রাঙামাটি কুমার সুমিত রায় জিমনেসিয়াম প্রাঙ্গণ থেকে ‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা’র ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়।
Published : 16 Jan 2025, 02:18 PM
‘আদিবাসী’ শব্দ সম্বলিত গ্রাফিতি পুনর্বহালের দাবিতে ঢাকায় ‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা’র কর্মসূচিতে ‘স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টি’ নামক সংগঠনের হামলার প্রতিবাদে রাঙামাটিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে রাঙামাটি কুমার সুমিত রায় জিমনেসিয়াম প্রাঙ্গণ থেকে ‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র- জনতা’র ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা পরিষদ গিয়ে পুনরায় জিমনেসিয়াম প্রাঙ্গণে ফিরে আসে।
পরে সেখানে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়ক অবরোধ করে সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। এতে রাঙামাটি- চট্টগ্রাম সড়কে সব ধরনের যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
সমাবেশে বক্তারা এই হামলার তীব্র নিন্দা ও বিচার দাবি করেন।
সমাবেশে পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রুমেন চাকমা বলেন, “আদিবাসীদের ওপর এই হামলা পূর্বপরিকল্পিত। উগ্র-মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক সংগঠন ‘স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টি’ মূলত আদিবাসীদের পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি বানচালের জন্য এই হামলা করেছে। এর দায় অন্তর্বর্তী সরকার কোনোভাবেই এড়াতে পারে না। হামলায় জড়িতদের বিচারের জন্য সরকারের কাছ থেকে এখনও পর্যন্ত কোনো ধরনের আশ্বাস পাওয়া যায়নি।”
পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব সমিতি রাঙামাটি জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুমিত্র চাকমা বলেন, “এই ঘটনার পর ঢাকাসহ সারাদেশে আদিবাসী জনগোষ্ঠী চরম নিরাপত্তাহীনতা বোধ করছে।”
তিনি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচারের দাবি জানান।
সমাবেশে হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সভাপতি শান্তিদেবী তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, “আমরা যখন আমাদের নিজেদের আত্মপরিচয়ের কথা বলি, তখন একটি মহল আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের গন্ধ পায়। তারা যখন আন্দোলন করে সেটা আন্দোলন আর আমরা আদিবাসীরা আন্দোলন করলে সেটা আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র। পাহাড়ের মানুষ কখনো বিচ্ছিন্নতার কথা বলে না। আমরা আদিবাসী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি চাই।”
বক্তারা বলেন, ‘আদিবাসী’ স্বীকৃতি এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত লড়াই- সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে। প্রয়োজনে আরও বৃহত্তর থেকে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।
রাঙামাটি সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী সুজন চাকমার সভাপতিত্বে সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন তঞ্চঙ্গ্যা স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার ফোরামের সদসদ্য সবুজ তঞ্চঙ্গ্যা ও রাঙামাটি সরকারি কলেজ শিক্ষার্থী উজাই মারমা।
সমাবেশ শেষে রাঙামাটি জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে পাঁচ দফা দাবি নিয়ে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।