ফেনীর সোনাগাজী উপজেলায় হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক এক আসামিকে ১৭ বছর পর গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
বুধবার রাতে উপজেলার সফরপুর গ্রাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন র্যাব-৭ ফেনী ক্যাম্পের কোম্পানি অধিনায়ক স্কোয়াড্রন লিডার মোহাম্মদ সাদেকুল ইসলাম।
গ্রেপ্তার আসাদুজ্জামান খান পিন্টু (৪৭) সোনাগাজী উপজেলার সফরপুর গ্রামের আইয়ুব খানের ছেলে। তিনি স্থানীয় বিদ্যালয়ের দপ্তরি পদে চাকরি নেওয়াকে কেন্দ্র করে মাহবুবুল হক নামে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি।
স্কোয়াড্রন লিডার সাদেকুল জানান, আসাদুজ্জামান গ্রেপ্তার এড়াতে ছদ্মনাম ধারণ করে দীর্ঘ ১৭ বছর নাম ও ঠিকানা পরিবর্তন করে মালয়েশিয়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন পেশায় আত্মগোপন করেছিলেন।
পরে তিনি পুনরায় সোনাগাজীর বাড়িতে বসবাস শুরু করছেন এমন তথ্যে অভিযান চালিয়ে বুধবার রাতে তাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
মামলার নথির সূত্রে র্যাব কর্মকর্তা সাদেকুল জানান, ১৯৯৬ সাল থেকে সোনাগাজীর সাহেবের হাট আলহাজ সফিউল্যাহ উচ্চ বিদ্যালয়ে দপ্তরি পদে চাকরি করতেন মাহবুবুল হক (৪৫)। পরবর্তীতে তার নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে স্থানীয় দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব হয়।
এ সময় প্রতিপক্ষ দল মাহবুবুল হককে চাকরি ছেড়ে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন করেন। কিন্তু তিনি চাকরি ছাড়তে অপারগতা প্রকাশ করেন।
এর জের ধরে ২০০২ সালের ২২ এপ্রিল দুপুরে সাহেবের হাট আলহাজ সফিউল্যাহ উচ্চ বিদ্যালয়ে মাঠে দুর্বৃত্তরা গুলি করে ও ছুরি দিয়ে বুকে-পিঠে আঘাত করে মাহবুবুল হককে হত্যা করে।
এ ঘটনার সময় মাহবুবুল হকের সপ্তম শ্রেণিতে পডুয়া ছেলে ও নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে স্কুলের শ্রেণি কক্ষেই ছিল।
ওই ঘটনায় নিহতের স্ত্রী সুলতানা রাজিয়া বাদি হয়ে ১০ জনকে আসামি করে সোনাগাজী মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে মামলার বিচার কাজ শুরু হয়।
স্কোয়াড্রন লিডার সাদেকুল আরও জানান, বিচার চলার সময়ে আসামি আসাদুজ্জামান খান পিন্টু আদালত থেকে জামিন নিয়ে ২০০৬ সালে আত্মগোপনে চলে যান। পলাতক ছিলেন অন্য আসামিরাও।
পরে পুলিশের তদন্ত এবং সাক্ষীদের সাক্ষ্য শেষে আসামিদের অনুপস্থিতিতে ২০১১ সালের ৩০ মে আদালত আসামি আসাদুজ্জামান খান পিন্টুসহ পাঁচ জনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড, ৫ হাজার টাকা জরিমানা; অনাদায়ে আরও ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন।
একই সাথে বিচারক পাঁচ জনকে খালাস প্রদান করেন।
স্কোয়াড্রন লিডার মোহাম্মদ সাদেকুল ইসলাম আরও জানান, গ্রেপ্তার আসামিকে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বৃহস্পতিবার সোনাগাজী মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।