জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জানান, মাছের ঘের ভেসে যাওয়া প্রায় একশ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
Published : 27 May 2024, 01:50 PM
ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে জোয়ারের পানিতে বাগেরহাটের বিভিন্ন অঞ্চলে বাঁধ ভেঙে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে জেলায় ২০ হাজারের বেশি মাছের ঘের ভেসে গেছে।
এদিকে জেলার সদর, শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ, মোংলা ও রামপাল উপজেলার নদীর তীরবর্তী ও নিম্নাঞ্চলে কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বাড়িঘরে পানি উঠে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছে পরিবারগুলো। তাদের রান্না-খাওয়া বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
বাগেরহাট সদর উপজেলার কাড়াপাড়া ইউনিয়নের মাঝিডাঙা আশ্রয় প্রকল্প, রাধাবল্লভ, গোবরদিয়া এবং বিষ্ণুপুর গ্রামের চারশর বেশি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
মাঝিডাঙা গ্রামের সোহরাব হোসেন বলেন, “ভৈরব নদের তীরে আমরা দুইশর বেশি পরিবার বসবাস করি। দুর্যোগ আসলের রাস্তা উপচে নদীর পানি বাড়ি ঘরে চলে আসে। প্রতিটি ঘরে পানি উঠে গেছে। চুলায় পানি উঠে রান্না খাওয়া বন্ধ।”
তিনি বলেন, নদীগুলোতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে অন্তত চার থেকে পাঁচ ফুট বৃদ্ধি। এমন পানির চাপ আমার বয়সে দেখিনি। আমার দেখা এমন জলোচ্ছ্বাস নজিরবিহীন। ”
একই এলাকার রমিছা বেগম বলেন, “বাড়ি ঘরে পানি উঠে যাওয়ায় অনেকে পরিবার নিয়ে পাশের আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটে যাচ্ছে। আমরা যাইনি। পরিবার নিয়ে এখানেই আছি।”
বাগেরহাটের জেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ডিএফও) এস এম রাসেল দুপুরে বলেন, “জেলার ৯ উপজেলাতেই মাছের ঘের (বাগদা, গলদা চিংড়ি ও সাদা মাছ) রয়েছে। জোয়ারের পানিতে ২০ হাজারের বেশি মাছের ঘের ভেসে গেছে।”
এতে প্রায় একশ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন এই মৎস্য কর্মকর্তা।
জেলা প্রশাসক মোহা. খালিদ হোসেন সোমবার দুপুরে বলেন, জেলার ৩৫৯টি আশ্রয় কেন্দ্রের ৭০ হাজারের বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। ঝড়ো হাওয়া ও অবিরাম বৃষ্টি হওয়ায় এখনও তারা আশ্রয় কেন্দ্রে রয়েছেন।
“ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবের জোয়ারের জলোচ্ছ্বাসে বাঁধ ভেঙে ও উপচে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ঝড়ে জেলার ৭৫টি ইউনিয়নে দশ হাজারের বেশি কাঁচা-পাকা বাড়িঘর সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে ৩৫ হাজার ঘরবাড়ি।”
প্রাথমিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির হিসাব এটি। দুর্যোগ কমে গেলে ক্ষয়ক্ষতির সঠিক হিসাব নিরূপণ করে জানানো হবে বলে জানান এই জেলা প্রশাসক।