শ্রমিক ছাঁটাইয়ের বিষয়টি আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
Published : 08 Feb 2023, 06:39 PM
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে প্রকাশিত ‘শ্রমিক ছাঁটাই: চাকরি পুনর্বহালের দাবিতে বে ট্যানারির ফটকে বিক্ষোভ’ প্রতিবেদনের প্রতিবাদ জানিয়েছে সাভারের এ কোম্পানি।
বে ট্যানারির দাবি, গত ৬ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত ওই প্রতিবেদন ‘প্রকৃত তথ্য নির্ভর নয়’।
প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে এবং চাকরি পুনর্বহালের দাবিতে ঢাকার সাভারের হরিণধরায় চামড়া শিল্প নগরীর ওই কারখানায় শ্রমিকরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। ওইদিন সকাল থেকে বে ট্যানারির চাকরিচ্যুত শ্রমিকরা ইউনিট-২ কারখানার ফটকের সামনে এই বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন।
বে ট্যানারি তাদের প্রতিবাদলিপিতে লিখেছে, “প্রকৃত তথ্য এই যে, চামড়া শিল্প নগরী সাভার, ঢাকায় স্থাপিত সিইটিপি সঠিকভাবে কার্যকর না হওয়ায় চামড়া শিল্পের কোনো ট্যানারি কমপ্লায়েন্স বা এলডব্লিউজি সার্টিফিকেট অর্জন করতে পারছে না। যার কারণে বহিঃর্বিশ্বে ব্র্যান্ড কোম্পানির নিকট চামড়া রপ্তানি বন্ধ আছে। আমরা বেসরকারি পর্যায়ে ইটিপি স্থাপন করার অনুমতি পেলেও তা নির্মাণ করা সময় ও ব্যয় সাপেক্ষ, যার কারণে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করতে প্রায় এক থেক দেড় বছর লেগে যাবে।
শ্রমিক ছাঁটাই: চাকরি পুনর্বহালের দাবিতে বে ট্যানারির ফটকে বিক্ষোভ
“ইতিমধ্যে আমরা আমাদের প্রতিষ্ঠানের ফিনিশিং সেকশন কমপ্লায়েন্স বা এলডব্লিউজি এর আওতায় আনার জন্য ফিনিশিং ইটিপি স্থাপন করেছি। বর্তমানে আমাদের কারখানায় এলডব্লিউজি অডিটর অবস্থান করছেন। অডিটর এর পরামর্শ মোতাবেক ফিনিশিং সেকশন এলডব্লিউজি এর আওতায় নিতে হলে আমাদেরকে ওয়েটব্লু থেকে ক্রাস্ট পর্যন্ত ওয়েট সেকশন বন্ধ করে দিতে হবে। কারণ এইসব সেকশনের বর্জ্য পরিশোধন করার মত ইটিপি আমাদের নির্মাণাধীন।
“তাই বাস্তবতার আলোকে আমাদের প্রতিষ্ঠানের ফিনিশিং সেকশন চালু রেখে অন্য সেকশন বন্ধ করে দিতে হবে। সে জন্য বিধি অনুসরণ করে অতিরিক্তি মাত্র ৪০ জন শ্রমিককে আমাদের ছাঁটাই করতে হবে যা এখনও আলোচনার পর্যায়ে আছে।”
বে ট্যানারি লিখেছে, “একথা সত্য নয় যে, আমরা নোটিস ছাড়াই শ্রমিক ছাঁটাইয়ের পদক্ষেপ নিয়েছি। প্রকৃত সত্য এই যে, আমরা এক মাস আগেই ছাঁটাইয়ের নোটিস দিয়েছি। শ্রমিকদেরকে আমরা কারখানায় ঢুকতে দিইনি– একথাও সত্য নয়।
“প্রসংগত উল্লেখ্য যে, এখানে কর্মরত শ্রমিকরা হাজিরার ভিত্তিতে নিয়োজিত বিধায় তাদের নিয়োগপত্র ও পরিচয়পত্র নাই।”
প্রতিবেদকের বক্তব্য
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম প্রতিবেদনটি প্রকাশের ক্ষেত্রে বস্তুনিষ্ঠ তথ্য এবং নির্ধারিত নীতিমালা অনুসরণ করেছে। আন্দোলনকারী শ্রমিক, কারাখানা কর্তৃপক্ষ, ট্রেড ইউনিয়ন নেতা এবং পুলিশের বক্তব্য প্রতিবেদনে যথাযথভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
শ্রমিকরা যে বিক্ষোভ করেছে, বে ট্যানারি কর্তৃপক্ষ সেটি অস্বীকার করেনি। প্রতিবাদে সিইটিপি নিয়ে যে বক্তব্য দেওয়া হয়েছে, সেই একই কথা প্রতিষ্ঠানের হিসাব ও অর্থ শাখার সহকারী ব্যবস্থাপক মো. মাহাবুব আলম খাঁনের বরাতে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছিল।
শ্রমিকরা অভিযোগ করেছেন, তাদের ছাঁটাই করা হয়েছে। আর বে ট্যানারি কর্তৃপক্ষ বলছেন, সেটি ‘আলোচনা পর্যায়ে’ রয়েছে। আবার এও বলছেন, “এক মাস আগেই ছাঁটাইয়ের নোটিস দিয়েছি।” তাদের এ বক্তব্য স্ববিরোধী।
তবে ট্রেড ইউনিয়নে যুক্ত হওয়ার কারণে ছাঁটাই হওয়ার যে অভিযোগ শ্রমিকরা করেছেন, সে ব্যাপারে ট্যানারি কর্তৃপক্ষ কোনো বক্তব্য উপস্থাপন করেনি।