সোমবার কক্সবাজার পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডে বিমান ঘাঁটি সংলগ্ন সমিতিপাড়া এলাকায় স্থানীয়রা বিমান বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ালে নাহিদ নিহত হন।
Published : 26 Feb 2025, 11:09 PM
কক্সবাজারে বিমানবাহিনীর ঘাঁটির কাছে সংঘর্ষে নিহত শিহাব কবির নাহিদের মৃত্যু সনদ নিয়ে ‘আপত্তি’র কথা জানিয়েছেন তার বাবা।
ঘটনার দুদিন পেরিয়ে গেলে এখনও পর্যন্ত মামলা করেনি কোনো পক্ষই।
বুধবার সন্ধ্যায় নাহিদের বাবা নাসির উদ্দীন বলেন, তিনি সন্তান হত্যার বিচার নিয়ে ‘শঙ্কিত’এবং প্রতিকার পাওয়া নিয়ে ‘আতঙ্কের’ মধ্যে আছেন। ৮০ বছরে এসে মামলা করার মত মানসিক ও শারীরিক অবস্থায় নেই।
তিনি বলেন, “আজ সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত দৌড়ে নাহিদের মৃত্যু সনদ নিয়েছি। সেখানে ওরা মৃত্যুর কারণ হিসেবে লিখেছে- ‘হেড ইনজুরি, কজ বাই ফিজিক্যাল অ্যাসল্ট’। তার মানে, আমার ছেলে যে গুলিতে মরেছে সেটা তারা হাইড করতে চাচ্ছে। এসব থেকেই বোঝা যাচ্ছে, আমি কেমন বিচার পাব!”
নাহিদের বাবা অবশ্য বলেছেন, মামলা নিয়ে তার উপরে কোনো চাপ নেই।
তবে এ ধরনের অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে মন্তব্য করেন কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) সাবুক্তগীন মাহমুদ শহেল। তিনি বলেন, “মৃত্যু সনদ প্রদানের ক্ষেত্রে প্ররোচিত হওয়ার সুযোগ নেই। এসব ক্ষেত্রে আমাদের সব কর্মকর্তা সতর্ক রয়েছেন।”
কক্সবাজার বিমান ঘাঁটির কাছে সংঘর্ষ: 'এলাকাবাসীকে সন্ত্রাসী বানানো
সোমবার দুপুরে কক্সবাজার পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডে বিমান ঘাঁটি সংলগ্ন সমিতিপাড়া এলাকায় স্থানীয়রা বিমান বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়। সে সময় ঢিল নিক্ষেপ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার মধ্যে গুলিও ছোড়া হয়। সংঘর্ষের সময় ব্যবসায়ী শিহাব কবির নাহিদ (৩০) নিহত হন।
ময়নাতদন্ত শেষে মঙ্গলবার নাহিদের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
তবে এ ঘটনায় বুধবারও কোনো মামলা হয়নি বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি ইলিয়াস খান।
পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা না হলে পরবর্তী কার্যক্রম কী হতে পারে- জানতে চাইলে ওসি ইলিয়াস খান বলেন, “নিহতের বাবা আমার সঙ্গে এসে দেখা করবেন বলেছেন। সেক্ষেত্রে যদি মামলা না করে তা উচ্চ পর্যায়ের সঙ্গে কথা বলে আইন অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
এদিকে বুধবার বিকালে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবিতে কক্সবাজার পৌরসভা চত্বরে এক মানববন্ধনে তিন বছরের সন্তানকে নিয়ে হাজির হন নিহত নাহিদের স্ত্রী আসমা উল হুসনা।
এ সময় নাহিদকে ‘হত্যা’ করা হয়েছে দাবি করে হুসনা ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে এর সুষ্ঠু বিচার চান।
হুসনা বলেন, “আমার স্বামীকে হত্যা করার পরও তারা থামেনি। তারা মিথ্যা খবর ছড়াচ্ছে। আমার স্বামীকে সন্ত্রাসী বানাচ্ছে। প্রমাণ লুটপাট করা হচ্ছে। সাংবাদিকরা সত্যটা প্রকাশ করেন, অন্যদের কথা শুনে বিভ্রান্তি ছড়াবেন না।”
ভূমি আন্দোলনে নাহিদকে ‘শহীদ’ দাবি করেন হুসনা। তিনি ‘আতঙ্কের’ কথাও বলেছেন।
কক্সবাজারের সমিতিপাড়ায় মূলত ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ে বাস্তুচ্যুত হওয়া প্রায় ৫০ হাজার জলবায়ু উদ্বাস্তু বসবাস করেন।
স্থানীয়রা বলছিলেন, বিমান বাহিনী ঘাঁটি নির্মাণের কারণে তারা ‘উচ্ছেদ আতঙ্কে’ ভুগছিলেন। এলাকার মানুষ ভূমি রক্ষার জন্য আন্দোলন করছিল।
আরও পড়ুন:
কক্সবাজারের শিহাব বিমান বাহিনীর গুলিতে মারা যাননি: আইএসপিআর
কক্সবাজারে বিমান ঘাঁটির কাছে সংঘর্ষ, নিহত ১
কক্সবাজারে বিমান ঘাঁটির কাছে সংঘর্ষ: লোক সমাগম কম সমিতিপাড়া বাজারে