মুন্সীগঞ্জে প্রতিবেশীর বাসায় এসএসসি পরীক্ষার্থীর মৃত্যু, পরিবারের দাবি হত্যা

সন্ধ্যায় মেয়েটিকে হাসপাতালে নিয়ে আসে তার ভাই পরিচয় দেওয়া আরিফ নামের এক তরুণ।

মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Jan 2023, 05:09 AM
Updated : 4 Jan 2023, 05:09 AM

মুন্সীগঞ্জ পৌরসভায় প্রতিবেশীর বাসার ছাদ থেকে পড়ে এক এসএসসি পরীক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে, তবে নিহতের পরিবারের অভিযোগ তাকে পরিকল্পিভাবে হত্যা করা হয়েছে। 

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অচেতন অবস্থায় মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে আনার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথে মেয়েটির মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছেন মুন্সীগঞ্জ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার থান্দার খায়রুল হাসান। 

নিহত জেসি মাহমুদ মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার মধ্যকোর্টগাঁওয়ের সৌদি আরব প্রবাসী সেলিম মাহমুদের মেয়ে। ১৭ বছরের জেসি আলবার্ট ভিক্টোরিয়া যতীন্দ্র মোহন সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী। 

মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. শৈবাল বসাক জানান, সন্ধ্যা ৬টার দিকে মেয়েটিকে হাসপাতালে নিয়ে আসে তার ভাই পরিচয় দেওয়া আরিফ নামের এক তরুণ। সে তার ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারটিও রেজিস্ট্রার খাতায় লিপিবদ্ধ করে। 

“এ সময় মেয়েটি অচেতন অবস্থায় ছিলো। পরে তার অবস্থার অবনতি দেখা দিলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।”

নিহতের বড় ভাই জিদান বলেন, “সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে প্রতিবেশী আরিফুর রহমানের ছেলে বিজয় ফোন দিয়ে জানায়- আমার বোন হাসপাতালে আছে। সে তাদের বাসার ছাদ থেকে পড়ে গেছে। এরপর আমি দ্রুত হাসপাতালে এসে অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে বোনকে নিয়ে ঢাকায় রওনা হই।” 

“পথে মুক্তারপুর সেতু পার হতেই দেখি তার শ্বাস-নিঃশ্বাস কাজ করছে না। এরপর আর তাকে ঢাকা না নিয়ে মুন্সীগঞ্জ হাসপাতালে ফিরে আসলে চিকিৎসক জানান সে মারা গেছে।” 

তিনি অভিযোগ করে বলেন, “আমার বোন কিভাবে তাদের বাসার ছাদে গেল জানি না। ওরা আমার বোনকে পরিকল্পিতভাবে বাসার ছাদে নিয়ে মারধর করে মেরে ফেলেছে।” 

অভিযোগের বিষয়ে বিজয়ের বাবা ও প্রতিবেশি বাসার মালিক আরিফুর রহমান বলেন, “আমার বাসার ছাদ খোলা থাকে। মেয়েটি কিভাবে ছাদে উঠেছে আমরা বুঝতে পারছি না। সে আমার বাসার ছাদ থেকে লাফ দিয়েছে বলে আমি শুনেছি। আমরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেছি।”

শহর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আরিফুর আরও বলেন, তাদের বিরুদ্ধে নিহতের পরিবারের করা অভিযোগ সত্য নয়। 

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার থান্দার খায়রুল হাসান বলেন, “ঘটনার পর পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে রয়েছে। 

“পরিবারের হত্যার অভিযোগ এবং প্রাথমিকভাবে প্রাপ্ত তথ্য দুটি সূত্র ধরেই আমরা কাজ করছি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে চূড়ান্তভাবে বলা যাবে ঘটনাটি হত্যা না নিছক আত্মহত্যা।” 

এই ঘটনার পর বিজয় পলাতক থাকলেও তার বাবা ও মাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।