আইয়ুব খান বাবুল বলেন, “একটি টেলিভিশনে ১৭ জনকে আটকের খবর দেখি; সেখানে আমার ছেলেও রয়েছে।”
Published : 16 Aug 2023, 11:20 PM
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় জঙ্গি সন্দেহে আটক ১৭ জনের মধ্যে ২০ দিন আগে বাড়িছাড়া যশোরের সেই কলেজ ছাত্রও রয়েছে বলে জানিয়েছে পরিবার।
সোমবার কুলাউড়ার কর্মধা ইউনিয়নের আছকরাবাদ বাজার এলাকায় স্থানীয়রা যে ১৭ জনকে জঙ্গি সন্দেহে আটক করে তাদের কারও নাম-পরিচয় প্রকাশ করেনি পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি)।
কিন্তু তাদের ছবি সংবাদ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে যশোর শহরের বাসিন্দা আইনজীবী এমডি আইয়ুব খান বাবুল তার কলেজ পড়ুয়া ছেলেকে শনাক্ত করতে পারেন। নটরডেম কলেজের উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষার্থী সেই ছেলে ২৮ জুলাই বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়। পরদিন কোতোয়ালি থানায় তার বাবা সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
১২ জুলাই কুলাউড়ার পূর্ব টাট্টিওয়ালি গ্রামের বাইশালী টিলা থেকে ‘ইমাম মাহমুদের কাফেলা’ নামে ‘জঙ্গি সংগঠনের’ যে ১০ নারী-পুরুষকে আটক করেছিল সিটিটিসি তখনি পরিবার নিশ্চিত হয়েছিল যে, ১৭ বছরের সেই কলেজ ছাত্র ‘আস্তানায়’ ছিল। এই অভিযান নিয়ে রোববার র্যাব যখন ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে সেখানে উপস্থিত ছিলেন কলেজ ছাত্রের বাবা আইয়ুব খান বাবুল।
এ সময় তিনি আবেগঘন ভাষায় ছেলেকে ভুল পথ থেকে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছিলেন। তার একদিন পরেই সেই ছেলে আটক হয়।
আইয়ুব খান বাবুল বলেন, “মঙ্গলবার একটি বেসরকারি টেলিভিশনে ১৭ জনকে আটকের খবর দেখতে পারি। সেখানে দেখেছি আমার ছেলেও রয়েছে।”
থানায় জিডি করার পর থেকে পুলিশের গোয়েন্দা সংস্থা (ডিবি) সেই কলেজ ছাত্রকে খুঁজছিল বলে জানালেন এসআই মো. মফিজুল ইসলাম।
বুধবার তিনি বলেন, “আটক ১৭ জঙ্গির মধ্যে সেই কলেজ ছাত্রও রয়েছে।”
ভুল পথ থেকে ফিরে এসো, উগ্রবাদে জড়ানো ছেলের প্রতি বাবা
পরিবার জানায়, ছেলেটি ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় মেধাবী। ২০২১ সালে যশোর জিলা স্কুল থেকে এসএসসিতে জিপিএ ফাইভ নিয়ে নটরডেম কলেজে ভর্তি হয়। প্রথম বর্ষে সে ভাল ফলাফল করেছিল। এবার তার এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার কারণে সেটি অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে।
এ নিয়ে সে হতাশ ছিল। তার মধ্যে এক ধরনের পরিবর্তন দেখতে পারছিল পরিবার; একাকী থাকত এবং নামাজ পড়ত। চার ভাইবোনের সে ছিল সবার বড়।
কলেজ ছাত্রের বাবা বলেন, “কোরবানির ঈদের কয়েকদিন আগে ছুটিতে বাড়িতে আসে ছেলে। তারপরই সে নিখোঁজ হয়।”
যশোর ডিবি পুলিশের এসআই মো. মফিজুল ইসলাম বলেন, জিডির পর তারা মোবাইল ফোন নম্বর ট্র্যাকিং করে জানতে পারেন, ২৮ জুলাই কলেজ ছাত্রের সর্বশেষ অবস্থান ছিল ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের একটি বাসে।
“এরপর থেকে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। কলেজ ছাত্র যে বাসে করে যাচ্ছিল ওই বাসের সুপারভাইজারের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করি। সুপারভাইজার জানায়, তাদের বাসের গন্তব্য ছিল পাবনা।”
যশোর আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) এম ইদ্রিস আলী বলেন, আইয়ুব খান বাবুল সাব জজ-২ আদালতের এপিপি। তিনি আওয়ামী লীগের একজন কর্মী। তার ছেলের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি তিনি জানতেন।