মামলায় ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানার সাবেক ওসিসহ উপজেলা আওয়ামী লীগের দুপক্ষের নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়েছে।
Published : 13 Sep 2024, 09:40 PM
ফরিদপুরের সাবেক সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান নিক্সন চেীধুরী এবং ভাঙ্গা থানার সাবেক ওসি মামুন আল ইসলামসহ ৯৮ জনের নামে দ্রুত বিচার আইনে মামলা হয়েছে; যেখানে উপজেলা আওয়ামী লীগের দুপক্ষের নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়েছে।
বুধবার ভাঙ্গা উপজেলা সেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মো. সাইদুর রহমান সিকদার বাদী হয়ে ফরিদুপর আদালতে মামলাটি করেন।
পরে আদালতের বিচারিক হাকিম নাসিম মাহমুদ মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দেন বলে বাদীপক্ষের আইনজীবী নুর আলম সিদ্দিকী লালন জানান।
মামলায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ, ফরিদপুর জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শাহাদাৎ হোসেন, দুইজন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানসহ আওয়ামী লীগের ৯৮ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত পরিচয় আরও ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলায় বলা হয়েছে, সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারে দাবিতে ৫ জুলাই থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরু হয়। এরই ধারাবাহিতায় ৩ অগাস্ট সকাল ১০টায় ভাঙ্গা ইন্টারচেঞ্জ এলাকায় মহাসড়কে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার একটি শান্তিপূর্ণ মিছিল বের হয়।
এ সময় সাবেক সংসদ সদস্য নিক্সন চেীধুরী, জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শাহাদাৎ হোসেন, ভাঙ্গা থানার সাবেক ওসি মামুন আল ইসলামসহ এক থেকে ১০ নম্বর আসামি আন্দোলন প্রতিহত করতে পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেন।
পরে অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তি ও আসামিদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অংশগ্রহণে হত্যার উদ্দেশে ছাত্র-জনতার মিছিল লক্ষ্য করে হাতবোমা ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। এ ছাড়া ওসি মামুন ও তার সহযোগীরা প্রায় ১০০ রাউন্ড গুলি ও কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপ করেন। এতে বাদীসহ ছাত্র-জনতা ও পথচারী আহত হন।
এক পর্যায়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে বাদীসহ আহত আন্দোলনকারীরা ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে যান। সেখানেও হামলার ভয়ে আহতরা অন্যত্র চিকিৎসা নেন।
এ ঘটনার কয়েকদিন পর সাইদুর রহমান মামলা করতে ভাঙ্গা থানায় গেলে ওসি মামুন আল ইসলাম কোনো আইনি সহায়তা না দেওয়ায় তিনি ফরিদপুর আদালতে যান বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলার বিষয়ে কাজী জাফর উল্লাহর সমর্থক ভাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইফুর রহমান মিরন বলেন, “ওই দিন যদি কোনো ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তি হোক, কিন্তু কোনো নিরীহ ব্যক্তি যেন হয়রানির স্বীকার না হন।”
এদিকে নিক্সন চৌধুরীর সমর্থক ভাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সোবাহান মুন্সী বলেন, “শিক্ষক, বৃদ্ধ, সংবাদকর্মীসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের জড়িয়ে মিথ্যা মামলা করা হচ্ছে। নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আমরা ন্যায় বিচার চাই।”
ভাঙ্গা থানার সাবেক ওসি মামুন আল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, বাদীকে তিনি চেনেন না। অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।
এর আগে ৩ সেপ্টেম্বর সাবেক সংসদ সদস্য নিক্সন চৌধুরীসহ ১১০ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত পরিচয় ৬০ জনকে আসামি করে ভাঙ্গা থানায় একটি মামলা করেন উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদুজ্জামান ওরফে তাসকিন রাজু।