এর আগে শনিবার কুলাউড়ার কর্মদা ইউনিয়নের পূর্ব টাট্টিওয়ালি গ্রামের বাইশালী বাড়ি এলাকার অভিযানে আটক হয়েছিলেন ডা. রানার স্ত্রী মাইশা।
Published : 14 Aug 2023, 06:56 PM
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় নতুন জঙ্গি সংগঠন ইমাম মাহমুদের কাফেলার সদস্য সন্দেহে আটক ১৭ জনের মধ্যে চিকিৎসক সোহেল তানজিম রানাও আছেন বলে নিশ্চিত করেছেন এক স্বজন।
কুলাউড়ার কর্মদা ইউনিয়নের আছকরাবাদ সিএনজি স্ট্যান্ড এলাকা থেকে সোমবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে তাদের আটক করে স্থানীয় বাসিন্দারা। পরে তাদের ইউনিয়ন পরিষদের একটি কক্ষে পুলিশ পাহারায় আটক রাখা হয়।
সেখানে থাকা ডা. সোহেল তানজিম রানার একটি ছবি তুলে তার স্ত্রীর বড় ভাই ওমর ফারুককে পাঠায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।
ওমর ফারুক চিকিৎসক রানার পরিচয় নিশ্চিত করে বলেন, “তিনি আমার ভগ্নিপতি।”
ডা. রানা (২৭) সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার সয়দাবাদ ইউনিয়নের পোড়াবাড়ি গ্রামের কৃষক আবদুল হান্নানের ছেলে। তিনি সিরাজগঞ্জের একটি বেসরকারি হাসপাতালে কাজ করতেন। স্ত্রী মাইশা ইসলাম হাফসাকে (২০) নিয়ে কর্মস্থলের পাশেই ভাড়া বাসায় থাকতেন।
গত ২৬ জুলাই থেকে স্বামী-স্ত্রী নিখোঁজ ছিলেন বলে পরিবার জানায়। এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন ডা. রানার বাবা আবদুল হান্নান।
শুক্রবার রাত থেকে কর্মদা ইউনিয়নের পূর্ব টাট্টিওয়ালি গ্রামের বাইশালী বাড়ি এলাকার একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে যে ১০ জন নারী-পুরুষ ও তিন শিশুকে আটক করে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল (সিটিটিসি) ইউনিট। তাদের মধ্যে ডা. রানার স্ত্রী মাইশাও ছিলেন।
পুলিশ ও স্থানীয়দের ধারণা, ডা. রানাও সেখানে ছিলেন। অভিযান টের পেয়ে তিনি আগেই সেখান থেকে পালিয়ে যান এবং পাশের একটি জঙ্গলে গিয়ে আশ্রয় নেন।
সোমবার সেখান থেকে বেরিয়ে ১৭ জনের একটি দল স্থানান্তরিত হওয়ার সময় সন্দেহ হলে জনতা তাদের ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে আটকে রাখে এবং পুলিশে খবর দেয়।
কর্মধা ইউপি চেয়ারম্যান মুহিবুল ইসলাম আজাদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ১৭ জনের ওই দলটি আছকরাবাদ সিএনজি স্ট্যান্ড থেকে কুলাউড়ার দিকে যেতে চাইছিল। অটোরিকশা চালকদের সন্দেহ হলে এলাকাবাসীকে নিয়ে তারা সন্দেহভাজন ওই দলটিকে আটক করে।
“পরে টহল পুলিশও সেখানে পৌঁছায়। তখন কয়েকটি অটোরিকশায় করে তাদের ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে যাওয়া হয়।”
চেয়ারম্যান মুহিবুল বলছেন, নতুন ওই জঙ্গি দলের নেতা কথিত ইমাম মাহমুদও আটকদের মধ্যে আছেন বলে তাদের ধারণা।
কুলাউড়া থানার ওসি আব্দুস ছালেক বলেন, “আটকদের ইউনিয়ন পরিষদের একটি বড় কক্ষে তালাবন্ধ করে রাখা হয়েছে। পুলিশের একটি দল সেখানে আছে। পরে এ বিষয়ে বিস্তারিত বলা যাবে।”
খবর পেয়ে ঢাকা থেকে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ইউনিটের (সিটিটিসি) একটি দল কুলাউড়ার উদ্দেশে রওনা হয়েছে বলে স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
কর্মদা ইউনিয়ন পরিষদের নারী সদস্য রাহেনা আক্তার জানান, শনিবারের ওই অভিযানের পর থেকেই পুরো এলাকায় নজর রাখছিলেন তারা। পুলিশও টহল জোরদার করেছিল।
সিটিটিসির অভিযানের সময় ওই জঙ্গি দলের একটি অংশ পাহাড়ি এলাকায় আত্মগোপান করে ছিল বলে রাহেনার ধারণা। এলাকা ছাড়তে তারাই সোমবার সকালে বের হয়ে আসে বলে তিনি মনে করছেন।
আরও পড়ুন:
‘বানাইতে চাইলাম ডাক্তার, ছেলে হইল জঙ্গি’ আফসোস কৃষক বাবার
কুলাউড়ায় ‘জঙ্গি আস্তানায়’ অভিযান, আটক ১০
সিরাজগঞ্জের নিখোঁজ চিকিৎসকের স্ত্রী আটক কুলাউড়ার ‘জঙ্গি আস্তানা’ থেকে
বগুড়ার পলাতক আসামি সুমনের স্ত্রী আটক কুলাউড়ার ‘জঙ্গি আস্তানায়’