আগের চুক্তি অনুযায়ী ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে রুশ কোম্পানিটি সেখানে তিনটি কূপের খনন শেষ করবে।
Published : 19 Aug 2022, 07:00 PM
ভোলার শাহবাজপুর গ্যাসক্ষেত্রের টবগী ১ গ্যাস কূপের খনন শুরু করেছে রাশিয়ার কোম্পানি গ্যাজপ্রম।
শুক্রবার সকাল থেকে এ গ্যাসক্ষেত্রের নতুন কূপের খননের কাজ শুরু হয়। পর্যায়ক্রমে সেখানকার আরও দুটি কূপের খননের কাজ করবে রুশ কোম্পানিটি বলে জানিয়েছেন বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে এ কূপের খনন কাজ উদ্বোধন করেন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. মাহবুব হোসেন।
দুই বছর আগে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানির (বাপেক্স) ভূতাত্ত্বিক জরিপের ভিত্তিতে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে টবগী ১ কূপ থেকে দৈনিক ২০ থেকে ২৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়ার আশার কথা জানানো হয়।
তবে উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বলা হয়, খনন শেষ হলেই বোঝা যাবে এখানে কত গ্যাস রয়েছে।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান মো. নাজমুল আহসানসহ বাপেক্সের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এ গ্যাসক্ষেত্রে নতুন পাওয়া আরও দুটি অনুসন্ধান কূপ ইলিশা ১ ও ভোলা নর্থ ২ এর খনন করবে রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত জ্বালানি খাতের কোম্পানি গ্যাজপ্রম। তবে এ দুটোতে কবে খননের কাজ শুরু হবে সেই তারিখ বলেননি বাপেক্সের এমডি মোহাম্মদ আলী।
শুক্রবার তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বাপেক্সের সঙ্গে গ্যাজপ্রমের একটি চুক্তি হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে গ্যাজপ্রম খনন কাজ সম্পন্ন করবে। তখন জানা যাবে এখানে কী পরিমাণ গ্যাস রয়েছে।”
দুই বছর আগে বাপেক্সের একটি অনুসন্ধান দল ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ করে গ্যাসের জন্য সম্ভাবনাময় বিবেচিত ভোলার তিনটি স্থানে গ্যাসের সন্ধান পায়।
পরে সেগুলোর নাম দেওয়া হয় ইলিশা ১, ভোলা নর্থ ২ ও টবগী ১ গ্যাস কূপ। এগুলো নিয়ে দ্বীপ জেলা বর্তমান গ্যাস কূপের সংখ্যা দাঁড়ায় নয়টি।
বাপেক্সের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বর্তমানে শাহবাজপুর গ্যাসক্ষেত্র থেকে প্রতিদিন গড়ে উত্তোলন হচ্ছে ৪৫-৪৬ মিলিয়ন ঘনফুট, যা চারটি বিদ্যুৎকেন্দ্র, একটি কারখানা ও আবাসিকে সরবরাহ করা হচ্ছে।
১৯৯৩-৯৪ সালের দিকে ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়নে শাহবাজপুরে গ্যাসক্ষেত্র খনন শুরু হয়। সেখানে বর্তমানে চারটি কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলন হচ্ছে। শাহবাজপুরে প্রায় ১ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন ঘনফুট (টিসিএস) গ্যাস মজুদ রয়েছে।
এ চারটি কূপ ছাড়াও শাহবাজপুর ইস্ট ও ভোলা নর্থ নামে আরও দুটি কূপে মোট গ্যাসের মজুদের পরিমাণ প্রায় ১ দশমিক ৭ টিসিএফ।
এর মধ্যে শাহবাজপুর ইস্ট কূপে মজুদ রয়েছে ৭০০ বিলিয়ন ঘনফুট এবং ভোলা নর্থ গ্যাসক্ষেত্রে রয়েছে প্রায় ১ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস।
২০১০ সালে রাশিয়া সফরকালে দেশটির প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশে গ্যাস অনুসন্ধান ও উন্নয়ন কাজে সহযোগিতার অনুরোধ জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সেই অনুরোধের প্রেক্ষিতে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংস্থা গ্যাজপ্রম প্রাথমিকভাবে টার্ন কি চুক্তির ভিত্তিতে বাপেক্স, বাংলাদেশ গ্যাসফিল্ড কোম্পানি লিমিটেড (বিজিএফসিএল) ও সিলেট গ্যাসফিল্ড লিমিটেডের আওতাভুক্ত ১০টি কূপ খনন করে।
কোম্পানিটি শ্রীকাইল-৪, ভোলার শাহবাজপুর ইস্ট-১ ও ভোলা নর্থ-১ কূপগুলোর খনন কাজের সঙ্গে ছিল ।
ভোলায় গ্যাস খুঁজতে বাপেক্সের সঙ্গে যুক্ত হল গ্যাজপ্রম
বাংলাদেশে ব্যবসা বাড়াতে চায় গ্যাজপ্রম
বাপেক্সের সক্ষমতা বাড়লেও শাহবাজপুরে গ্যাজপ্রম কেন, বিশেষজ্ঞদের প্রশ্ন