শুক্রবার রাতে নগরীর তেঁতুলতলা মোড় এলাকায় অর্ণবকে (২৬) গুলি করে হত্যা করে অস্ত্রধারীরা।
Published : 25 Jan 2025, 10:24 PM
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অর্ণব কুমার সরকারকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছে না পুলিশ। পরিবারের পক্ষ থেকেও কাউকে সন্দেহ করা হচ্ছে না।
হত্যাকাণ্ডের পর পরই রাতে তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন খুলনা মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) মো. মনিরুজ্জামান মিঠু। তিনি বলেন, “প্রাথমিকভাবে তিনজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। বিভিন্ন দিক মাথায় নিয়েই তদন্ত কার্যক্রম চলছে।”
তবে পুলিশ আটক তিনজনের নাম জানায়নি।
শুক্রবার রাত ৯টার দিকে খুলনা নগরীর তেঁতুলতলা মোড় এলাকায় অর্ণবকে (২৬) গুলি করে হত্যা করে অস্ত্রধারীরা। তিনি নগরীর তেঁতুলতলা মোড়ে একটি চায়ের দোকানের সামনে মোটরসাইকেলে হেলান দিয়ে চা পান করছিলেন।
এ সময় কয়েকটি মোটরসাইকেলে এসে অস্ত্রধারীরা তাকে গুলি করে পালিয়ে যায়।
এর মধ্যে একটি গুলি অর্ণবের মাথা ভেদ করে বেরিয়ে যায়। স্থানীয়রা তাকে বেসরকারি সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।
অর্ণবদের গ্রামের বাড়ি বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার রাজনগর গ্রামে। তার বাবা নীতীশ চন্দ্র সরকার একজন ঠিকাদার। ১৫ বছর ধরে খুলনা নগরীর বানরগাতি ইসলাম কমিশনারের মোড় এলাকার করতোয়া লেনে বাড়ি করে বসবাস করছে পরিবারটি।
অর্ণবরা দুই ভাই। অর্ণব খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমবিএর শিক্ষার্থী ছিলেন। ছোট ভাই অনিক এবার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিচ্ছে।
কয়েকজন প্রতিবেশীর সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, অর্ণব এলাকায় খুব ভদ্র ছেলে হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তাকে কেউ কখনও খারাপ আচরণ করতে দেখেনি। পড়াশোনার পাশাপাশি বাবার ব্যবসা দেখতেন। হঠাৎ অর্ণবের খুন হওয়ার খবর শুনে সবাই হতবাক হয়েছেন।
তবে সাম্প্রতিককালে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও উদ্বিগ্ন থাকার কথা বলেছেন নগরবাসী।
নগরীর সোনাডাঙ্গা মডেল থানার ওসি মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, “অর্ণবের শরীরে বেশ কয়েকটি গুলির চিহ্ন রয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে তিনটি পিস্তলের গুলি ও একটি শটগানের গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। বেশ কয়েকটি বিষয় মাথায় রেখে তদন্ত এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
“অর্ণবের বাবা ঠিকাদার। পড়াশোনার পাশাপাশি সেই ব্যবসা দেখাশোনা করতেন অর্ণব। এটা নিয়ে কোনো পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি নারীঘটিত কোনো ঘটনা বা অন্য কোনো দ্বন্দ্ব ছিল কিনা, সে ব্যাপারগুলো তদন্তে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।”
ওসি বলেন, এ ঘটনায় হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে।
পরিবারের সদস্যরা জানান, শনিবার দুপুর ১২টার দিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পর মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। মরদেহ বাড়িতে ঘণ্টাখানেক রেখে সৎকারের জন্য শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয়।
বাড়িতে অর্ণবের মা-বাবা-ভাইয়ের পাশাপাশি আত্মীয়-স্বজনরাও আহাজারি করছেন। অর্ণবের মাকে এখনও খুনের কথা জানানো হয়নি। বলা হয়েছে, অর্ণব মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মারা গেছেন।