“নুরুল আমিন আমাকে ফোন করে হুমকি দেন, কয়রা বাজারে তুই ব্যবসা করতে পারবি না।”
Published : 20 Sep 2024, 06:55 PM
খুলনার কয়রা উপজেলায় বিএনপির এক অংশের সমর্থিত ব্যবসায়ীর ওপর হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে আরেক অংশের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।
কয়রা কপোতাক্ষ মহাবিদ্যালয়ের সামনে বৃহস্পতিবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন কয়রা থানার ওসি (তদন্ত) শাহ আলম।
তিনি বলেন, “মূলত বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। আমি ঘটনাস্থলে থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করি। তবে এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। আহত ব্যবসায়ীরাও বিএনপি কর্মী।”
হামলা ও মারধরে ৫৫ বছর বয়সী মুনছুর আলী নামে এক ব্যবসায়ীর পা ভেঙে গেছে। কয়রা বাজারের ‘মায়ের দোয়া মেশিনারিজ’ নামের একটি দোকান চালান তিনি।
মুনছুর আলীর ভাতিজা মনিরুজ্জামান বলেন, “কয়রা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোমরেজুল ইসলাম ও সদস্যসচিব নুরুল আমিন বাবুল কয়রায় দুটি আলাদা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। আমরা বিএনপি সমর্থক হিসেবে মোমরেজুলের অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ায় নুরুল আমিন আমাদের কয়েকদিন ধরে হুমকি-ধামকি দিচ্ছিলেন।”
“বৃহস্পতিবার নুরুল আমিন আমাকে ফোন করে হুমকি দেন, কয়রা বাজারে তুই ব্যবসা করতে পারবি না। ব্যবসা করতে চাইলে এক লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে। তখন আমি ফোনে এর প্রতিবাদ করি। এতে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ২০-৩০ জন নেতাকর্মী নিয়ে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ পাশের কয়েকটি দোকানে হামলা ও ভাঙচুর চালান।”
তিনি বলেন, “এ ঘটনায় আমার ছোট চাচা ব্যবসায়ী মুনছুর আলীর পা ভেঙে গেছে। এছাড়া আমার ছোট ভাই মিলন, চাচাত ভাই আল মামুন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাদের কয়রা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।”
মুনছুর আলীর শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে মনিরুজ্জামান জানান।
কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা বিএনপির সদস্য রবিউল ইসলামসহ তিনজন বিএনপি নেতা কয়রা বাজারের কপোতাক্ষ মহাবিদ্যালয়ের সামনে যান। সেখানে ‘ভাই ভাই ইঞ্জিনিয়ারিং’ দোকানের মালিক মনিরুজ্জামানকে ডেকে উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব নুরুল আমিনের সঙ্গে তার কী হয়েছে, জানতে চান তারা। এ সময় তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ব্যবসায়ী মনিরুজ্জামান ও বিএনপি নেতা রবিউল ইসলামের মধ্য মারামারি বেঁধে যায়।
এতে রবিউল আহত হন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে কিছুক্ষণ পরই কয়েকজন পুলিশ সদস্য সেখানে উপস্থিত হন। এরপর উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব নুরুল আমিন সেখানে গেলে তার সঙ্গে থাকা নেতা-কর্মীরা ‘পুলিশের সামনেই’ ব্যবসায়ী মনিরুজ্জামানকে মারধর শুরু করেন। তাকে রক্ষা করতে গিয়ে মুনছুর আলীসহ কয়েকজন আহত হন।
এ বিষয়ে নুরুল আমিন বলেন, “স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে জমিজমা ও টাকা নিয়ে ব্যবসায়ী মনিরুজ্জামানের বিরোধ চলছিল। বিষয়টি মীমাংসার জন্য বৃহস্পতিবার বসার কথা ছিল, কিন্তু মনিরুজ্জামান আসেননি। এজন্য তার কাছে হাজির না হওয়ার কারণ জানতে চাওয়া হয়। কথা বলার মধ্যে আমার ওপর তিনি ক্ষিপ্ত হন। পরে আমি ওই স্থান থেকে চলে আসি।”
তিনি বলেন, “পরে শুনেছি, সেখানে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আমাকে রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য তারা মিথ্যা- বানোয়াট কথা ছাড়াচ্ছে।”
ওসি (তদন্ত) শাহ আলম বলেন, “আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে এখনও কোনো অভিযোগ পাইনি। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।”