাত মাসের অন্তঃসত্তা। মুক্তিযুদ্ধের সময়ে ডাকরায় যে গণহত্যার ঘটনা ঘটে আমি তার প্রত্যক্ষদর্শী।

“রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা নির্বিচারে নিরীহ মানুষদের লাইনে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করছে। ওইদিন আমি ওই ডাকরা বিলের ভেতর দিয়ে দৌড়ে যাওয়ার সময় দেখি, চারিদিকে মানুষের আর্তনাদ। রাজাকারদের হাতে আমার মৃত্যুও অবধারিত। যুদ্ধের সময় আমি সাড়ে সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা। দেখলাম, মরতে তো হবে, রাজাকারদের মেরেই মরে যাই। তখন আমি এক রাজাকারের কাছ থেকে বন্দুক কেড়ে নিলাম। বন্দুক কেড়ে নেওয়ার সময় তার সঙ্গে আমার ধস্তাধস্তি হল, সে আমার পেটে, বুকে এলোপাথাড়ি লাথি মারতে থাকলেও আমি তার বন্দুক ছাড়িনি। আমার মুখের দাঁত ভেঙে গেল। একপর্যায়ে সে বন্দুক ছেড়ে দিলে সেটা দিয়ে তাকে আঘাত করি। তারপর রাজাকারের কী হয়েছিল আমি জানি না।”

নূরজাহান বেগমের ভাষ্য, “আঘাতের কারণে আমি ব্যথায় কাতরাতে থাকি। ওইদিন আমার প্রসব বেদনা ওঠে। একটি মৃত ছেলে ভূমিষ্ঠ করি।

“আমি নারী মুক্তিযোদ্ধা। সরকার আমাকে নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিয়েছে। সম্মান দিয়েছে। আমি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের স্বপ্ন হৃদয় লালন করি। স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পরে যখন দেখি, এই দেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের ওপর নির্যাতন হয়, তখন মনটা বিষণ্ন হয়। মনে প্রশ্ন জাগে, এই বাংলাদেশ দেখার জন্য মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল?”

আগামী দিনগুলোতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষদের সংখ্যালঘুর চোখে না দেখে, তারা যে এই দেশের নাগরিক তা যেন এ প্রজন্ম ভাবতে শেখে, এটাই প্রত্যাশা নূরজাহান বেগমের।

২১ মে বাগেরহাটের ডাকরার গণহত্যায় নিহতদের কয়েকজন হলেন-

গৌরাঙ্গ দেবনাথ, রণজিৎ কুমার মহলী, নকুল চন্দ্র মণ্ডল, রাধাকান্ত মজুমদার, ক্ষান্তি রাণী হালদার, আশুতোষ চক্রবর্তী, অমূল্য কুমার মণ্ডল, অতুল কৃষ্ণ ডাকুয়া, মহানন্দ বৈরাগী, মহানন্দ কবিরাজ, হরষিত চন্দ্র মণ্ডল, নারায়ণ চন্দ্র ডাকুয়া, পাঁচুরাম কবিরাজ, শরৎ চন্দ্র মণ্ডল, যতীন্দ্র নাথ বৈরাগী, নিরঞ্জন চক্রবর্তী, গোপালচন্দ্র মজুমদার, আনন্দ হালদার, আনন্দলাল মজুমদার, অমলকৃষ্ণ চক্রবর্তী, অনন্ত কুমার মণ্ডল, অঙ্কুর মজুমদার, বরদাকান্ত ঘরামী, ভদ্রকান্ত মণ্ডল, কামিনী মণ্ডল, কুমুদ বিহারী চক্রবর্তী, লক্ষ্মীকান্ত চক্রবর্তী, মরুময় ব্যানার্জী, হরিবর হালদার, রসিকলাল চক্রবর্তী, রসিকলাল ঘরামি, সত্যরঞ্জন চক্রবর্তী, সতীশ চন্দ্র মজুমদার, সুখেন্দু হালদার, প্রমীলা মণ্ডল, যতীন্দ্রমোহন চক্রবর্তী, বিশ্বেশ্বর মিস্ত্রি, কিরণচন্দ্র চক্রবর্তী, উপেন্দ্রনাথ ঘরামি, বেলা রাণী মণ্ডল বেলকা, কেনারাম ডাকুয়া, গুরুবর মণ্ডল, বিরাজমোহন পাল, বিশ্বেশ্বর মণ্ডল, নিকুঞ্জ বিহারী বাছাড়, নিরোধ বিহারী বাছাড়, সুবোধ কুমার পাল, প্রফুল্ল কুমার পাল, দেবেন্দ্রনাথ মজুমদার, অনাথ বন্ধু মিস্ত্রি, অনন্ত কুমার মণ্ডল, ভূপাল চন্দ্র বিশ্বাস, খগেন্দ্রনাথ মণ্ডল, হরিচরণ বিশ্বাস, নন্দলাল বিশ্বাস, পুলিন বিহারী প্রামাণিক, রমেশ চন্দ্র বিশ্বাস, রায়চরণ বিশ্বাস, রসময় বিশ্বাস, জিতুন মজুমদার, উপেন্দ্রনাথ হালদার, ভোলানাথ মুখার্জি, গোপাল চন্দ্র বিশ্বাস, নিরোধ বিহারী মণ্ডল, কেশব চন্দ্র মণ্ডলল, যতীন্দ্রনাথ প্রামাণিক, মনীন্দ্র দেবনাথ, নিরোধ বিহারী মিস্ত্রি, অভিলাষ বাছাড়, যাদব চন্দ্র তাফালী, লক্ষ্ণণ চন্দ্র তাফালী, প্রফুল্ল কুমার তাফালী,  যতীন্দ্রনাথ প্রামাণিক, মনীন্দ্রনাথ দেবনাথ, বাবু শিকদার এবং সহদেব হালদার। (সূত্র: স্বরোচিষ সরকার)