প্লাস্টিকের ভয়াবহতার প্রচারে হেঁটে এশিয়া ভ্রমণে ভারতীয় যুবক

ভারতের ২৭টি রাজ্য ভ্রমণ শেষে ৮ অক্টোবর বিলোনিয়া সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে আসেন মহারাষ্ট্রের যুবক রোহান আগারওয়াল।

চাঁদপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Nov 2022, 03:36 AM
Updated : 14 Nov 2022, 03:36 AM

প্লাস্টিকের ভয়াবহতার প্রচার ও পরিবেশ রক্ষার আহ্বান নিয়ে হেঁটে এশিয়ার বিভিন্ন দেশ ভ্রমণে বের হয়েছেন ভারতীয় যুবক রোহান আগারওয়াল। 

ইতোমধ্যে ১৫ হাজার কিলোমিটার হেঁটে তিনি বাংলাদেশে এসেছেন। 

মহারাষ্ট্রের নাগপুরের এই যুবক নিজ দেশের ২৭টি রাজ্য ভ্রমণ শেষে গত ৮ অক্টোবর ফেনীর বিলোনিয়া সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে আসেন। এরপর পার্বত্য চট্টগ্রাম ঘুরে ১০ নভেম্বর আসেন চাঁদপুর। তার বয়স এখনও বিশের কোটায়।

রোহান জানান, ২০২০ সালের ২৪ অগাস্ট ভারতের উত্তর প্রদেশের বারানসির গঙ্গার তীর থেকে হাঁটা শুরু হয় তার। ৮১০ দিন হেঁটে এ পর্যন্ত অতিক্রম করেছেন প্রায় ১৫ হাজার কিলোমিটার। এর মধ্যে ভারতের রাজস্থান, হরিয়ানা, দিল্লি, চণ্ডিগড়, হিমাচল, উত্তরাখণ্ড, মধ্য প্রদেশ, মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, তামিলনাড়ু, পন্ডিচেরি, কর্নাটক, কেরালা ও গোয়া হয়ে ভারতের মোট ২৭টি রাজ্য পরিভ্রমণ শেষ করেছেন।

গত ৮ অক্টোবর ফেনীর বিলোনিয়া সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন এবং এরপর পার্বত্য চট্টগ্রাম ঘোরেন বলে রোহান জানান। 

চাঁদপুরে এসে তিনি জেলা প্রশাসক, পৌর মেয়র ও চাঁদপুর প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন এবং শিক্ষার্থীদের প্লাস্টিকের ভয়াবহতা সম্পর্কে সচেতন করতে চাঁদপুরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সচেতনতামূলক বক্তব্য রাখেন।

রোহান আগারওয়াল সাংবাদিকদের বলেন, এই পৃথিবী শুধু মানুষের বসবাসের জন্য নয়, প্রাণী-উদ্ভিদেরও। তাই পরিবেশের বিষয়ে অবশ্যই সচেতন হতে হবে। এটা সব মানুষের দায়িত্ব। 

“প্লাস্টিক পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে দিচ্ছে। প্লাস্টিক থেকে বাঁচতেই আমার এই যাত্রা। তাই ভারত থেকে বাংলাদেশে এসেছি। পথ চলতে অনেক মানুষের সাথে পরিচয় হচ্ছে। ডিসি, এসপি, মেয়র ও সাংবাদিকসহ বিভিন্ন সহযোগিতা করছেন।”

রোহান জানান, তিনি ভারতের গভর্নমেন্ট সিকিম প্রফেশনাল ইউনিভার্সিটির স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। তার পরিবার থাকে নাগপুরে। বাংলাদেশের পর মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, লাওস, ভিয়েতনাম, চীন, হংকং, ম্যাকাও, মঙ্গোলিয়াসহ আরও বেশ কিছু দেশে যাওয়ার ইচ্ছা রয়েছে। 

তিনি বলেন, তিনি যেখানেই গিয়েছেন, সেখানকার স্কুল-কলেজেসহ বিভিন্ন পাবলিক প্লেসে সবার সঙ্গে প্লাস্টিকের ভয়াবহতা নিয়ে কথা বলেছেন। সবাইকে পরিবেশ রক্ষার কথা বলেছেন।

চাঁদপুর শহরের এন এম আকাশ নামের এক যুবক বলেন, “রোহান যে কাজ করছে তা খুবই প্রশংসনীয়। তার দেশে ঘুরে আমাদের দেশে এসেছেন প্লাস্টিকের ভয়াবহতা বোঝাতে। এটা আমাদের যুব সমাজকে উদ্বুদ্ধ করবে।”

চাঁদপুর আল আমিন স্কুল এন্ড কলেজের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. তাজুল ইসলাম বলেন, “ভারত থেকে বাংলাদেশে এসে কয়েকটি জেলা ঘুরে চাঁদপুরে এসেছে রোহান। সে আমাদের শিক্ষার্থীদের সাথে খুব চমৎকারভাবে কথা বলেছে। প্লাস্টিকের ব্যবহার কীভাবে কমিয়ে আনা যায়, তার লক্ষ্যে কাজ করছে ভারতীয় যুবক।”

রোহান হিন্দি ও ইংরেজি ভাষায় শিক্ষার্থীদের প্লাস্টিকের ভয়াবহতা নিয়ে আলোচনা করেছেন বলে জানান এই শিক্ষক।

চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র মো. জিল্লুর রহমান জুয়েল বলেন, “অল্প বয়সে যে ইস্যু নিয়ে কাজ করছে, মানুষকে সচেতন করার কাজ করছে, সেটি একেবারেই গ্লোবাল ইস্যু। ২০ বছর বয়সে পরিবেশের জন্য কাজ করছে; আমি মনে করি এটি অন্যদের জন্য অনুপ্রেরণা।” 

তিনি রোহানের থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করেন জানিয়ে তার এই পথচলায় সবার সহযোগিতা কামনা করেন।