বুধবার সকালে মদন উপজেলা সদরে শফী আহমেদের আরেক দফা জানাজা হবে। পরে তাকে নেত্রকোণা পৌর কবরস্থানে দাফন করা হবে।
Published : 04 Jun 2024, 09:51 PM
নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক, আওয়ামী লীগ নেতা শফী আহমেদকে নেত্রকোণায় শোক ও শ্রদ্ধায় শেষ বিদায় জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে ঢাকা থেকে লাশবাহী গাড়িতে করে জেলা শহরের মোক্তারপাড়ার বাসা আজিজ ভবনে এসে পৌঁছায় শফী আহমেদের মরদেহ।
প্রিয় মানুষটিকে দেখতে সেখানে আগে থেকেই স্বজনদের পাশাপাশি দলীয় নেতাকর্মী, সহযোদ্ধা, অনুসারী, শুভাকাঙ্ক্ষীসহ সর্বস্তরের মানুষ ভিড় জমিয়েছিলেন। শফী আহমেদের মরদেহের গাড়ির পাশে স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। শোকে মূহ্যমান দলীয় অনেক নেতা-কর্মীর চোখেও ছিল জল।
সন্ধ্যায় মাগরিবের পর মোক্তারপাড়া মাঠে শফি আহমেদের জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। জানাজার আগে আওয়ামী লীগের সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল দলীয় পতাকা দিয়ে শফি আহমেদের মরদেহ ঢেকে দেন। পরে শুরু হয় ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো।
এ সময় নেত্রকোণা-২ আসনের সংসদ সদস্য আশরাফ আলী খান খসরু, নেত্রকোণা-৩ আসনের সংসদ সদস্য ইফতিখার উদ্দিন তালুকদার পিন্টু, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অসিত সরকার সজল, পৌর মেয়র নজরুল ইসলাম খান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আমিরুল ইসলাম, সহসভাপতি প্রশান্ত রায়, সাধারণ সম্পাদক শামছুর রহমান, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মারুফ হাসান খান অভ্র ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, কমিউনিস্ট পার্টি, ছাত্রলীগ, ছাত্র ইউনিয়ন, উদীচীসহ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন, বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরাও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান তাদের প্রিয় নেতাকে।
এ সময় শফী আহমেদের ছাত্র আন্দোলন ও রাজনীতি নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন দলীয় নেতারা।
আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য অসীম কুমার উকিল বলেন, “গণতন্ত্রের জন্যে আজীবন লড়াই করে গেছেন শফী আহমেদ। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণে অবদান রেখে তিনি আমাদের ঋণী করে গেছেন। সংস্কৃতিবান এই মানুষটি জীবনভর শুদ্ধাচারের কথা বলেছেন।”
আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য শফী আহমেদের জানাজায় হাজারো মানুষ অংশ নেন। জানাজা শেষে তার মরদেহ নেত্রকোণা সদর হাসপাতালের হিমাগারে রাখা হয়েছে।
জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক গাজী মোজাম্মেল হোসেন টুকু জানান, বুধবার সকাল ১০টায় মদন উপজেলা সদরে তার আরেক দফা জানাজা হবে। পরে তাকে নেত্রকোণা পৌর কবরস্থানে দাফন করা হবে।
সোমবার দুপুরে রাজধানীর উত্তরার বাসায় খাওয়া-দাওয়ার পর নিজের ঘরে ঘুমাতে যান শফী আহমেদ। ঘুমের মধ্যেই তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন। পরে উত্তরার একটি হাসপাতালে নেওয়া হলে সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। জাসদ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শফী আহমেদের বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় শফী আহমেদের কফিন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে নিয়ে আসা হয়। সেখানে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আয়োজনে দুপুর সোয়া ১২টা পর্যন্ত শ্রদ্ধা নিবেদন পর্ব চলে। বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা ফুল দিয়ে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
এর আগে বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে তার জানাজা হয়।
শফী আহমেদের গ্রামের বাড়ি নেত্রকোণার মদন উপজেলার মাখনা গ্রামে। তার মৃত্যুতে মদন উপজেলাতেও শোকাবহ পরিবেশ বিরাজ করছে।
আরও পড়ুন:
ফুলেল শ্রদ্ধায় শফী আহমেদকে শেষ বিদায়