ট্রলারে ১০ লাশ: ‘মূল কারণ’ জানার চেষ্টায় পুলিশ, জানালেন আইজিপি

“কেউ কেউ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছে। এ নিয়ে আমরা আরও কাজ করে যাচ্ছি।”

কক্সবাজার প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 May 2023, 03:56 PM
Updated : 3 May 2023, 03:56 PM

কক্সবাজারে গভীর সমুদ্র থেকে আসা ট্রলার থেকে ১০ জনের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি পাওয়ার কথা জানিয়ে পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেছেন, তারা ওই ঘটনার ‘মূলে যাওয়ার’ চেষ্টা করছেন।

বুধবার বিকেলে কক্সবাজারের পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন পুলিশের মহাপরিদর্শক।

আইজিপি মঙ্গলবার কক্সবাজার সফরে যান। বুধবার সকালে উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের মুখোমুখি হন।

গত ২৩ এপ্রিল কক্সবাজার শহরের উপকূলবর্তী এলাকায় একটি মাছ ধরার ট্রলার থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ১০ জনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এদের মধ্যে ছয় জনের পরিচয় শনাক্তের পর মরদেহগুলো স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

যে চারজনের মরদেহ বাকি রয়েছে, তাদের পরিচয়ও প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করার কথা বলেছে পুলিশ। তবে পুরোপুরি নিশ্চিত না হওয়ায় সেগুলো কারও হাতে দেওয়া হয়নি।

এ ঘটনায় কক্সবাজার সদর থানায় ট্রলার মালিক সামশুল আলম ওরফে সামশু মাঝির স্ত্রী রোকেয়া বেগম মামলা করেছেন।

এক নম্বর আসামি মাতারবাড়ির এলাকার ট্রলার মালিক বাইট্টা কামাল এবং ৪ নম্বর আসামি ট্রলার মাঝি করিম সিকদারকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। ওই দুই জন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ এসেছে।

এজাহারের উল্লেখ থাকা অপর দুই আসামি হলেন মাতারবাড়ির আনোয়ার হোসেন ও বাবুল মাঝি। তাদেরকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

আইজিপি বলেন, “কেউ কেউ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছে। এ নিয়ে আমরা আরও কাজ করে যাচ্ছি। যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তাদের তথ্য সংগ্রহ করে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। এ ব্যাপারে কাউকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে না।”

 “যে কোনোভাবে হোক না কেন, ১০টা প্রাণহানি হয়েছে। এই ঘটনা শোনার পর পরই আমরা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পাঠিয়েছি। এখানে সিআইডি টিম, পিআইবি টিম পাঠানো হয়েছে। তাদের সঙ্গে কাজ করেছে র‌্যাবও। তারা খোঁজ খবর নিয়ে ঘটনার মূল কারণ বের করার চেষ্টা করছে।”

স্বাভাবিক জীবনে ফেরার ঘোষণা দিয়ে আত্মসর্মপণ করা জলদস্যুদের ওপর পুলিশ নজর রাখছে বলেও জানান আইজিপি।

তিনি বলেন, “তারা ভালো হতে চেয়েছে বলে আমরা সুযোগ দিয়েছি। কিন্তু আত্মসমর্পণের কথা বলে তারা পুনরায় অপরাধ সংগঠিত করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

অপরাধ ঘটলে ‘কাউকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে না’ দাবি করে পুলিশ প্রধান বলেন, “অপরাধী যেই হোক, তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলার স্বাভাবিক গতি কেউ ভঙ্গ করার চেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

কোথাও আইন-বিরুদ্ধ কিছু ঘটলে জাতীয় জরুরি সেবার নম্বর ৯৯৯ এ যোগাযোগ করার পরামর্শও দেন তিনি।

আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, “এই পরিষেবায় আমাদের টিম দক্ষতার পরিচয় দিচ্ছে। কিছুদিন আগেও রাজবাড়ীতে একটা ডাকাতির ঘটনায় ৯৯৯ এ কল দিয়ে সহায়তা পেয়েছে। এ ধরনের ঘটনা ঘটলে আপনারা দ্রুত সময়ের মধ্যে আমাদের তথ্য দিলে যে কেউ পুলিশের সহায়তা পাবে।”

সকাল সাড়ে ১০ টায় কক্সবাজার থেকে উখিয়ার কুতুপালং ১৯ নম্বর ক্যাম্পে গিয়ে পৌঁছেন আইজিপি। ওই ক্যাম্পের ৮ এপিবিএন কার্যালয়ে যান তিনি।

তিনি আন্তর্জাতিক সংস্থা ও শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গেও বৈঠক করেন এবং একটি গাছ রোপণ করেন।

সাড়ে ১১ টার দিকে তিনি উখিয়ায় ৮ এপিবিএন সদর কার্যালয়ে গিয়েও কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এরপর কক্সবাজার শহরে ফেরেন।

পুরনো খবর

Also Read: কক্সবাজারে ট্রলারে ১০ মরদেহ: গ্রেপ্তার ২ মাঝি রিমান্ডে

Also Read: ট্রলারে ১০ লাশ: গ্রেপ্তার ২, উত্তর মেলেনি অনেক প্রশ্নের

Also Read: ট্রলারে ১০ মরদেহ: ডিএনএ পরীক্ষা ছাড়াই ৬ মরদেহ নিল পরিবার

Also Read: কক্সবাজারে ট্রলারে ১০ মরদেহ: একাধিক দাবিদার, হবে ডিএনএ পরীক্ষা

Also Read: কক্সবাজারে ট্রলারে ১০ লাশ: যা যা জানা যাচ্ছে

Also Read: কক্সবাজারে মাছ ধরার ট্রলার থেকে হাত-পা বাঁধা ১০ মরদেহ উদ্ধার