“স্থানীয় আধিপত্য ও প্রভাব বিস্তারের বিষয়ও রয়েছে এ হত্যার পেছনে।”
Published : 15 Jan 2025, 06:13 PM
খুনের বদলা নিতেই খুলনা সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা গোলাম রব্বানী টিপুকে গুলি করে হত্যা করা হয় বলে দাবি করেছে পুলিশ।
এ হত্যাকাণ্ডে ঋতু নামের ২৪ বছর বয়সী এক নারীকেও ‘ফাঁদ’ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল।
বুধবার দুপুরে কক্সবাজার পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার রহমত উল্লাহ িএ দাবি করেন।
গত ৯ জানুয়ারি কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সি-গাল পয়েন্টে গোলাম রব্বানী টিপু হত্যার ঘটনায় মঙ্গলবার মৌলভীবাজার থেকে তিনজনকে গ্রেপ্তারের পর হত্যাকাণ্ডের কারণ হিসেবে এসব তথ্য জানায় পুলিশ।
গ্রেপ্তার তিনজন হলেন- খুলনার দেওয়ান মোল্লাপাড়ার মো. সেলিম আকন্দের মেয়ে ঋতু (২৪), একই এলাকার জামাল শেখের ছেলে শেখ শাহরিয়ার ইসলাম পাপ্পু (২৭) ও মধ্য কারিগর পাড়ার মো. হায়দার সরদার অদুদের ছেলে গোলাম রসুল (২৫)।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার রহমত উল্লাহ বলেন, “চরমপন্থি সংগঠন পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টি খুলনার নেতা ছিলেন হুজি শহীদুল। ২০১৩ সালে যাকে হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিলেন কাউন্সিলর টিপু। হুজি শহীদুল হত্যা মামলার চার আসামির মধ্যে একজনকে একইভাবে ২০২২ সালে হত্যা করা হয়। আর হুজি শহীদের ভাতিজা হলেন পুলিশের হাতে আটক শেখ শাহরিয়ার পাপ্পু। সেখান থেকেই শত্রুতা ও ক্ষোভ তৈরি হয়।
“স্থানীয় আধিপত্য ও প্রভাব বিস্তারের বিষয়ও রয়েছে এ হত্যার পেছনে। খুব সুকৌশলে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকাণ্ড করার জন্য আসামিরা কক্সবাজারকে সুইটেবল প্লেস মনে করেছেন।”
ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে এ পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, “এই তিনজনই হত্যার সময় কক্সবাজার অবস্থান করছিলেন। টিপুর সঙ্গে থাকা নারী, কাউন্সিলর টিপুর গতিবিধি জানিয়েছেন খুনে জড়িত পাপ্পুকে। সহযোগী গোলাম রসুলসহ পাপ্পু উঠেছিলেন কক্সবাজার শহরের কক্স কুইন রিসোর্টে। খুনের পর তারা অস্ত্রটি ওই রিসোর্টের ২০৮ নম্বর কক্ষের চিলেকোঠায় রেখে পালিয়ে যান। পরে অস্ত্রটি পুলিশ উদ্ধার করে।”
অস্ত্রের যোগানদাতা কে বা কারা তা তদন্ত করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন পুলিশ সুপার রহমত উল্লাহ।
তিনি বলেন, “ঘটনার পরপর আটক হয়ে কারাগারে থাকা খুলনার আরেক সাবেক কাউন্সিলর শেখ হাসান ইফতেখার চালুর কক্সবাজারে আসার কারণ ও কক্সবাজারে টিপুর বন্ধু মেজবাহ উদ্দিন ভুট্টোর বিষয়েও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।”
৫৪ বছর বয়সী গোলাম রব্বানী টিপুকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকত সংলগ্ন হোটেল সি-গালের সামনের ফুটপাতে গুলি করে হত্যা করা হয়।
এ ঘটনায় খুলনা সিটি করপোরেশনের আরেক সাবেক কাউন্সিলর শেখ হাসান ইফতেখার চালু, টিপুর বন্ধু মেজবাহ উদ্দিন ভুট্টো গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে রয়েছেন। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড চাওয়া হলেও শুনানির দিন নির্ধারণ হয়নি।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শুক্রবার অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন গোলাম রব্বানীর ভগ্নিপতি মো. ইউনুস আলী শেখ।