“সবকিছু পর্যালোচনা করে সরকার সবার জন্য একটা যৌক্তিক ভাড়া নির্ধারণ করে দিলেই ভালো হয়। সরকার যদি এ ব্যাপারে নির্দেশনা দেয়, আমরা তা মেনে নেব।”
Published : 19 Feb 2025, 05:31 PM
রাজশাহীর পবা উপজেলায় হিমাগারগুলোতে আলু সংরক্ষণের ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে আবারও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন কৃষকেরা।
বুধবার দুপুরে উপজেলার বায়া এলাকায় সরকার কোল্ড স্টোরেজের সামনে এ বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তারা।
কৃষকেরা রাজশাহী-নওগাঁ মহাসড়কে আট বস্তা আলু ফেলে দিয়ে গড়াগড়ি দেন এবং বিক্ষোভ করতে থাকেন। এ সময় স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা এ কর্মসূচিতে একাত্মতা জানান।
আলু চাষিরা জানান, প্রতি কেজি আলু সংরক্ষণের জন্য আগে রাজশাহীর হিমাগারগুলোকে চার টাকা ভাড়া দিতে হত। এবার তা বৃদ্ধি করে আট টাকা করা হয়েছে। ভাড়া দ্বিগুণ হয়ে যাওয়ায় তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তাই দ্রুত আগের ভাড়া নির্ধারণ করতে হবে।
তারা বলেন, হিমাগারের ভাড়া না কমালে প্রয়োজনে আলু ফেলে দেবেন কিন্তু হিমাগারে রাখবেন না।
এছাড়া আলু সংরক্ষণের ভাড়া কমানো না হলে এই অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়া এবং মহাসড়ক অবরোধসহ কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন আলু চাষিরা।
বিক্ষোভ মিছিল শেষে কৃষকেরা ওই এলাকায় পথসভাও করেন। সেখানে বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক শফিকুল হক মিলন।
তিনি বলেন, “হিমাগার মালিকেরা সিন্ডিকেট করে আলু সংরক্ষণের ভাড়া বৃদ্ধি করেছেন। এ ভাড়া কার্যকর হলে বাজারে আলুর দাম বাড়বে। এটি হতে দেওয়া হবে না।”
শফিকুল বলেন, “কৃষকের ওপর বুলডোজার চালিয়ে কাউকে ভাড়া বৃদ্ধি করতে দেওয়া হবে না। হিমাগার মালিকদের সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া হবে।”
আলু চাষি আহসান আলী বলেন, “এর আগে কৃষকদের আন্দোলনের মুখে কোল্ড স্টোরেরের মালিকরা ভাড়া কিছুটা কমানোর আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়ন করছেন না। দফায় দফায় আবেদন জানিয়েও ভাড়া কমানোর দাবি পূরণ না হওয়ায় বাধ্য হয়ে আবারও আন্দোলনে নেমেছেন চাষিরা।”
এদিকে হিমাগার মালিকেরা বলছেন, ৫০ কেজির বস্তার জন্য আগে ৩৪০ টাকা নেওয়া হলে ভাড়া পড়ত ছয় টাকা ৮০ পয়সা। কিন্তু ফড়িয়ারা বস্তায় এত বেশি আলু দিতেন যে, ভাড়া পড়ত চার টাকা। অথচ বস্তায় ৫০ কেজির বেশি আলু না ঢোকানোর জন্য সরকারের নির্দেশনাও আছে। তা প্রতিপালন না করায় বাধ্য হয়েই তারা কেজি হিসেবে আট টাকা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
রাজশাহী কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ফজলুর রহমান বলেন, “ভাড়া কেন্দ্রীয়ভাবেই নির্ধারণ হয়। এবারও সেটাই হয়েছে। ৫০ কেজির বস্তার ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য আমরা এবার কেজি হিসাবে গিয়েছি।
“কারণ, বেশি ওজনের বস্তা টানা হিমাগারের শ্রমিকদের জন্যও ঝুঁকিপূর্ণ। আমরা কেজি হিসাবে গেলেও এটা বলছি না যে, আট টাকাই দিতে হবে। হিমাগার মালিকেরা যে যার সক্ষমতা অনুযায়ী এ ব্যাপারে ছাড় দেবে।”
তিনি বলেন, “সবচেয়ে ভালো হয় এ ব্যাপারে সরকার হস্তক্ষেপ করলে। সরকার তো সব বিষয়ই দেখছে। সবকিছু পর্যালোচনা করে সরকার সবার জন্য একটা যৌক্তিক ভাড়া নির্ধারণ করে দিলেই ভালো হয়। সরকার যদি এ ব্যাপারে নির্দেশনা দেয়, আমরা তা মেনে নেব।”
আরও পড়ুন: