যেসব মামলায় নৃশংসতা বেশি, সেগুলোতে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে বলে জানান কৌঁসুল তামিম।
Published : 16 Apr 2025, 09:55 PM
জুলাই-অগাস্টের গণ অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশেই হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কৌঁসুল গাজী এমএইচ তামিম।
বুধবার ট্রাইব্যুনালে কয়েকটি আবেদনের শুনানি শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এই আইনজীবী বলেন, “জুলাই গণ অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের নিউক্লিয়াস হলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উনার নির্দেশে সব ধরনের অপরাধ সংঘটিত হয়েছে।
“উনার বিরুদ্ধে করা মামলার তদন্ত চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গেলে ওই তদন্তের ভেতরে তার সহযোগীদের অনেকখানি তদন্ত কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে। এ কারণে শেখ হাসিনার মামলার তদন্ত শেষ করে বাকিগুলো এর সঙ্গে সংযুক্ত করা হবে, যা তদন্ত প্রক্রিয়াকে সহজ করবে।
ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনে গত বছরের ৫ অগাস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর হত্যার অভিযোগে বিভিন্ন থানায় ও আদালতে ডজন ডজন মামলা হতে থাকে।
এর মধ্যেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জুলাইয়ে সংঘাতে মৃত্যুর ঘটনা ‘গণহত্যা’ হিসেবে বিবেচনা করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারের উদ্যোগ নেয়। পাশাপাশি শেখ হাসিনার সময়ে গুমের অভিযোগেও একাধিক অভিযোগ জমা পড়ে ট্রাইব্যুনালে।
ইতোমধ্যে গণহত্যা, গুম, এবং শাপলা চত্বরে গণহত্যার তিন মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে ট্রাইব্যুনাল। আসামি প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ সরকার তাকে ফেরত পাঠানোর অনুরোধ জানালেও ভারত তাতে সাড়া দেয়নি।
কৌঁসুলি তামিম বলেন, “শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদেরসহ আওয়ামী লীগ নেতাদের এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টপ কমান্ডারদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলো ব্যক্তিকেন্দ্রিক মামলা। এসব মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ এবং অপরাধ সংগঠনে তাদের ভূমিকা তদন্ত করা হচ্ছে, যা আইনের ভাষায় ‘সুপিরিয়র কমান্ড রেসপন্সিবিলিটি’ হিসেবে পরিচিত।
পাশাপাশি, জুলাই-অগাস্টের ঘটনার বিভিন্ন স্থানের ওপর ভিত্তি করে কিছু মামলার তদন্ত চলছে। এর মধ্যে আশুলিয়া, রামপুরা এবং চানখারপুলসহ বেশ কয়েকটি স্থানের মামলা উল্লেখযোগ্য।”
তিনি বলেন, “সুপিরিয়র রেসপন্সিবিলিটির মামলায় যারা গ্রেপ্তার বা পলাতক রয়েছেন, তাদের অনেকেই এরই মধ্যে ঘটনাস্থল কেন্দ্রিক মামলাগুলোর অন্তর্ভুক্ত হচ্ছেন। আর যেসব মামলায় নৃশংসতা বেশি, সেগুলোতে আমরা অগ্রাধিকার দিচ্ছি। এ কারণে অন্যান্য মামলার তদন্ত কিছুটা ধীরগতিতে চলছে। তবে এর মানে এ নয় যে মামলাগুলো থেমে আছে। প্রতিটি মামলার জন্য আলাদা তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে এবং তারা পৃথকভাবে তদন্ত পরিচালনা করছেন।”
মহাখালীর মামলার প্রতিবেদন ২০ জুলাই
গণঅভ্যুত্থানে মহাখালীতে ৫ জনকে হত্যার ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ২০ জুলাই দিন ধার্য করেছে ট্রাইব্যুনাল।
প্রসিকিউশনের আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচারপতি মো. গোলাম মূর্তজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল বুধবার এই আদেশ দেয়।
আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন গাজী এমএইচ তামিম।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে এ মামলা দাখিল করা হয়।
এদিকে মোহাম্মদপুরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আনসার সদস্য ওমর ফারুককে একদিনের জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
২৭ এপ্রিল তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে তদন্ত সংস্থা।