কুমিল্লায় ১৪৪ ধারা ভেঙে ছাত্রলীগের কর্মীসভা

তবে ১৪৪ ধারা ভেঙে কর্মীসভার খবর জানেন না দেবিদ্বারের ইউএনও নিগার সুলতানা।

কুমিল্লা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 May 2023, 06:13 PM
Updated : 20 May 2023, 06:13 PM

কুমিল্লার দেবিদ্বারে একই স্থানে একই সময়ে সংসদ সদস্য ও উপজেলা চেয়ারম্যানের অনুসারীরা সমাবেশ ডাকলে বিশৃঙ্খলা রুখতে ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। তবে তা অমান্য করে সেখানে কর্মীসভা করেছে ছাত্রলীগ।    

শনিবার বিকেল ৩টার দিকে ফতেহাবাদ ইউনিয়নের চান্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ছাত্রলীগের ওই কর্মীসভায় বক্তব্য দেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ। 

তবে ১৪৪ ধারা ভেঙে সেখানে কর্মীসভার খবর জানেন না বলে জানিয়েছেন দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিগার সুলতানা।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “একই স্কুল মাঠে দুটি পক্ষ একই সময়ে দলীয় সমাবেশ করতে চেয়েছিল। তবে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে কাউকে সেখানে সমাবেশের অনুমতি না দিয়ে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।

“সেখানে সভা করা হয়েছে কিনা আমি জানি না। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবো।”

নেতাকর্মীরা জানান, বিকালে বিদ্যালয়ের মাঠে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা কর্মী সমাবেশের ডাক দেয়। এতে প্রধান অতিথি করা হয় কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদকে। কয়েকদিন ধরে ওই সভার প্রস্তুতি চলছিল।

এর মধ্যে একই মাঠে এবং একই সময়ে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভার ডাক দেয় স্থানীয় সংসদ সদস্য রাজী মোহাম্মদ ফখরুল সমর্থিত ইউনিয়ন যুবলীগ।

এতে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি হাজী আবুল কাসেম ওমানী এবং সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল চৌধুরীর অতিথি হিসেবে থাকার কথা।

সকাল থেকে উভয় পক্ষের লোকজন সমাবেশস্থলে অবস্থান নেয়। এ সময় উত্তেজনা দেখা দেয় এবং চেয়ার ভাঙচুর করা হয়। এ ছাড়া ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

পরে সংঘর্ষের আশঙ্কায় উপজেলা প্রশাসন সেখানে ১৪৪ ধারা জারি করে সব ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করে। কিন্তু তার মধ্যেই কর্মীসভা করে ছাত্রলীগ। 

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক আসাদুর রহমান রনি সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা চারদিন আগেই ওই স্থানে কর্মী সমাবেশ ঘোষণা করি। কিন্তু আমাদের সমাবেশ পণ্ড করতে ইউনিয়ন যুবলীগ শুক্রবার রাতে সেখানে সভা ডাকে। তারা বিশৃঙ্খলা করতে আমাদের মঞ্চ ও সভাস্থলের চেয়ার ভাঙচুর করে।”

উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক দিদারুল আলম ফয়েজ বলেন, “তারা আমাদের মঞ্চ ও চেয়ার ভাঙচুর করে পালিয়ে যায়। এরপর ছাত্রলীগ কর্মীদের বাঁধভাঙা স্রোতে আমরা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করেই কর্মীসভা চালাতে বাধ্য হই।”

তবে ভিন্ন কথা বলেছেন সংসদ সদস্যের অনুসারী উপজেলা যুবলীগের সভাপতি হাজী আবুল কাসেম ওমানী।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “ইউনিয়ন যুবলীগ আগেই সেখানে কর্মসূচি দেয়। ছাত্রলীগের দাবি ভিত্তিহীন। তারাই (ছাত্রলীগ) ইচ্ছে করে ঝামেলা সৃষ্টি করেছে। আমাদের সংগঠনের নেতাকর্মীদের বাড়িঘরে হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ কর্মীরা। আমরা এ ঘটনার নিন্দা জানাই।”

এ প্রসঙ্গে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বলেন, “সেখানে আগেই ছাত্রলীগ সভা আহ্বান করেছিল এবং প্যান্ডেলও করেছে। যুবলীগ সমাবেশ বানচালের চেষ্টা করেছিল। সেখানে প্রশাসনের ১৪৪ ধারা জারির কোনো যৌক্তিকত ছিলো না।”

দেবিদ্বার থানার পরিদর্শক (তদন্ত) খাদেমুল বাহার সাংবাদিকদের বলেন, “যুবলীগ ও ছাত্রলীগ দুটি পক্ষই একই স্থানে সমাবেশ করতে গেলে সংঘর্ষের আশঙ্কা ছিল। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

“ইউএনওর নির্দেশে সেখানে ১৪৪ জারি করে পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়।”