মৃত পাখিগুলোর মধ্যে ২টি ছিল তিলা ঘুঘু এবং বাকি ১০টি ছিল বনছাতারে পাখি (আঞ্চলিক নাম খেই খেই পাখি)।
Published : 29 Feb 2024, 12:01 PM
গাজীপুরে শ্রীপুর উপজেলায় কয়েকটি পাখির মৃত্যুতে ‘মড়কের’ গুজবের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে নমুনা সংগ্রহ করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ।
বন অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বায়োডাইভার্সিটি কর্মকর্তা রুবিয়া ইসলাম জানান, মঙ্গলবার গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার সিটপাড়া এলাকায় কয়েকটি গাছের নিচে কিছু পাখির মৃতদেহ পাওয়া যায়।
পরে এসব পাখির ভিডিও তুলে কে বা কারা ফসল নষ্ট করে ফেলায় কৃষকদের দেওয়া বিষ বা বিষ মিশ্রিত পানি খেয়ে অর্ধশতাধিক পাখি মারা গেছে বলে ফেসবুকে প্রচার করে।
ভিডিওটি ‘ভাইরাল’ হওয়ার সূত্র ধরে প্রকৃত ঘটনা জানতে বুধবার দুপুরে ঘটনাস্থলে যান বন অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের কর্মকর্তারা।
বায়োডাইভার্সিটি অফিসার রুবিয়া ইসলাম ছাড়াও তার সঙ্গে ঢাকার খামারবাড়িতে কর্মরত প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ভেটেরিনারী সার্জন মো. ফয়সাল আতিক, গাজীপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের ভেটেরিনারী সার্জন মো. মোস্তাফিজুর রহমান, বনবিভাগের ভাওয়াল রেঞ্জ অফিসার কাজী নাজমুল হোসেনসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
তারা বুধবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও তথ্য সংগ্রহ করেছেন।
রুবিয়া ইসলাম বলেন, স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়- একজন বয়স্ক নারী সকালে হাঁটতে গিয়ে এবং তাওহিদ (৮) নামের এক মাদ্রাসা ছাত্র ওই এলাকার গার্ডেনিয়া ওয়্যার লিমিটেড নামের পোশাক কারখানার সামনে গাছের নিচে কয়েকটি মৃত পাখি পড়ে থাকতে দেখেন।
“আশেপাশে থেকে এ রকম ১২টি পাখি তারা একস্থানে জড়ো করে রাখেন। এদের মধ্যে ২টি ছিল তিলা ঘুঘু এবং বাকি ১০টি ছিল বনছাতারে পাখি (আঞ্চলিক নাম খেই খেই পাখি)।
“সেই পাখিগুলির মৃতদেহের ভিডিও করেই অর্ধশতাধিক পাখির মৃত্যুর গুজব ছড়ানো হয়েছে।”
প্রাথমিকভাবে এটি একটি ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ হিসেবে ধারণা করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, সিট পাড়া এলাকার কয়েকটি গাছ এবং আশেপাশে রয়েছে কৃষকদের শস্যক্ষেত। আগের দিন হয়ত কেউ সেখানে কীটনাশক স্প্রে/প্রয়োগ করেছে। ওই কীটনাশক খাওয়া কোনো পোকামাকড় খেয়ে বিষক্রিয়া হওয়ার কারণেই এরকম ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।
“সকাল বেলা খালি পেটে পাখির ফিডিং টাইমে ওই পোকামাকড় খাওয়ার পরে হয়ত পাখি মৃত্যুর কারণ হতে পারে। বিষ প্রয়োগ করে উদ্দেশ্যমূলকভাবে বা ইচ্ছাকৃতভাবে পাখি মারার জন্য কেউ বিষ প্রয়োগ করার কোনো তথ্য আমরা পাইনি। এটা ছিল বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা।”
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি সার্জন মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, মৃত পাখিগুলোর মধ্যে ১০টি ঢাকায় আইআরডিসিআর ল্যাবে ময়নাতদন্তের জন্য নমুনা হিসেবে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর পাখিগুলোর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।