গৃহবধূ হত্যায় দুইজনের মৃত্যুদণ্ড, মেয়েসহ যাবজ্জীবন ২ জনের

২০২০ সালে ২৩ জানুয়ারি জহিরুল বাদী হয়ে মেয়েসহ পাঁচজনকে আসামি করে সদর থানায় হত্যা মামলা করেন।

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Nov 2023, 09:20 AM
Updated : 8 Nov 2023, 09:20 AM

মানিকগঞ্জে তিন বছর আগে এক নারীকে শ্বাসরোধে হত্যার দায়ে দুইজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং নিহতের মেয়েসহ দুইজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।

মানিকগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ জয়শ্রী সমদ্দার বুধবার চার আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের জিন্দাপির এলাকার মো. রাকিব হোসেন (২৪) এবং নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার পূর্ব গোলমন্ডা এলাকার মো. মাহফুজার রহমান (২০)।

মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি তাদের দুইজনকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে রায়ে।

যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- নিহত গৃহবধূ মাহমুদা আক্তারের (৪৫) মেয়ে জুলেখা আক্তার জ্যোতি (১৯) এবং ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের জিন্দাপির এলাকার মো. শফিউর রহমান নাঈম (২৫)।

রায়ে যাবজ্জীবন সাজার পাশাপাশি তাদের দুইজনকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা; অনাদায়ে আরও এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

এ মামলার আরেক আসামিকে আদালত খালাস দিয়েছে বলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবদুস সালাম জানান।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, মানিকগঞ্জ শহরের দক্ষিণ সেওতা এলাকার জহিরুল ইসলাম ২০২০ সালের ২২ জানুয়ারি ভোরে হাঁটার জন্য বাড়ির বাইরে যান। তিনি বাড়ি ফিরলে মেয়ে জ্যোতি জানান, তার মা মাহমুদা আক্তার রান্না করছেন।

এরপর বাড়ির পঞ্চম তলায় কবুতরকে খাবার দিয়ে জহিরুল নিচে নামতেই মেয়ে জ্যোতিকে কাঁদতে দেখেন। ঘরে গিয়ে তিনি দেখেন, তার স্ত্রী লেপ মুড়ি দিয়ে শুয়ে আছেন। লেপ সরালে দেখেন নাক দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে, দেহে আর জীবনের চিহ্ন নেই।

দ্রুত মানিকগঞ্জ জেলা হাসপাতালে নেওয়া হলে কতর্ব্যরত চিকিৎসক মাহমুদাকে মৃত ঘোষণা করেন। 

একদিন পর ২৩ জানুয়ারি জহিরুল বাদী হয়ে মেয়েসহ পাঁচজনকে আসামি করে সদর থানায় হত্যা মামলা করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো. শামীম আল মামুন তার তদন্ত প্রতিবেদনে বলেন, জ্যোতির বিয়ের তিন বছর পর নাঈমের সঙ্গে তিনি ফেইসবুকে মাধ্যমে সম্পর্কে জড়ান। এরপর ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে জ্যোতির স্বামীর সঙ্গে ডিভোর্স হয়।

জ্যোতির মা নাঈমের বিষয়টি বুঝতে পেরে তাকে অন্যত্র বিয়ে দেওয়ার জন্য মনস্থির করেন। এরপর নাঈমের সহায়তা নিয়ে জ্যোতি তার মাকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করেন।

সে অনুযায়ী নাঈম দেড় লাখ টাকায় অন্য আসামিদের ভাড়া করেন এবং মাহমুদা আক্তারকে হত্যা করা হয়।

২০২০ সালের ৩১ মে এসআই শামীম ওই পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। ২১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত বুধবার চারজনকে দোষী সাব্যস্ত করে রায় দিল।

আসামিপক্ষের আইনজীবী আমিনুল হক আকবর ও খন্দকার সুজন হোসেন বলেন, তারা রায়ে সন্তুষ্ট নন, এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাবেন।