বাংলাদেশ থেকে ভারত-নেপালে পাট, ওষুধ, প্রাণ ও ওয়ালটনের পণ্য, জুস, মোটরসাইকেল, ব্যাটারি রপ্তানি হচ্ছে বলে জানান বাংলাবান্ধা ল্যান্ডপোর্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপক।
Published : 15 Dec 2024, 06:19 PM
পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে বেশিরভাগ সময় পাথর আমদানি হলেও দিন দিন বাড়ছে অন্য পণ্যের আমদানি। বন্দরটি দিয়ে প্রথমবারের মত আতপ চাল ও পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে।
গত নভেম্বর ও চলতি ডিসেম্বরে ১০০ টন করে দুই দফায় ২০০ টন আতপ চাল আমদানি করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথমবারের মত কয়েক ধাপে আমদানি হয়েছে ১৮০ টন পেঁয়াজ।
বাংলাদেশ থেকে সড়কপথে ভারত, নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনার একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ স্থলবন্দর পঞ্চগড়ের তেতুঁলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা।
স্থলবন্দর সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে জানা গেছে, গত ১০ ডিসেম্বর ভারত থেকে এ বন্দর দিয়ে ৩০ টন পেঁয়াজ আমদানি করেছে মেসার্স বিসমিল্লাহ বাণিজ্যালয় নামের একটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান।
এর আগে একই প্রতিষ্ঠান ৭ ডিসেম্বর ৩০ টন, ৩ ডিসেম্বর ৩০ টন, ২৭ নভেম্বর ৩০ মেট্রিক টন, ২০ নভেম্বর ৩০ টন ও ১৮ নভেম্বর ৩০ টন করে মোট ১৮০ টন পেঁয়াজ আমদানি করেছে।
বাংলাবান্ধা ল্যান্ডপোর্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপক আবুল কালাম আজাদ চাল ও পেঁয়াজ আমদানির কথা জানিয়ে বলেন, “বন্দরটিতে পাথর আমদানির পাশাপাশি আতপ চাল আমদানি করা হচ্ছে। এর মাঝে প্রয়োজনের ক্ষেত্রে মাঝে মধ্যে পেঁয়াজও আমদানি করা হচ্ছে।”
তিনি বলেন, এ ছাড়া প্রয়োজনে বন্দরটি দিয়ে মসুর ডাল, গম, ভুট্টা, চিরতা, হাজমলা, যন্ত্রপাতি, প্লাস্টিক দানা, রেল লাইনের স্লিপার, খৈল, আদা ও চিটাগুড় আমদানি করা হয়।
অন্যদিকে, বাংলাদেশ থেকে ভারত ও নেপালে পাট, ওষুধ, প্রাণ ও ওয়ালটনের পণ্য, জুস, মোটরসাইকেল, ব্যাটারিসহ নানা ধরনের পণ্য রপ্তানি হচ্ছে।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ সদস্য আব্দুল্লাহ আল মুসা ও বিসমিল্লাহ বাণিজ্যালয়ের পাবেল বলেন, “আমরা ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করছি। তবে নিয়মিত নয়, মাঝে মাঝে আমদানি করা হচ্ছে। আমাদের স্থলবন্দরটি চার দেশীয় হওয়ায় ব্যবসা-বাণিজ্যের অপার সম্ভাবনা তৈরি করেছে।”
স্থলবন্দরের কাস্টমস থেকে জানা যায়, বন্দরটি ব্যবসা-বাণিজ্যে সচল থাকায় আয় হচ্ছে রাজস্ব।
গেল অর্থ বছরে (২০২৩-২৪) বন্দরটি দিয়ে ৭৩ কোটি ৬৯ লাখ টাকা রাজস্ব আয় হয়। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৯ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। আর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আয় হয়েছে ২০ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের আহ্বায়ক রেজাউল করিম শাহিন বলেন, “গুরুত্বপূর্ণ এই বন্দরটিতে আমদানি-রপ্তানি গ্রুপের দায়িত্ব পাওয়ার পর চেষ্টা করছি কার্যক্রম বাড়ানোর। বর্তমানে বন্দরটি দিয়ে পাথরের পাশাপাশি চাল ও পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে। পাশাপাশি যেন আরও কিছু আমদানি করা যায় সে বিষয়গুলো নিয়ে আমরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলছি ও উদ্বুদ্ধ করছি।”
তিনি বলেন, “গত ২৬ নভেম্বর স্থলবন্দরটি দিয়ে ভারত থেকে চারটি ট্রাকে ১০০ টন আতপ চাল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট প্রহর ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে আমদানি করে আল আমিন এন্টারপ্রাইজ নামে একটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান।
“এরপর রোববার দুপুরে বন্দরটি দিয়ে দ্বিতীয় দফায় ভারত থেকে চারটি ট্রাকে ১০০ টন আতপ চাল আমদানি হয়।”
“চালগুলো সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট প্রহর ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে আমদানি করেছে চট্টগ্রামের প্রতিষ্ঠান সালমা ট্রেডিংয়ের আমদানিকারক ও মালিক সামসুল আলম,” বলেন রেজাউল করিম শাহিন।